Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
PM Narendra Modi on Manipur

‘মণিপুরবাসীর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করল’! হিংসার দায় বিরোধীদের উপর চাপালেন প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জানান, মণিপুর নিয়ে আলোচনার জন্য বিরোধীদের আমন্ত্রণ করেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। কিন্তু কেউ সাড়া দেননি। এখন তাঁরা রাজনীতি করছেন।

Prime Minister Narendra Modi criticizes congress and other opposition parties in Manipur issue

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০২৩ ১৪:৩২
Share: Save:

মণিপুর প্রসঙ্গে কথা না বলে সংসদে কেবল কংগ্রেসকে আক্রমণ এবং ঠাট্টাতামাশা করছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এমন অভিযোগ করেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। বস্তুত, সংসদে ভাষণের সময় মণিপুরের ঘটনা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী কেন মিতব্যয়ী, তা নিয়ে বিস্তর সমালোচনা করছেন বিরোধীরা। সেই মণিপুর হিংসা নিয়ে এ বার সংসদের বাইরে মুখ খুললেন প্রধানমন্ত্রী। এবং বললেন সংসদের চেয়েও বেশি সময় নিয়ে। মোদী দাবি করলেন, অনেক আগেই মণিপুর নিয়ে আলোচনার জন্য বিরোধীদের চিঠি দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। কিন্তু তাতে সাড়া দেননি কেউ। কারণ, তাঁরা চান বিষয়টি নিয়ে রাজনীতি করতে। বস্তুত, মণিপুর হিংসা এত বড় হয়ে ওঠার নেপথ্যে বিরোধীদের ‘ভূমিকা’ নিয়ে তোপ দাগলেন প্রধানমন্ত্রী। অভিযোগ করেন মণিপুরবাসীর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা হয়েছে।

শনিবার ‘ক্ষেত্রীয় পঞ্চায়েতিরাজ পরিষদ’-এর পূর্বাঞ্চলীয় সম্মেলনের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। ভিডিয়ো কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তিনি। সেখানে মণিপুর ইস্যু নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘ওঁরা সংসদ থেকে পালিয়ে গিয়েছেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় হল, এঁরা মণিপুরবাসীর সঙ্গে এত বড় বিশ্বাসঘাতকতা করলেন।’’ তিনি এ-ও বলেন, ‘‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিজে সমস্ত রাজনৈতিক দলের নেতাকে চিঠি লিখে মণিপুর ইস্যু নিয়ে আলোচনার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। এত সংবেদনশীল ঘটনা নিয়ে সমস্ত দলমত নির্বিশেষে আলোচনা হলে অনেক আগেই সমস্যার সমাধান হয়ে যেত। তা হলে মণিপুরের মানুষের ক্ষততেও মলম লাগত। কিন্তু ওঁরা আলোচনা চায় না। পরিবর্তে মণিপুর ইস্যু নিয়ে রাজনীতি শুরু করলেন। অনাস্থা প্রস্তাব আনলেন। এখন একের পর এক দোষ দিচ্ছেন। মাথামুন্ডুহীন অভিযোগ করছেন।’’

লোকসভাতে নিজের আড়াই ঘণ্টার জবাবি ভাষণে উত্তর-পূর্বের রাজ্যের হিংসার জন্য কংগ্রেসকেই কাঠগড়ায় তুলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর অভিযোগ, এত দিন সেখানকার মানুষের স্বপ্নকে গলা টিপে মারা হয়েছে। কারণ, কংগ্রেস মনেই করত না যে মণিপুর, মিজোরামের মতো রাজ্যগুলো ভারতের ভূখণ্ডে রয়েছে। ওই প্রসঙ্গে ষাটের দশকে মিজোরামে ভারতীয় বায়ুসেনার বোমাবর্ষণের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। সংসদে প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, মণিপুরে শান্তি ফেরাতে তাঁর সরকার বদ্ধপরিকর।

আর শনিবার দলীয় অনুষ্ঠানে মোদীর দাবি, স্বাধীনতার পর থেকে বরাবরই উপেক্ষিত সমগ্র পূর্ব ভারত। মোদীর দাবি, তাঁর সরকারের আমলেই বিদ্যুৎহীন ওই সমস্ত অঞ্চলে বিদ্যুৎ গিয়েছে। কলে কলে পানীয় জল মিলেছে। এর কারণ তাঁরা গরিবির মর্ম বোঝেন। বাকিরা কেবল ‘গরিবি হটাও’ বলে স্লোগান দিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, ‘‘আমরা গরিব জীবনযাপন করে এসেছি। তাই জানি, গরিবির শিকড় কোথায়। আমাদের সরকারের আমলে গত কয়েক বছরে ১৮ হাজার গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছেছে। তার মধ্যে ১৩ হাজার তো পূর্ব ভারতের। ‘জলজীবন মিশন’-র মাধ্যমে ঘরে ঘরে জল পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। মিজোরামে ৪ বছর আগেও মাত্র ৬ শতাংশ ঘরে কল দিয়ে জল পড়ত। আজ সেটা ৯০ শতাংশে পৌঁছেছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘‘পিএম আবাস যোজনা’ গরিব মানুষের জীবনকে সহজ করতে অনেক সাহায্য করেছে। বিহারে ৫০ লক্ষেরও বেশি পাকা বাড়ি তৈরি হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে রাজ্য সরকার কাজ করতে দেয় না। তা সত্ত্বেও কেন্দ্রের তরফে ৪৫ লক্ষ বাড়ি তৈরি করেছি।’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE