প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই।
আগামী সোমবার রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠা। আজ থেকেই অযোধ্যায় যাবতীয় নিয়ম মেনে শাস্ত্রীয় আচারবিধি পালন শুরু করে দিলেন মন্দির কর্তৃপক্ষ। অন্য দিকে আজ দক্ষিণ ভারত সফরে গিয়ে রামায়ণের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত লেপাক্ষী মন্দির দর্শন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পরে অন্ধ্রপ্রদেশের ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অব কাস্টমস, ইনডিরেক্ট ট্যাক্সেস অ্যান্ড নার্কোটিক্স ভবনের উদ্বোধন করে উপস্থিত অফিসারদের উদ্দেশে মোদী বলেন, ‘‘রাম হলেন শ্রেষ্ঠ প্রশাসকের উপযুক্ত উদাহরণ, যিনি আমাদের সকলের অনুপ্রেরণা।’’
আজ লেপাক্ষী মন্দির পরিদর্শন করেই নিজের দক্ষিণ ভারত সফর শুরু করেন মোদী। মন্দিরে পুজোও দেন। এই স্থানেই রাবণকে বাধা দিতে গিয়ে আহত হন জটায়ু। সেখান থেকে বীরভদ্র মন্দিরে যান মোদী। ভজন গানে অংশ নেন। এর পরে অভিবাসন দফতরের নতুন ভবন উদ্বোধন করতে গিয়ে রামরাজ্য প্রতিষ্ঠার পক্ষে সওয়াল করেন। আগামী ২২ জানুয়ারি রামমন্দির উদ্বোধন ও রামলালা বিগ্রহের প্রাণপ্রতিষ্ঠা উপলক্ষে আজ থেকে বিশেষ ব্রত পালন করছেন মোদী নিজেও।
অযোধ্যায় এখন সাজো সাজো রব। শুরু হয়ে গিয়েছে পুজোর প্রস্তুতি। গুজরাত থেকে আসা ১০৮ ফুট লম্বা ধূপকাঠি আজ জ্বালানো হয়েছে। শুরু হয়েছে মন্দিরে বিগ্রহ প্রতিষ্ঠার আচারবিধি পালনও। শ্রীরাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্ট আচারবিধি পালনের যে তালিকা দিয়েছে, তাতে আজ অনুষ্ঠানের প্রথম দিনে ছিল প্রায়শ্চিত্ত ও কর্মকোটি পুজো। পুরাণবিদ নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ীর মতে, যে কোনও যাগযজ্ঞ, পুজোর আগে এটি করতে হয়। যিনি বা যাঁরা পুজো করবেন, তাঁদের যদি অন্যায় বা পাপ থাকে, সেগুলি স্বীকার করে, তা থেকে মুক্তি পাওয়ার কিছু পুজো পদ্ধতি রয়েছে। এ ক্ষেত্রে তা-ই করা হচ্ছে। আর কর্মকোটির অর্থ, কোটি কোটি জন্ম ধরে আমরা যে সব কর্ম করেছি, তাতে যা অন্যায় হয়েছে— তার জন্য প্রায়শ্চিত্ত করা।
আগামিকালের অনুষ্ঠান প্রসঙ্গে মন্দির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, রামলালার মূর্তি শোভাযাত্রা করে সরযূর তীরে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে অভিষেকের পরে ফিরিয়ে আনা হবে মন্দিরে। তবে অযোধ্যায় ভিড় থেকে যাতে বিশৃঙ্খলা না ছড়ায়, তা ভেবে ওই শোভাযাত্রা শেষ পর্যন্ত না হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। অথবা হলেও সংক্ষিপ্ত আকারে হতে পারে। ১৮ জানুয়ারি সন্ধ্যায় তীর্থ পূজা, জলযাত্রা ও গন্ধ অধিবাস। যে কোনও বিগ্রহের অভিষেকে সব তীর্থের জল লাগে। মন্দির কর্তৃপক্ষ জানান, সরযূ নদীর জল ঘড়া করে মন্দিরে এনে গর্ভগৃহ ধোয়া হবে। নৃসিংহপ্রসাদের মতে ‘‘এখানে সরযূর জলই সম্ভবত সর্ব তীর্থের জল হিসাবে গণ্য হবে।’’ পাশাপাশি গন্ধ অধিবাসে জলে বিভিন্ন ধরনের ধূপ-সুগন্ধ দেওয়া হবে। সূত্রের মতে, ওই দিনই গণেশ-বরুণ পূজা, মাতৃপূজা, বাস্তুপূজার মাধ্যমে মূল পুজোর অনুষ্ঠান শুরু হয়ে যাবে।
১৯ জানুয়ারি মন্দিরে নবগ্রহ স্থাপন ও যজ্ঞের আগুন জ্বালানো হবে। পাশাপাশি ঔষধি অধিবাস, কেশর অধিবাস, ঘৃত অধিবাস ও ধান্য অধিবাস হবে। নৃসিংহপ্রসাদ বলেন, ‘‘মূর্তির অভিষেকের সময়ে দই, দুধ, ঘি, মধু ও শর্করা, এই পঞ্চ গব্যের প্রযোজন হয়। অধিবাসে সেগুলির উল্লেখ রয়েছে।’’ ২০ জানুয়ারি মন্দিরে বাস্তু শান্তির পুজো এবং শর্করা অধিবাস, ফল অধিবাস ও পুষ্প অধিবাস হবে। মন্দির কমিটি সূত্রে জানানো হয়েছে, অনুষ্ঠানের আগের দিন অর্থাৎ ২১ জানুয়ারি মূর্তিকে স্নান করানোর পরে তাঁকে বিশ্রাম করার সুযোগ দেওয়া হবে। রাতে হবে শয্যা অধিবাস। নৃসিংহপ্রসাদ বলেন, ‘‘এ ক্ষেত্রে মূর্তির শোয়ার কথা বলা হয়েছে। বিগ্রহ যদি বড় হয়, সে ক্ষেত্রে শোয়ানো সম্ভব নয়। পরিবর্তে মূর্তির প্রতিনিধি হিসাবে শালগ্রাম শিলাকে শুইয়ে দেওয়া হবে।’’
২২ জানুয়ারি শাস্ত্রীয় বিধিনিয়ম মেনে পৌষ মাসের শুক্ল কূর্ম দ্বাদশীতে বিক্রম সম্বৎ ২০৮০–এর বৈকালিক অভিজিৎ মুহূর্তে (১২টা বেজে ২০ মিনিটে) প্রাণপ্রতিষ্ঠা হবে রামলালার। প্রাণপ্রতিষ্ঠা করবেন নরেন্দ্র মোদী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy