কার্গিল বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে দ্রাসে প্রধানমন্ত্রী। ছবিঃ পিটিআই।
কার্গিল যুদ্ধের সময়ে নরেন্দ্র মোদী ১৮ হাজার ফুট উচ্চতায় কুর্তা-পাজামা পরে দাঁড়িয়েছিলেন। চার দিকে পড়ে ছিল বীর সেনাদের রক্তাক্ত দেহ। সেখানেই ‘মা ভারতী’কে অভিবাদন করেছিলেন তিনি। অন্তত সমাজমাধ্যম এক্সে ‘মোদী আর্কাইভস’ হ্যান্ডল থেকে পোস্ট করা একটি অডিয়ো ক্লিপে তেমনটাই বলতে শোনা যাচ্ছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে (ক্লিপের সত্যতা আনন্দবাজার যাচাই করেনি)। তবে গুজরাতি ভাষায় দেওয়া ওই বক্তৃতা মোদী কবে কোথায় দিয়েছিলেন তা স্পষ্ট নয়। সেনারা তাঁকে ১৮ হাজার ফুট উচ্চতায় কুর্তা-পাজামা পরে দেখতে পেয়ে অবাক হয়েছিলেন বলেও ওই বক্তৃতায় বলতে শোনা যাচ্ছে মোদীকে। কিন্তু সেই দাবি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এক প্রাক্তন বিমানচালক।
ওই বক্তৃতায় মোদীকে বলতে শোনা যাচ্ছে, তখন তিনি হিমাচল প্রদেশে বিজেপির যুগ্ম সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন। সেখান থেকে একটি এমআই-১৭ হেলিকপ্টারে সেনাদের জন্য অত্যাবশ্যক সামগ্রী নিয়ে কার্গিলে যান তিনি। মোদী জানিয়েছেন, তিনি যখন পৌঁছন তখন টাইগার হিল দখল করেছে সেনা। মোদী ওই অডিয়ো ক্লিপে বলেছেন, তিনি সেনাদের ধন্যবাদ জানান। কিন্তু সেনারা বলেন জয়ের কৃতিত্ব পাওয়া উচিত তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী প্রয়াত অটলবিহারী বাজপেয়ীর। বিস্মিত মোদী জানতে চান কেন। এক সেনা বলেন, বারবার টাইগার হিল দখলের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হচ্ছিলেন তাঁরা। কিন্তু হতাশা আসার আগেই বাঙ্কারে বসে তাঁরা রেডিয়োয় শোনেন, আমেরিকান প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিন্টন বাজপেয়ীকে ওয়াশিংটনে আলোচনার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। কিন্তু বাজপেয়ী জানিয়েছেন, তাঁর সেনারা যুদ্ধক্ষেত্রে লড়াই করছেন। তাই তাঁর পক্ষে এখন সফরে যাওয়া সম্ভব নয়। বাজপেয়ীর জবাবে সেনারা অনুপ্রেরণা পান। সেই রাতেই নব উদ্যমে টাইগার হিলে আক্রমণ চালিয়ে ওই শৃঙ্গ দখল করে ভারতীয় সেনা। মোদীর বক্তব্য, কী ভাবে রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও উপযুক্ত নেতৃত্ব সেনাদের অনুপ্রেরণা দিতে পারে তা বুঝতে পারেন তিনি।
কিন্তু ওই বক্তৃতায় মোদীর দাবি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন প্রাক্তন বিমানচালক রাজ ভাদুড়ী। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘কার্গিল যুদ্ধে দখল করা সর্বোচ্চ শৃঙ্গ তোলোলিং ও টাইগার হিলের উচ্চতা যথাক্রমে ১৬,৮০০ ফুট এবং ১৬,৬০০ ফুট। তাহলে উনি ১৮ হাজার ফুট উঠলেন কী ভাবে? আবার দ্রাস-কার্গিল-বাটালিক সেক্টরে কোনও হেলিপ্যাড ছিল না। অসামরিক ব্যক্তিদের যুদ্ধক্ষেত্রে ঢুকতে দেওয়াও হচ্ছিল না।’’
‘মোদী আর্কাইভস’ হ্যান্ডলের বায়োয় বলা হয়েছে, এই হ্যান্ডলের উদ্দেশ্য পুরনো ছবি, ভিডিয়ো, অডিয়ো রেকর্ডিং, চিঠি, সংবাদপত্রের ক্লিপ ও অন্যান্য লেখার সাহায্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর যাত্রাকে তুলে ধরা। এই হ্যান্ডলটি কেবল প্রধানমন্ত্রীর হ্যান্ডলকে ‘ফলো’ করে। হ্যান্ডলটির ১ লক্ষ ‘ফলোয়ার’ রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে আছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ-সহ প্রবীণ বিজেপি নেতা-মন্ত্রীরা।
অন্য দিকে আজ কার্গিল দিবসের অনুষ্ঠানে সরাসরি পাকিস্তানকে নিশানা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আজ কার্গিল যুদ্ধের বিজয় দিবসে লাদাখের দ্রাসে কার্গিল স্মৃতিসৌধে ওই যুদ্ধে নিহত সেনাদের সম্মান জানান প্রধানমন্ত্রী। সেই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘পাকিস্তান ইতিহাস থেকে কোনও শিক্ষা নেয়নি। যখনই তারা এমন কোনও কাজ করার চেষ্টা করেছে তখনই পরাজিত হয়েছে। কিন্তু তারা এখনও জঙ্গিদের আশ্রয় দেয়।’’ যুদ্ধে নিহত সেনাদের স্মৃতি অমর হয়ে রয়েছে বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। ১৯৯৯ সালের ২৬ জুলাই কার্গিলে ‘অপারেশন বিজয়’ সফল হয়েছে বলে জানিয়েছিল ভারতীয় সেনা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy