দিল্লি জয়ের পর নরেন্দ্র মোদীর পরবর্তী নিশানা বিহার। বছরের শেষার্ধে সে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। তার ঢের আগে থেকেই পটনাকে পাখির চোখ হিসেবে যে দেখতে শুরু করেছেন প্রধানমন্ত্রী, তা স্পষ্ট। রবিবার থেকে তিন দিনের রাজ্যসফর শুরু করছেন তিনি। তাতে মধ্যপ্রদেশ এবং অসমের পাশাপাশি রয়েছে ভোটমুখী বিহার। আজ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় জানিয়েছে, বিহারের ভাগলপুরে ২৪ ফেব্রুয়ারি বিভিন্ন জাতীয় প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন, প্রধানমন্ত্রী কিসান যোজনার ১৯তম কিস্তির টাকা দেবেন মোদী। জনসভাও করবেন তিনি সেই রাজ্যে।
প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে আজ জানানো হয়েছে, ‘দেশের মোট ৯.৭ কোটি কৃষক সাড়ে ২১ হাজার কোটি টাকা পাবেন ওই দিন বিহার থেকে। কৃষিপণ্যের পর্যাপ্ত দাম কৃষকেরা যাতে পান, তা-ও এই সফরের কেন্দ্রে রাখা হবে। রাষ্ট্রীয় গোকুল মিশনের আওতায় মোতিহারিতে ‘সেন্টার ফর এক্সেলেন্স ফর ইন্ডিজেনাস ব্রিডস’-এর উদ্বোধন করবেন মোদী। বারাউনিতে দুধ উৎপাদন প্রকল্পের সূচনা করবেন, যার লক্ষ্য তিন লক্ষ দুগ্ধ উৎপাদনকারীর জন্য বাজার তৈরি করা। বেশ কিছু রেলপ্রকল্পের উদ্বোধন করারও কথা রয়েছে।’
সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, নির্বাচনমুখী রাজ্যে নানা কেন্দ্রীয় প্রকল্পের উদ্বোধন করে তাতে নিজেদের রাজনৈতিক সিলমোহর লাগানো দীর্ঘ দিনের দস্তুর মোদীর। বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের বক্তব্য, তাতে সাফল্যও এসেছে। বিহারেও তাই আগে থেকে এই চিত্রনাট্য তৈরির পরিকল্পনা। মোদী-অমিত শাহের লক্ষ্য, ২৪৩ আসনের ওই বিধানসভায় শাসক জোটের ২২৫টি আসন জয়। যার অনেকটাই নির্ভর করছে প্রধান শরিক দল নীতীশ কুমারের জেডিইউ-এর উপর।
দিল্লিতে মুখ্যমন্ত্রীর শপথ অনুষ্ঠানে নীতীশের অনুপস্থিতি যে জল্পনা তৈরি করেছিল, তা আপাতত প্রশমিত করেছে বিজেপি-জেডিইউ। বিহারে এনডিএ লড়বে নীতীশের নেতৃত্বে, জানিয়েছেন শাহ। জেডিইউ বলেছে, পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি ছিল বলেই নীতীশ আসতে পারেননি। দলের অন্যতম শীর্ষ নেতা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজীব রঞ্জন বলেন, ‘‘দিল্লিতে বিজেপির জয় নরেন্দ্র মোদী এবং নীতীশ কুমারের নেতৃত্বে এনডিএ-র শক্তিশালী ঐক্যের বার্তা দিচ্ছে। এনডিএ ২২৫টি আসন জয়ের পথে এগোচ্ছে।’’ রাজ্য বিজেপির প্রবীণ নেতা তারকিশোর প্রসাদের মতে, এনডিএ বিহারে ক্ষমতা ধরে রাখবে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও হিন্দুস্তানি আওয়াম মোর্চার নেতা জিতন রাম মাঝিঁও বলেন, “দিল্লি তো ঝাঁকি হ্যায়, বিহার আভি বাকি হ্যায়... জয় এনডিএ।”
তবে নীতীশ ভাল করে জানেন, রাজ্যে তাঁকে ও তাঁর দলকে গুরুত্বহীন করার লক্ষ্য নিয়েই এগোচ্ছে বিজেপি। সেই কারণে পাল্টা চাপ বাড়ানোর রাস্তা ধরে এগোতে চাইছেন তিনিও।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)