—ফাইল চিত্র।
এক বছর আগে সিএএ-এনআরসির বিরুদ্ধে প্রতিবাদের জেরে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের উপরে চড়াও হয়েছিল পুলিশ। কখনও তাঁদের বরাতে ‘টুকরে টুকরে গ্যাংয়ের’ তকমা জুটেছে, তো কখনও এই বিশ্ববিদ্যালয় জঙ্গিদের আখড়া বলে দাবি করেছেন আগরার মেয়র। কিন্তু মঙ্গলবার সেই ক্যাম্পাসকেই ‘মিনি ভারতবর্ষ’ হিসেবে চিহ্নিত করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দাবি করলেন, সরকারি প্রকল্পে সুবিধা দেওয়ায় কোনও ধর্মীয় ভেদাভেদ তাঁর সরকার করে না।
এ দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবার্ষিকী অনুষ্ঠানের বক্তৃতায় মোদী বলেন, “আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস যেন একটি শহর। বিভিন্ন বিভাগ, কয়েক ডজন হস্টেল, হাজার-হাজার শিক্ষকের মধ্যে ‘মিনি ভারতের’ ছবি ফুটে ওঠে। যে বৈচিত্র্য দেখতে পাই, তা শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের নয়, সারা দেশের শক্তি।’’
ইতিহাসবিদ এবং আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক (ইমেরিটাস) ইরফান হাবিব সম্প্রতি বলেছিলেন, এই অনুষ্ঠানে মোদীর যোগ দেওয়া প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সম্মানজনক নয়। কিন্তু এ দিন আলিগড়ের মঞ্চকে ব্যবহার করে মোদী বোঝাতে চেয়েছেন যে, ‘সব কা বিকাশ ও সব কা বিশ্বাসের’ স্লোগান থেকে সরেনি তাঁর সরকার। বরং এ নিয়ে ভুল বোঝানোর চেষ্টা করছেন বিরোধীরা। তাঁর বক্তব্য, ‘‘প্রচুর ভ্রান্ত প্রচার হচ্ছে। রাজনীতির জন্য অনেক সময় পাওয়া যাবে। কিন্তু তার জন্য উন্নয়নের কাজ ফেলে রাখা চলে না।’’ একের পর এক কেন্দ্রীয় প্রকল্পের উদাহরণ টেনে দাবি করেছেন, কোথাও বৈষম্য করা হয়নি।
বিরোধীদের প্রশ্ন, বিয়েতে ধর্মান্তকরণ ঘিরে বিতর্ক তৈরি কিংবা এনআরসি-র নিশানা তা হলে কারা? তাঁদের কটাক্ষ, জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়ায় পুলিশ চড়াও হয়। আবার পরে তাকে দেশের গর্ব বলেন শিক্ষামন্ত্রী। বিজেপির ভিতর থেকে জেএনইউ বন্ধ করার দাবি ওঠে। আবার সেখানে বিবেকানন্দের মূর্তি উন্মোচনে প্রশংসায় পঞ্চমুখ হন মোদী। এ দিন আলিগড়ের প্রশংসাও রাজনীতির অঙ্ক মেনেই। মোদীর অবশ্য দাবি, মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে সংযোগসাধক হিসেবেও আলিগড়ের ভূমিকা প্রশংসনীয়। এ দিন তিনি এও মেনেছেন যে, এই বিশ্ববিদ্যালয় বহু স্বাধীনতা সংগ্রামী উপহার দিয়েছে!
গুজরাতের কংগ্রেস নেতা অর্জুন মোঢওয়াড়িয়ার কটাক্ষ, “গত বছর অমিত শাহ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের ‘টুকরে টুকরে গ্যাং’-এর তালিকায় রেখেছিলেন। আর আজ মোদী বলছেন, আলিগড় মিনি ভারতবর্ষ!’’ বিরোধীদের কটাক্ষ, কৃষক আন্দোলনের আবহে শিখদের মন ভেজাতে মোদী যেমন রবিবার দিল্লির গুরুদ্বারে পৌঁছে গিয়েছিলেন, তেমনই মুসলিমদের বার্তা দিতেই বিজেপির ‘চোখের বালি’ এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘মিনি ভারত’ খুঁজে পেয়েছেন মোদী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy