রামনবমীর দিনে রামেশ্বরম এবং ভারতের মূল ভূখণ্ডের সংযোগকারী পম্বন সেতুর উদ্বোধন করতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আগামী বছর বিধানসভা ভোটের আগে এ বছরের রামনবমীতে তামিলনাড়ুতেই থাকছেন তিনি। সড়ক এবং বিভিন্ন রেল প্রকল্প মিলিয়ে প্রায় ৮৩০০ কোটি টাকার নির্মাণ কাজের সূচনাও করার কথা রয়েছে তাঁর।
রেল সূত্রের খবর, শতবর্ষ প্রাচীন সেতু অকেজো হওয়ায় প্রায় ৭০০ কোটি টাকা খরচ করে নতুন সেতুটি তৈরি করেছে রেল। প্রধানমন্ত্রী মান্নার উপসাগরে দেশের প্রথম সেই উল্লম্ব ভাবে উত্তোলিত রেল সেতুর উদ্বোধন করবেন। প্রায় ২.০৮ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতুর মাঝবরাবর জাহাজ চলাচলের পথ খোলা রাখতে তৈরি করা হয়েছে ৭২ মিটার লম্বা ও ৬৪০ টন ওজনের উল্লম্ব একটি অংশ। বৈদ্যুতিক মোটর ও ক্রেনের সাহায্যে তা জলস্তর থেকে ১৭ মিটার উঠে পথ খুলে দেবে। পুরোনো পম্বন সেতুতে ওই চ্যানেল খুলতে ৪৫ মিনিটের বেশি লাগত। নতুন সেতুতে মাত্র সাড়ে পাঁচ মিনিটে তা হয়ে যাবে। আর্দ্র আবহাওয়ায় সেতু সুরক্ষিত রাখার জন্য বিশেষ প্রযুক্তিতে এমন রং করা হয়েছে, যা ৩৮ বছর পর্যন্ত সুরক্ষিত থাকবে বলে দাবি। এ ছাড়া একটি জাহাজের যাত্রার সূচনা করার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর। পরে রামেশ্বরম এবং তাম্বরমের মধ্যে নতুন একটি ট্রেনের উদ্বোধন করবেন। তার পরে রামেশ্বরম মন্দির দর্শন করে পুজো দেবেন তিনি। সবশেষে রামেশ্বরমে শিলা পুঁতে বিভিন্ন সড়ক ও রেল প্রকল্পের সূচনা করবেন।
গোবলয়ের রামচন্দ্রের ভাবমূর্তিটি দক্ষিণ এশিয়া জুড়ে বহমান রামকথার নানা ধারার মধ্যে প্রধান করে তোলার চেষ্টা বিজেপি এবং সঙ্ঘের বহুদিনের। তার মধ্যে ভোটের রাজনীতি বিভিন্ন সমীকরণ রচনা করে থাকে। গত বছর অযোধ্যায় রামমন্দির উদ্বোধনেও দেখা গিয়েছে বিশেষ কষ্টিপাথরের মূর্তি গড়া এবং দক্ষিণী নানা সংস্কৃতির গুরুত্ব। এই আবহে প্রধানমন্ত্রীর তামিলনাড়ুতে রামনবমী কাটানোটা আগামী বছর তামিলনাড়ু ভোটের সলতে পাকানোর উদ্যোগ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)