প্রতীপ ভি ফিলিপ
রক্তের দাগ লাগা একটি টুপি এবং ব্যাজ। ১৯৯১ সালে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গাঁধীর হত্যার সাক্ষী। সে দিন এই টুপি এবং ব্যাজ পরেছিলেন আইপিএস অফিসার প্রতীপ ভি ফিলিপ। কোনও রকমে প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন এই পুলিশ কর্তা। চাকরি জীবনের শেষ দিনেও সেই রক্তমাখা টুপি এবং নাম লেখা ব্যাজ পরলেন ফিলিপ। গত বৃহস্পতিবার ডিজিপি (প্রশিক্ষণ)-এর পদ থেকে অবসর নিলেন তিনি। জানালেন, এই টুপি এবং ব্যাজ পরে অবসর নেওয়া তাঁর কাছে এক আবেগঘন মুর্হূত। কয়েক দিন আগেই ফিলিপকে এই টুপি এবং ব্যাজ পরার অনুমতি দিয়েছে আদালত।
১৯৯১ সালে ২১ মে তামিলনাড়ুর শ্রীপেরুমবুদুরে এক নির্বাচনী জনসভায় এলটিটিই-র মানববোমায় ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছিল রাজীব গাঁধীর দেহ। নিহত হয়েছিলেন কমপক্ষে আরও ১৪ জন। ফিলিপ সেই সময় কাঞ্চিপুরমের এএসপি ছিলেন। ওই টুপি এবং ব্যাজটি পরে ঘটনাস্থলে ডিউটি করছিলেন তিনি। বিস্ফোরণে জখম হন ফিলিপ। বিস্ফোরণের অভিঘাতে তাঁর সেই টুপি এবং নাম লেখা ব্যাজটি মাটিতে পড়ে যায়। সে দিনের সেই অভিজ্ঞতা নিয়ে বইও লিখেছেন এই অফিসার।
এই ঘটনার পরে রক্তমাখা সেই টুপি এবং ব্যাজ প্রমাণের অংশ হিসাবে বিস্ফোরণস্থল থেকে সংগ্রহ করেছিল বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)। তার পরে থেকে জিনিস দু’টি ছিল দায়রা আদালতের হেফাজতে। অবসরের কয়েক দিন সেই টুপি এবং ব্যাজ পরার অনুমতি চেয়ে অতিরিক্ত দায়রা আদালতের দ্বারস্থ হন ফিলিপ। গত ২৮ সেপ্টেম্বর বিচারক টি চন্দ্রশেখরন এক লক্ষ টাকা ব্যক্তিগত বন্ডের বিনিময়ে পুলিশ কর্তাকে সেই টুপি এবং ব্যাজ দেওয়ার অনুমতি দেন। সেই টুপি এবং ব্যাজের কাজ মিটে যাওয়ার পরে জিনিস দু’টি ২৮ অক্টোবর বা তার আগে আদালতে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারক। ৩৪ বছরের চাকরি জীবনে ফিলিপ দাঁড়ি টানেন ৩০ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার)। সেই সঙ্গে আবেগঘন গলায় ফিলিপ বলেন, ‘‘আমি যে আতঙ্কের মধ্যে দিয়ে গিয়েছি, ৩৪ বছরের চাকরি জীবনের শেষে এই টুপি এবং ব্যাজ তারই প্রতীক। পৃথিবীতে আমিই এক মাত্র ব্যক্তি, যে এই অগ্নিপরীক্ষার মধ্যে দিয়ে গিয়েছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy