প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ফাইল চিত্র।
স্বাধীনতার ‘অমৃতকালে’ ২০৪৭ সাল পর্যন্ত দেশকে সাজিয়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে নরেন্দ্র মোদীর। সেই ইচ্ছে তিনি বিভিন্ন বক্তৃতায় প্রকাশ করেন। এরই সূত্র ধরে প্রাথমিক ভাবে পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত দেশের সব ছাত্রছাত্রীদের চিঠি লেখার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর। শীর্ষ রাজনৈতিক সূত্রে এ খবর পাওয়া গিয়েছে। প্রথম ধাপের পত্র পরিকল্পনার সফল রূপায়ণ হলে, দ্বিতীয় দফায় কলেজ পড়ুয়াদেরও চিঠি লেখার কথা ভাবা হবে। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই সক্রিয়তা শুরু হয়েছে গিয়েছে সংশ্লিষ্ট দফতর এবং কর্তাদের মধ্যে। বিজেপি নেতৃত্বেরও সাহায্য নেওয়া হচ্ছে বলে খবর। চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনের আগেই, অর্থাৎ এই বছরের মাঝামাঝি এই পত্র অভিযান শুরু হয়ে যাওয়ার কথা।
এই পদক্ষেপ অভিনব এবং যথেষ্ট ব্যয়বহুলও বটে। রাজনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, প্রধানমন্ত্রীর চিঠির বয়ান থাকবে একই। তাতে দেশের ছাত্রছাত্রীদের নীতিবোধ, দেশপ্রেম, জাতীয়তাবোধ, দেশাত্মবোধকে জাগানোর কথা বলা হবে। যারা এখনও দলীয় রাজনীতি সম্পর্কে ওয়াকিবহালই নয়, সেই ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সঙ্গে এই চিঠির মাধ্যমে সরাসরি সংযোগের সেতু গড়ে উঠবে প্রধানমন্ত্রীর। তবে চিঠিতে কোনও রাজনৈতিক প্রসঙ্গ নয়, ভারতের সনাতন সংস্কৃতি এবং আধ্যাত্মিক মূল্যবোধের কথা বলা থাকতে পারে বলে সূত্রের বক্তব্য। এই গোটা পরিকল্পনায় আরএসএস তথা সঙ্ঘ পরিবারের অনুমোদন রয়েছে।
এর আগে অল্পবয়সিদের সঙ্গে সংযোগের অভিলাষে প্রধানমন্ত্রী চালু করেছিলেন ‘পরীক্ষা পে চর্চা’। সেখানে পরীক্ষায় বসার আগে ছাত্রছাত্রীদের উপদেশ দিতে দেখা গিয়েছে নরেন্দ্র মোদীকে। ওই চর্চায় যারা থাকে, তারা ছাড়াও বাকিদের জন্য অনুষ্ঠানটি সম্প্রচার করা হয় প্রচারমাধ্যমে। দেশের প্রায় ২০ লক্ষ ছাত্রছাত্রীর নাম-ঠিকানা নথিভূক্ত করা হয়েছে এখানে। এই সংখ্যা আরও বাড়বে। রাজনৈতিক সূত্রের খবর, বিজেপি-র যে নেতারা এই নাম নথিভুক্তির কাজে যুক্ত ছিলেন, তাঁদেরও এই চিঠি-পরিকল্পনায় কাজে লাগানো হবে। এক কথায়,‘ পরীক্ষা পে চর্চা’র জন্য দেশজোড়া ছাত্রছাত্রীদের তথ্যভান্ডারকে ব্যবহার করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী এর আগে বলেছিলেন, “পরীক্ষা পে চর্চা আমারও পরীক্ষা। দেশের কোটি কোটি পরীক্ষার্থী আমার পরীক্ষা নিচ্ছে। এর মাধ্যমে বিভিন্ন প্রশ্নের সম্মুখীন হই আমি। এর মাধ্যমে দেশের যুব সমাজ কী ভাবছে, তার একটা ধারণা মেলে। আমার টিমকে বলেছি, এই প্রশ্নগুলি গুছিয়ে রাখতে। পরবর্তীকালে এই প্রশ্নগুলির উপর বিশেষজ্ঞদের দিয়ে সমীক্ষা চালানো হবে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের ধারণা বদলে যাচ্ছে। ওই সমীক্ষায় তার ধারণা পাওয়া যাবে।” পরবর্তী ক্ষেত্রে ওই সমীক্ষার উপর ভিত্তি করে কেন্দ্র যে বিভিন্ন পদক্ষেপ করবে, তারও ইঙ্গিত দেন প্রধানমন্ত্রী।
বিরোধী রাজনৈতিক শিবির এই প্রসঙ্গে বলছে, এটা বিজেপি তথা আরএসএস-এর ভোট পরিকল্পনার কৌশল ছাড়া আর কিছুই নয়। শহর, মফস্সল, গ্রামে গ্রামে বাড়ির শিক্ষার্থীর নামে প্রধানমন্ত্রীর চিঠি আদতে রাজনৈতিক প্রচারও বটে। স্কুলছাত্রটি হয়তো ভোট দেবে না, কিন্তু তার পরিবার এই চিঠি পাঠানোর মাধ্যমে প্রভাবিত হতে পারে। পাশাপাশি ভবিষ্যতে হিন্দুরাষ্ট্র গড়ার যে লক্ষ্য নিয়ে চলছে আরএসএস, এটি তারও অংশ হতে পারে বলে দাবি করছে বিরোধীরা। তাদের স্পষ্ট অভিযোগ, গোটা প্রকল্পে যে বিপুল খরচ হবে, সেই খরচ তো তোলা হবে দেশের মধ্যবিত্ত করদাতাদের কাছ থেকেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy