প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই
গুজরাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকারি প্রকল্প উদ্বোধন-শিলান্যাসের পর্ব শুরু হয়েছিল সেই এপ্রিল থেকে। নির্বাচন কমিশন গুজরাতের ভোট ঘোষণার পরে রাজ্যে আদর্শ আচরণবিধি চালু হয়ে গিয়েছে। এখন গুজরাতে রাজনৈতিক প্রচার চালালেও সরকারি প্রকল্পের শিলান্যাস-উদ্বোধন সম্ভব নয়। মোদী আবার তাই কর্নাটকে বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস শুরু করছেন। আগামী বছর এপ্রিল-মে মাসে কর্নাটকে নির্বাচন। সূত্রের খবর, এ বার থেকে প্রতি মাসেই কর্নাটকে প্রধানমন্ত্রীর প্রকল্প উদ্বোধন ও শিলান্যাসের পালা চলবে।
প্রধানমন্ত্রীর দফতর জানাচ্ছে, শুক্রবার কর্নাটকে প্রধানমন্ত্রী বেঙ্গালুরুর কেম্পেগৌড়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দ্বিতীয় টার্মিনালের উদ্বোধন করবেন। বেঙ্গালুরুর ‘গার্ডেন সিটি’ হিসেবে পরিচিতির সঙ্গে মিল রেখে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা খরচ করে এই নতুন টার্মিনাল তৈরি হয়েছে। এর পরে প্রধানমন্ত্রী বিজয়নগর সাম্রাজ্যের শাসক নাদাপ্রভু কেম্পেগৌড়ার ১০৮ ফুট উঁচু ব্রোঞ্জের মূর্তিরও উদ্বোধন করবেন। বিজয়নগরের শাসক হিসেবে কেম্পেগৌড়াই বেঙ্গালুরুকে শহর হিসেবে গড়ে তুলেছিলেন। ভাস্কর রাম সুতারের তৈরি কেম্পেগৌড়ার মূর্তি তৈরিতে খরচ হয়েছে ৮৫ কোটি টাকা।
গুজরাতের ভোটকে পাখির চোখ করে এপ্রিল থেকে অক্টোবর পর্যন্ত প্রতি মাসেই অন্তত এক বার করে প্রধানমন্ত্রী গুজরাতে প্রকল্প উদ্বোধন বা শিলান্যাস করতে গিয়েছিলেন। কোনও কোনও মাসে দু’বারও গিয়েছেন। সাত মাসে গুজরাতের নানা জেলায় প্রায় ১ লক্ষ ১৬ হাজার কোটি টাকার সরকারি প্রকল্প উদ্বোধন ও শিলান্যাস করেছিলেন মোদী। অন্য দিকে সেপ্টেম্বর মাসে কর্নাটকে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী ৩৮০০ কোটি টাকার প্রকল্পের শিলান্যাস ও উদ্বোধন করেছিলেন। এ বার বেঙ্গালুরুর বিমানবন্দরে ৫ হাজার কোটি টাকার নতুন টার্মিনালের উদ্বোধন হচ্ছে। সরকারি সূত্রের খবর, এর পর থেকে প্রতি মাসেই কর্নাটকে প্রধানমন্ত্রীর কর্মসূচি থাকবে। ভোটের আগে পর্যন্ত তা চলবে। কর্নাটক থেকে কেন্দ্রে মোদী সরকারের এক মন্ত্রী বলেন, ‘‘কর্নাটকের প্রতিটি অঞ্চলের জন্যই প্রধানমন্ত্রীর কর্মসূচি সাজানো হচ্ছে।’’
পাঁচ বছর আগে বিজেপিকে হটিয়ে কর্নাটকে কংগ্রেস-জেডিএস সরকার গড়েছিল। কিন্তু পরে বিজেপি শাসক জোটের বিধায়ক ভাঙিয়ে সরকার গড়ে। ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে ঘুরে দাঁড়াতে কংগ্রেস নেতৃত্ব কর্নাটকেই বাজি ধরতে চাইছেন। কংগ্রেসের মতে, কর্নাটকের মতো শিল্পোন্নত রাজ্যে সরকার গড়তে পারলে লোকসভা ভোটে বিজেপির সঙ্গে পাল্লা দেওয়ার মতো আর্থিক রসদের অভাব হবে না। রাজ্যের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে জনমানসের ক্ষোভ কাজে লাগাতে এখন থেকেই মাঠে নেমে পড়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ডি কে শিবকুমার ও প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া। তাঁদের দাবি, রাহুল গান্ধীর ভারত জোড়ো যাত্রায় কর্নাটকে বিপুল সাড়া মিলেছে। এ বার শিবকুমার-সিদ্দারামাইয়া রাজ্য জুড়ে ‘বাস যাত্রা’ শুরু করছেন। ভোটে প্রার্থী হতে আগ্রহীদের এখন থেকেই আবেদন জানাতে বলা হয়েছে। কংগ্রেসে লক্ষ্য, ২২৪ আসনের বিধানসভায় ১৫০টি আসনে জয়।
বিজেপি নেতৃত্বও হাত গুটিয়ে বসে নেই। রাজ্য জুড়ে জনসম্পর্ক যাত্রার পরে এ বার বিজেপি কর্নাটকের দু’প্রান্ত থেকে দু’টি রথযাত্রা শুরু করতে চাইছে। মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাই ইঙ্গিত দিয়েছেন, গুজরাতের ভোট মিটে গেলে মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণ হবে। যে সব আসনে বিজেপি ভাল অবস্থায় নেই, সেগুলিকে চিহ্নিত করে নজর দেওয়া হচ্ছে। বিজেপির পক্ষে স্বস্তির কারণ হল, কংগ্রেস ও জেডিএস, দুই দলই এ বার আলাদা ভাবে ভোটে লড়বে। ফলে বিজেপি-বিরোধী ভোট ভাগ হতে পারে। কিন্তু সব কিছুর ঊর্ধ্বে বিজেপির সেরা বাজি এখনও নরেন্দ্র মোদী। তাই আগামী এপ্রিল-মে পর্যন্ত ঘন ঘন মোদীকে কর্নাটকে নিয়ে যেতে চান রাজ্যের বিজেপি নেতারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy