এই বাড়িতেই পণবন্দি বানানো হয়েছিল গ্রামের ২৩টি শিশুকে।
উত্তরপ্রদেশের আর-পাঁচটা গ্রামের মতো শান্ত, নিস্তরঙ্গ জীবনে অভ্যস্ত ফারুকাবাদের কাসারিয়া গ্রামের বাসিন্দারা। কিন্তু গত কাল সন্ধের পর থেকেই সেই শান্তি উধাও। কারণ, গ্রামের ২৩টি শিশুকে তখন পণবন্দি করেছে প্যারোলে মুক্ত খুনের আসামি সুভাষ বাথাম। সে-ও ওই গ্রামের বাসিন্দা। উৎকণ্ঠা, ক্ষোভ নিয়ে মাঝরাত পর্যন্ত প্রহর গুনেছেন গ্রামবাসীরা। পুলিশি অভিযানে সুভাষের মৃত্যুর পরে উৎকণ্ঠার অবসান হল। অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় শিশুদের। পুলিশের দাবি, ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীদের গণপ্রহারে মৃত্যু হয়েছে সুভাষের স্ত্রী রুবির। তবে তার মৃত্যু নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
ঘটনার সূত্রপাত, গত কাল সন্ধেয়। মেয়ের জন্মদিন উপলক্ষে গ্রামের বাচ্চা ও তাদের মায়েদের নিমন্ত্রণ করেছিল সুভাষ। সন্ধেয় তার বাড়িতে ছিল ছ’মাসের শিশু থেকে ১৫ বছরের কিশোর-কিশোরীরাও। রাজ্য পুলিশের ডিজি ওপি সিংহ জানিয়েছেন, সন্ধে পৌনে ৬টা নাগাদ ২৩টি শিশুকে পণবন্দি করে সুভাষ। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, পরিকল্পনা করেই সে শিশুদের পণবন্দি করেছিল। তার মূল উদ্দেশ্য ছিল, বন্দি শিশুদের সামনে রেখে সরকারের সঙ্গে দর কষাকষি করে তার বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ-সহ সব মামলা প্রত্যাহার করানো। গ্রামবাসীদের দাবি, জেলাশাসককে লেখা সেই সংক্রান্ত চিঠিও সুভাষের বাড়িতে পাওয়া গিয়েছে। রুবিও নাকি তাঁদের কাছে দাবি করেছিল, শিশুদের মাথাপিছু এক কোটি টাকা দিলে তবেই
মুক্তি দেওয়া হবে।
গ্রামবাসীরা বিষয়টি জানালে বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে যায়। পুলিশের আইজি জানান, বাড়ির বেসমেন্টে শিশুদের আটকে রেখেছিল সুভাষ। বাড়ির ভিতর থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে সে ছ’বার গুলি চালিয়েছিল। এক সময় বোমাও ছোড়ে। পরিস্থিতির গুরুত্ব বিচার করে পাঠানো হয় এনএসজি কমান্ডোদের। রাত বাড়তে শুরু হয় উদ্ধার অভিযান। শুরু হয় গুলির লড়াই। রাজ্যের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব (স্বরাষ্ট্র) অবনীশ অবস্তী বলেন, ‘‘পুলিশের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে প্রাণ হারায় অভিযুক্ত।’’ পুলিশ জানিয়েছে, সুভাষ দর কষাকষির চেষ্টা করলেও তাতে আমলই দেওয়া হয়নি। তবে বন্দি শিশুদের কথা ভেবেই তড়িঘড়ি পদক্ষেপ করা হয়নি।
পুলিশের দাবি, সুভাষের মৃত্যুর পরেই তার স্ত্রী রুবি পালানোর চেষ্টা করে। তা দেখে গ্রামবাসীদের সন্দেহ হয় রুবিও ষড়যন্ত্রে জড়িত। তাকে লক্ষ্য করে পাথর ছোড়া হয়। মাটিতে লুটিয়ে পড়ে রুবি। তাকে বেধড়ক মারধর করা হয়। পুলিশ উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে রুবির মৃত্যু হয়। যদিও গ্রামবাসীদের একাংশের বক্তব্য, সুভাষ নিহত হওয়ার পরে পুলিশের সঙ্গে কিছু লোক বাড়িতে ঢুকেছিল। সেখানেই রুবিকে পিটিয়ে মারা হয়।
প্রশাসন জানিয়েছে, নিরাপদে শিশুদের উদ্ধার করায় মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে অভিনন্দন জানান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। পণবন্দি শিশুদের উদ্ধার করা পুলিশের দলটিকে ১০ লক্ষ টাকা পুরস্কার দেবে প্রশাসন। পুলিশকর্মীদের শংসাপত্রও দেওয়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy