পটনায় সাংবাদিক বৈঠকে প্রশান্ত কিশোর। ছবি: টুইটার
তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করেছেন নীতীশ কুমার। উত্তরে তিনি বললেন, তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক পিতা-পুত্রের মতো। তবে মঙ্গলবার পটনায় সাংবাদিক বৈঠক করে বিহারের উন্নয়নের প্রশ্নে সেই নীতীশ কুমারের সরকারকেই কাঠগড়ায় তুলে দিলেন ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর। একই সঙ্গে তাঁর অভিযোগ, এ রাজ্যে নীতীশের বিরুদ্ধে কেউ প্রশ্নই করতে পারেন না। এই সূত্রেই রাজ্যের উন্নয়ন নিয়ে নীতীশ কুমারকে সরাসরি বিতর্কে আহ্বান জানিয়ে বসেছেন প্রশান্ত। এ দিন নতুন দল ঘোষণার কথা উচ্চারণ করেননি ওই ভোট-কুশলী। তবে এ বছরের শেষাশেষি বিহারে বিধানসভা নির্বাচনের আগে, রাজ্যের যুবকদের ঐক্যবদ্ধ করার কর্মসূচি ‘বাত বিহার কি’ ঘোষণা করে নীতীশের অস্বস্তি বেশ কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছেন তিনি।
চলতি বছরের জানুয়ারি মাসেই জেডিইউ থেকে তাঁকে ছেঁটে ফেলা হয়েছিল। কিন্তু এ দিনের সাংবাদিক বৈঠকে তা নিয়ে ক্ষোভের চিহ্নমাত্র ছিল না প্রশান্ত কিশোরের আচার-ব্যবহারে। বরং শুরুতেই তিনি বলে দিলেন, ‘‘নীতীশ কুমার আমাকে ছেলের মতো দেখেন। আমি ওঁকে সম্মান করি। তিনি আমাকে দলে রাখবেন কি না, সেটা তাঁর ব্যাপার। আমি নীতীশ কুমারের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন করব না।’’
সৌজন্যের আবহাওয়ায় শুরু করলেও নীতীশ কুমারের সরকারের উন্নয়নের মডেল নিয়ে একের পর এক প্রশ্ন বাণ ছুড়েছেন প্রশান্ত। বিহারে জেডিইউ-এর বিজেপি সঙ্গ নিয়েও তোপ দেগেছেন প্রশান্ত। তাঁর মতে, ‘‘গাঁধী ও গডসেকে এক সঙ্গে নিয়ে চলেন নীতীশ কুমার। এ কখনও হতে পারে না।’’
আরও পড়ুন: করোনা সংক্রমণ কমছে? চিনের রিপোর্টে আশাবাদী হু
এ দিন প্রশান্ত অভিযোগ করেছেন, ‘‘লালুপ্রসাদ যাদবের সরকার সরে যাওয়ার পর নীতীশ কুমার ক্ষমতায় এসে বিহারের উন্নয়ন করেছেন। কিন্তু দেশের অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় এখনও অনেকটাই পিছিয়ে বিহার। কিন্তু এ নিয়ে কেউ প্রশ্নও তুলতে পারেন না। ’’ বিহারের উন্নয়নের গতি কেমন সাংবাদিক বৈঠকে তা নিয়ে একাধিক তথ্য তুলে ধরেছেন প্রশান্ত। তাঁর দাবি, ‘‘মাথা পিছু আয়ের ভিত্তিতে বিহার এখনও দেশের মধ্যে ২২ নম্বরেই আটকে রয়েছে। এখানে সরকারের সিদ্ধান্ত নিয়ে কেউ কিছু বলার নেই। তাই নীতীশ কুমার ভাবেন, যা করেছি তা অনেক। কিন্তু সেই সঙ্গে এটাও বলা উচিত, বিহার মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা বা কর্নাটকের থেকে কতটা পিছিয়ে আছে?’’ রাজ্যের চিকিৎসা ব্যবস্থা, বেকারত্বের হার-সহ একাধিক বিষয় নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
আরও পড়ুন: রাজনীতির ইনিংসে বিতর্কই সঙ্গী থাকল ‘দাদার কীর্তি’র কেদারের
নীতীশ সরকারকে আক্রমণের পালা শেষ করে নতুন ‘পথ’-এর কথাও তুলে ধরেছেন প্রশান্ত। রাজ্যের উন্নয়নের চালচিত্র বদলে দিতে বিহারের যুব সম্প্রদায়ের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। রাজ্যে ‘শক্তপোক্ত রাজনৈতিক দল’ তৈরির পক্ষে সওয়াল করেছেন তিনি। তার আগাম প্রস্তুতি হিসাবে ঘোষণা করেছেন কর্মসূচিও। আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে রাজ্যে ‘বাত বিহার কি’ নামে একটি কর্মসূচিও শুরু করতে চলেছেন তিনি। প্রশান্তের মতে, ‘‘বিহারের পরিস্থিতি বদলে দিতে আমি ১০ হাজার ভাল মুখিয়া তৈরি করতে চাই।’’ এ জন্য তিনি টার্গেট করেছেন রাজ্যের আট হাজার ৮০০টি পঞ্চায়েতকে। আর প্রশান্তের নজরে রয়েছেন রাজ্যের যুব সম্প্রদায়। তাঁর দাবি, এখনই তাঁর পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন ২ লক্ষ ৯৩ হাজার মানুষ। ২০ মার্চের মধ্যে সেই লক্ষ্য মাত্রা ১০ লক্ষে পৌঁছবে বলেও দাবি করেছেন তিনি।
আরও পড়ুন: ট্রাম্প সফরে চুক্তি নিয়ে চাপের খেলা
যুব সম্প্রদায়কে কাছে টেনে রাজ্যের ছবিটা বদলে দিতে চাইছেন প্রশান্ত। কিন্তু তিনি কি এ বার নতুন কোনও রাজনৈতিক দল গড়বেন? প্রশান্ত অবশ্য দাবি করেছেন, ‘‘আপাতত একটি মঞ্চ তৈরি হবে। তার পর এ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’ তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ওই মঞ্চের দরজা নীতীশ কুমার বা সুশীল মোদীদের জন্যও খোলা বলে এ দিন জানিয়ে দিয়েছেন প্রশান্ত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy