Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Narendra Modi

দুর্নীতির বিরুদ্ধে মোদীর যুদ্ধ নিয়েই প্রশ্ন বিরোধীদের

কংগ্রেস, তৃণমূলের নেতারা মনে করিয়ে দিয়েছেন, এর আগে পশ্চিমবঙ্গ-সহ বিভিন্ন রাজ্যে দুর্নীতিতে অভিযুক্ত নেতাদের বিজেপি সাদর আমন্ত্রণ জানিয়েছে।

PM Narendra Modi.

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২৩ ০৬:৪৮
Share: Save:

মাত্র এক সপ্তাহ আগেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মধ্যপ্রদেশে গিয়ে বিরোধী জোটের নেতাদের আক্রমণ করে বলেছিলেন, ‘‘ওঁরা শুধু দুর্নীতির গ্যারান্টি দিতে পারেন। আমি দুর্নীতিগ্রস্তদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপের গ্যারান্টি দিতে পারি।’’ শনিবার ফের মধ্যপ্রদেশে গিয়ে মোদী বলেন, ‘‘বিরোধী জোটের কেউ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত। কেউ জামিনে মুক্ত। কেউ জেলে সাজা খাটছে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ থেকে বাঁচতেই তারা জোট করেছে।’’

মোদী এ কথা বলার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই অজিত পওয়ারের নেতৃত্বে যে ৯ জন এনসিপি বিধায়ক মহারাষ্ট্রের বিজেপি-শিবসেনা (শিন্দে) জোট সরকারে যোগ দিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে চার জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। উপমুখ্যমন্ত্রী অজিত পওয়ারের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি গত এপ্রিল মাসে চার্জশিট দায়ের করেছে। স্বাভাবিক ভাবেই দুর্নীতির বিরুদ্ধে জেহাদে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আন্তরিকতা নিয়ে ফের প্রশ্ন উঠেছে।

শরদ পওয়ার নিজে রবিবারই বলেছিলেন, ‘‘মোদী যাঁদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছিলেন, এখন তাঁদেরই নিজের দলে টানছেন।’’ আজ পশ্চিমবঙ্গের বীরভূমে পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারের সময়ে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মহারাষ্ট্রে তো দেখলেন, যারা দুর্নীতিতে জড়িত তারা যখন বিজেপিতে যাচ্ছে তখন ওয়াশিং মেশিনে সব সাদা হয়ে যাচ্ছে। আমাদের দল করলে বা বিরোধী হলেই ইডি-সিবিআই, নানা রকম ভয় দেখানো হচ্ছে।’’ আরজেডি নেতা লালু প্রসাদ বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী মোদীর থেকে বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত আর কে? বিধায়ক কেনাবেচাকে উনি সাধারণ ব্যাপার করে ফেলেছেন।’’ কংগ্রেসের জনসংযোগ দফতরের প্রধান পবন খেরার মন্তব্য, ‘‘ভবিষ্যতে শাহেনশাহ মোদী যখন কোনও বিরোধী নেতার প্রকাশ্যে সমালোচনা করে তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলবেন, তখন বুঝতে হবে, উনি তাঁকে নিজের দলে নিতে চান। আর তার জন্য উনি যা খুশি করতে পারেন।’’

কংগ্রেস, তৃণমূলের নেতারা মনে করিয়ে দিয়েছেন, এর আগে পশ্চিমবঙ্গ-সহ বিভিন্ন রাজ্যে দুর্নীতিতে অভিযুক্ত নেতাদের বিজেপি সাদর আমন্ত্রণ জানিয়েছে। তার পরে তাঁদের বিরুদ্ধে সিবিআই, ইডি-র পদক্ষেপও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বিজেপিকে ‘ওয়াশিং মেশিন’ বলে প্রায়ই কটাক্ষ করা বিরোধীদের প্রশ্ন, তা হলে কিসের ভিত্তিতে মোদী নিজেকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সেনাপতি হিসেবে তুলে ধরছেন? মহারাষ্ট্র তথা জাতীয় স্তরের বিজেপি নেতারা এত দিন এনসিপি-র দুই নেতা অজিত পওয়ার ও প্রফুল্ল পটেলের বিরুদ্ধে নিয়মিত দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন। সেই অজিত পওয়ারই এখন বিজেপির দেবেন্দ্র ফডণবীসের সঙ্গে মহারাষ্ট্র সরকারের যুগ্ম উপমুখ্যমন্ত্রী। আর প্রফুল্ল পটেল ফের কেন্দ্রে মন্ত্রী হতে পারেন বলে জল্পনা।

গত এপ্রিল মাসেই ইডি মহারাষ্ট্রের জরন্ডেশ্বর চিনি কলের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করেছিল। অজিত পওয়ারের এই চিনি কল সংস্থার বিরুদ্ধে ইডি-র অভিযোগ ছিল, সংস্থাটি মহারাষ্ট্র রাজ্য সমবায় ব্যাঙ্কের থেকে প্রায় ৭৯ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে শোধ করেনি। ব্যাঙ্কের অন্যতম কর্তা হিসেবে অজিতই নিজের সেই ঋণ মঞ্জুরের ব্যবস্থা করেছিলেন। ঋণ শোধ না হওয়ায় সংস্থা নিলামে ওঠে। অজিত বেনামে ফের সেই সংস্থা কিনে নেন। অভিযোগ, তার পর আবার সেই সংস্থা পুণের জেলা সমবায় ব্যাঙ্ক থেকে ৮২৬ কোটি টাকা ঋণ করে। সেই ঋণও শোধ না করে অন্যত্র পাচার করা হয়।

দাউদ ইব্রাহিমের ঘনিষ্ঠ ইকবাল মির্চির বিরুদ্ধে একটি মামলায় প্রফুল্ল পটেলের সম্পত্তি আটক হয়েছে। ইউপিএ-র বিমানমন্ত্রী হিসেবে তাঁর বিরুদ্ধেই এয়ার ইন্ডিয়াকে ডোবানোর অভিযোগ তুলেছিল বিজেপি। তাঁকে বিমান দুর্নীতির মামলায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পিএমসি ব্যাঙ্কের কেলেঙ্কারিতেও তিনি যুক্ত বলেও বিজেপির অভিযোগ। বিজেপির সঙ্গে হাত মেলানো ছগন ভুজবল ও হাসান মুশরিফের বিরুদ্ধেও মামলা রয়েছে।

বিরোধীদের প্রশ্ন, প্রধানমন্ত্রী মোদী না হয় সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখোমুখি হন না। কিন্তু অজিত পওয়ারদের বিরুদ্ধে গলা ফাটিয়ে আসা মহারাষ্ট্রের বিজেপি নেতারা কী করবেন?

অন্য বিষয়গুলি:

Narendra Modi Oppositions Corruption
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy