PM Narendra Modi Meets Delhi's Vidyut Mohan and talked about his creation which could be Gamechanger For Air Pollution dgtl
Narendra Modi
Vidyut Mohan: বায়ুদূষণ সমস্যার সমাধান! মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে দিল্লির তরুণের তৈরি যন্ত্র
শস্যগোড়া না পুড়িয়ে কী ভাবে পুনর্ব্যবহারযোগ্য করা যায়, তার উপায় বার করেছেন ৩০ বছর বয়সি বিদ্যুৎ।
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতাশেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০২১ ১৩:৩৭
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১২
দীপাবলি পরবর্তী সময় দিল্লি-সহ দেশের অন্যান্য শহরে বায়ুদূষণের মাত্রাছাড়া বৃদ্ধি দেশ জুড়ে উদ্বেগের পরিস্থিতি তৈরি করেছে। ২০১৭ সালের পর এই প্রথম দিল্লির বাতাস এত খারাপ হল উৎসবের মরসুমের পর। ২৪ ঘণ্টায় রাজধানী শহরে গড় বায়ুমান সূচক (এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স বা একিউআই) ছুঁয়েছে ৪৬২। কোভিড পরিস্থিতির মধ্যে বাতাসের মান খারাপ হওয়া নিয়ে ইতিমধ্যেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ‘অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্স’ (এমস)-এর অধিকর্তা রণদীপ গুলেরিয়া।
০২১২
শুধু বাজি পোড়ানোই নয়, ভারতের মতো কৃষি-প্রধান দেশে বায়ুদূষণের অন্যতম কারণ কৃষিজমিতে খড়কুটো পোড়ানো। পড়শি রাজ্য হরিয়ানা ও পঞ্জাবে বিপুল পরিমাণে ফসলের গোড়া পোড়া়নো হয়, যার জেরে দিল্লির বাতাস ক্রমেই বিষাক্ত হয়ে উঠছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। ভারতের মতো দেশে চাষাবাদ সারা বছর ধরেই হয় বলে শস্যগোড়া পোড়ানোর সমস্যা আগে নির্মূল করা দরকার, মনে করেন পরিবেশবিদরা।
০৩১২
সেই সমস্যার সমাধান হয়তো পেয়ে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সম্প্রতি স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোয়ে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জ আয়োজিত সম্মেলনে মোদীর সঙ্গে সাক্ষাৎ হয় দিল্লির মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার বিদ্যুৎ মোহনের। তাঁর তৈরি যন্ত্রই ভবিষ্যতে দেশে বায়ুদূষণজনিত সমস্যার স্থায়ী সমাধান আনতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
০৪১২
শস্যগোড়া না পুড়িয়ে কী ভাবে পুনর্ব্যবহারযোগ্য করা যায়, তার উপায় বার করেছেন ৩০ বছর বয়সি বিদ্যুৎ। ব্রিটিশ রাজকুমার উইলিয়ামের ঘোষিত ‘আর্থশট প্রাইজ’-এর চূড়ান্ত তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে বিদ্যুতের তৈরি যন্ত্র।
০৫১২
দিল্লিতেই বড় হয়েছেন বিদ্যুৎ। শহরের বাতাসের মান খারাপ হওয়ার দরুণ ঠাকুমাকে রোগে ভুগতে দেখেছেন ছোটবেলা থেকে। নিজেও বহু বার অসুস্থ হয়েছেন। তখন থেকেই তাঁর ইচ্ছে ছিল, বায়ুদূষণ নিয়ে কাজ করার।
