অতুল বৎস, রবি অত্রির পর এ বার নিটের প্রশ্নপত্র ফাঁসে আরও এক জনের নাম উঠে এল। তিনি সঞ্জীব কুমার ওরফে সঞ্জীব মুখিয়া। নিটের প্রশ্নপত্র ফাঁসে সিকন্দর যাদবেন্দু এবং অমিত আনন্দের নাম নিয়ে জোর চর্চা হলেও এ বার তদন্তকারীদের হাতে এল বিহারের নুরসরাইয়ের হর্টিকালচার কলেজের কর্মী সঞ্জীবের নামও। অমিত, সিকন্দ্র, অতুল, রবির মতোই সঞ্জীব প্রশ্নফাঁস কেলেঙ্কারির অন্যতম চক্রী বলে বিহার পুলিশ সূত্রের দাবি।
বিহার পুলিশ ইতিমধ্যেই সঞ্জীবের খোঁজে তল্লাশি চালানো শুরু করেছে। তদন্তকারীদের একটি সূত্রের দাবি, প্রশ্নপত্র ফাঁসের মূলচক্রী সঞ্জীবই। এই প্রথম নয়, এর আগেও প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ উঠেছিল বিহারের এই কলেজকর্মীর বিরুদ্ধে। ২০১০ সালে সঞ্জীব একাধিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করেছিলেন বলে অভিযোগ। নালন্দা জেলার নগরনৌসার বাসিন্দা সঞ্জীব। বিহার পুলিশ এবং আর্থিক দুর্নীতি দমন শাখা (ইওইউ)-র তদন্তকারীরা মনে করছেন, নিট পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সবার আগে সঞ্জীবের কাছে পৌঁছেছিল। তদন্তকারীদের হাতে এমন তথ্যও উঠে এসেছে যে, সেই প্রশ্নপত্র সঞ্জীবকে পাঠিয়েছিলেন এক অধ্যাপক। সঞ্জীবের পাশাপাশি রহস্যময় সেই অধ্যাপকেরও খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ।
তদন্তকারীদের এক সূত্রের দাবি, সঞ্জীবের মোবাইলে নিটের প্রশ্নপত্র পাঠিয়েছিলেন ওই অধ্যাপক। পটনা এবং রাঁচীতে লার্ন প্লে স্কুল অ্যান্ড বয়েজ় হস্টেলে এমবিবিএস পড়ুয়াদের নিয়ে আসা হয়েছিল। সেখানে তাঁদের দিয়ে নিটের প্রশ্নপত্রের উত্তর লেখানো হয়। তার পর সেই উত্তরগুলি পরীক্ষার্থীদের মধ্যে বিলি করা হয়েছিল। ওই লার্ন প্লে স্কুল অ্যান্ড বয়েজ় হস্টেলে আগে থেকেই পরীক্ষার্থীদের থাকার ব্যবস্থা করেছিলেন সঞ্জীব। সেখানেই তাঁদের প্রশ্ন এবং উত্তরপত্র বিলি করা হয় লাখ লাখ টাকার বিনিময়ে। কেউ যাতে সন্দেহ না করে, তাই কোনও ভিড়বহুল এলাকাতে পরীক্ষার্থীদের না রেখে, গ্রামের সুনসান জায়গায় রাখার ব্যবস্থা করেছিলেন সঞ্জীব।
পুলিশ সূত্রে খবর, শুধু একা সঞ্জীব নন, তাঁর পরিবারের কয়েক জন সদস্যেরও বিভিন্ন পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে নাম জড়িয়েছে। তদন্তকারীদের সূত্রে এমনও দাবি করা হচ্ছে যে, সঞ্জীবের পুত্রও বিহারের শিক্ষকের চাকরির পরীক্ষা বিপিএসসির প্রশ্নপত্র ফাঁসের অন্যতম চক্রী। সেই ঘটনায় আগেই গ্রেফতার হয়েছেন সঞ্জীবের পুত্র।