০৬১২
ধানের গোড়া, নারকেলের ছোবড়া থেকে শক্তি উৎপাদনে সক্ষম বিদ্যুতের তৈরি যন্ত্র। কফি মেশিনের মতো কাজ করে সেটি। ওই যন্ত্রে নিয়ন্ত্রিত তাপমাত্রায় কৃষিজমির বর্জ্য ঝলসিয়ে তা থেকে জ্বালানি, সার তৈরি করা সম্ভব। এই সব জিনিস পরবর্তী কালে কৃষিকাজেই ব্যবহার যাবে।
০৭১২
সতীর্থ কেভিন কুংয়ের সঙ্গে যৌথ ভাবে ২০১৮ সালে যন্ত্রটি প্রথম বাজারে আনেন বিদ্যুৎ। তার পর থেকে প্রায় সাড়ে চার হাজার কৃষকের সঙ্গে কাজ করেছেন তাঁরা। এখনও পর্যন্ত প্রায় তিন হাজার টন শস্যগোড়া সফল ভাবে পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে তুলতে পেরেছেন তাঁরা।
০৮১২
উত্তরাখণ্ডে ইতিমধ্যেই এই যন্ত্রের ব্যবহার শুরু হয়ে গিয়েছে। দেশের অন্যান্য রাজ্যেও পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর্যায়ে রয়েছে ওই যন্ত্র। কার্বন নির্গমন ৯৮ শতাংশ কমাতে সক্ষম এই যন্ত্র। বিদ্যুতের আবিষ্কৃত প্রযুক্তি বাজারে এলে কর্মসংস্থানের সম্ভাবনাও থাকবে।
০৯১২
কেন্দ্রের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে কাজ করা সম্ভব হলে এই প্রযুক্তি আরও উচ্চতর জায়গায় পৌঁছে যাবে বলে মনে করছেন বিদ্যুৎ। তাঁর কথায়, ‘‘প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে সাক্ষাৎ মেরেকেটে মিনিট দু’য়েকের ছিল। তার মধ্যেই উনি যে আগ্রহ দেখিয়েছেন, তাতে আমি আশাবাদী। ওই যন্ত্র কী ভাবে কাজ করে, কৃষকরা কী ভাবে তা ব্যবহার করতে পারেন, কোথায় এবং কী পদ্ধতিতে আমরা ওই যন্ত্র তৈরি করছি— আমার থেকে এই সব জানতে চাইছিলেন উনি।’’
১০১২
প্রতি বছর বিশ্ব জুড়ে যে পরিমাণ কৃষিবর্জ্য উৎপন্ন হয়, তার মূল্য প্রায় ন’লক্ষ কোটি টাকার সমান। কৃষিজমিতে নতুন বীজ বপনের আগে জমি পরিষ্কারের জন্য খড়কুটো পোড়ানোকেই সহজ সমাধান ভাবেন দেশের কৃষকরা। কৃষিবর্জ্য পোড়ানো থেকেই সব চেয়ে বেশি ব্ল্যাক কার্বন তৈরি হয় বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। যার জেরে প্রতি বছর বিশ্বে ৭০ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে বিদ্যুতের তৈরি প্রযুক্তি ভবিষ্যতে বায়ুদূষণ রোধে বড় ভূমিকা পালন করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
১১১২
বিদ্যুতের পাশাপাশি গ্লাসগোর জলবায়ু সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে বৈঠকে ছিলেন তামিলনাড়ুর মেয়ে বিনিশা উমাশঙ্কর। কয়লার উনুনে জামাকাপড় ইস্ত্রি থেকে ভয়াবহ দূষিত হচ্ছে বাতাস। তা রুখতে একটি সৌরচালিত ইস্ত্রি-গাড়ি তৈরি করেছে ১৫ বছরের এই স্কুলছাত্রী।
১২১২
বিনিশার তৈরি যন্ত্রও ‘আর্থশট প্রাইজ’-এর চূড়ান্ত তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে। রাষ্ট্রনেতাদের সামনে দৃপ্ত কণ্ঠে সে দিন কিশোরী বলল, ‘‘পৃথিবীকে বাঁচাতে কিছু করতে হবে। আপনারা না এগোলে আমরাই লড়ব।’’