Advertisement
E-Paper

‘ব্যর্থতা মানেই সাফল্যের দিকে এগনো’, পড়ুয়াদের বার্তা মোদীর

‘পরীক্ষা পে চর্চা’ নিয়ে নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে পড়ুয়াদের মত বিনিময়। যিনি প্রধানমন্ত্রী তিনি এ দিন শিক্ষকের ভূমিকায়।

‘পরীক্ষা পে চর্চা’র মঞ্চে পড়ুয়াদের সঙ্গে কথোপকথন প্রধানমন্ত্রীর। ছবি: পিটিআই

‘পরীক্ষা পে চর্চা’র মঞ্চে পড়ুয়াদের সঙ্গে কথোপকথন প্রধানমন্ত্রীর। ছবি: পিটিআই

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০২০ ১৪:৫৬
Share
Save

ছাত্রছাত্রী এবং শিক্ষক-শিক্ষিকা মিলিয়ে দর্শক সংখ্যা পৌঁছেছিল দু’হাজারে। সোমবার ‘পরীক্ষা পে চর্চা’র সেই মঞ্চ থেকেই ব্যর্থতা ঝেড়ে ফেলে, পড়ুয়াদের জীবনে এগিয়ে যাওয়ার মন্ত্র শোনালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পরামর্শ ও রসিকতার মিশেলে তুলে ধরলেন ছাত্রজীবনের লক্ষ্যের কথাও।

‘পরীক্ষা পে চর্চা’ নিয়ে নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে পড়ুয়াদের মত বিনিময়। যিনি প্রধানমন্ত্রী তিনি এ দিন শিক্ষকের ভূমিকায়। পাঠ্যবইয়ের বাইরে ছাত্রছাত্রীদের যা যা প্রশ্ন, তার উত্তর তাঁর কাছে। সেই মঞ্চ থেকে মোদী কী বার্তা দিতে চলেছেন সে দিকে কান পেতে ছিলেন পড়ুয়ারা। তৃতীয় ‘পরীক্ষা পে চর্চা’র মঞ্চে বক্তৃতা করতে গিয়ে প্রথম থেকেই ছাত্রছাত্রীদের আপনজন হয়ে ওঠার চেষ্টা করলেন নরেন্দ্র মোদী। বললেন, ‘‘আপনাদের অভিভাবকদের সঙ্গে আমার ফারাক এখানেই যে, আমি অনেক বেশি বন্ধুত্বপূর্ণ ভাবে আলোচনা করব।’’ প্রধানমন্ত্রীকে কয়েক ধাপ এগোতে দেখে পড়ুয়ারা প্রশ্ন করেন, পরীক্ষার সময় মুড কীভাবে ভাল রাখা যায়? এর উত্তরে স্বভাবসিদ্ধ ঢঙে মোদী বলেন, ‘‘প্রথমে এটার উত্তর খোঁজা প্রয়োজন কেন মুড অফ হয়?’’ মেজাজ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পড়ুয়াদের আত্মসংযমের পাঠ দিয়েছেন ‘শিক্ষক’ নরেন্দ্র মোদী।

সাফল্য ও ব্যর্থতাকে কীভাবে দেখা উচিত? মোদীর সঙ্গে পড়ুয়াদের আলাপচারিতায় স্বাভাবিক ভাবেই উঠে আসে এই প্রশ্ন। তার উত্তর দিতে গিয়ে মোদী টেনে আনেন ইসরোর চন্দ্রযান-২-র অভিযান প্রসঙ্গ। বলেন, ‘‘চন্দ্রযান-২ অভিযান ব্যর্থ হওয়ায় আমার মন অশান্ত হয়ে উঠেছিল। আমি তার পর দিন সকালে বিজ্ঞানীদের সঙ্গে দেখা করে তাঁদের উৎসাহিত করার চেষ্টা করেছিলাম।’’ এর পরেই মোদী যোগ করেন, ‘‘প্রত্যেক ব্যর্থতাই আসলে সাফল্যের দিকে এক ধাপ এগিয়ে যাওয়া।’’

আরও পড়ুন: দখলে থাকা সমস্ত রাজ্যেই সিএএ-বিরোধী প্রস্তাব, জানাল কংগ্রেস

ব্যর্থতাকে জয় করে সাফল্যের দরজা খোলা নিয়ে বলতে গিয়ে মোদী টেনে আনেন ২০০১ সালে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন ভারতীয় ক্রিকেট দলের কথা। ইডেনে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে দ্রাবিড় ও লক্ষ্মণের হার না মানা লড়াই কীভাবে সেই টেস্ট ম্যাচের রঙ বদলে দিয়েছিল তা ফের এক বার তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। পড়ুয়াদের স্পষ্ট ভাবেই জানিয়ে দেন, ‘‘পরীক্ষার অঙ্কে এখন আর জীবন চলে না। পরীক্ষার নম্বর কখনও সাফল্যের মাপকাঠি হতে পারে না। নম্বর ভাল না হলে গোটা জীবন শেষ হয়ে গেল, এমনও ভাবার কোনও কারণ নেই।’’

জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে শেখার পাঠ এ দিন ছাত্রছাত্রীদের দিয়েছেন মোদী। আগের থেকে এখন পরিস্থিতির যে অনেকটা বদল হয়েছে তা মেনে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘এখন অভিভাবকরা পড়ুয়াদের নানা ধরনের প্রশিক্ষণ নেওয়ার দিকে এগিয়ে দিচ্ছেন।’’ প্রযুক্তি আর গ্যাজেট সর্বস্বতার বেড়াজাল কেটে পড়ুয়াদের এগিয়ে যাওয়ার জন্যও উৎসাহিত করেন তিনি। প্রযুক্তির হয়ে সওয়াল করেছেন বটে, তবে শেষ পর্যন্ত প্রত্যেক দিন বেশ কিছু ক্ষণ সময় প্রযুক্তির আওতার বাইরে কাটানোর পরামর্শও দিয়েছেন ছাত্রছাত্রীদের।

ছাত্রছাত্রীদের অধিকার এবং কর্তব্য সম্পর্কেও সচেতন করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘পড়ুয়াদের উচিত দেশের জন্য কাজ করা। তারা আজ দেশের জন্য যা করবেন, তা ভবিষ্যতে তাঁদেরই লাভ দেবে।’’ প্রত্যেক মানুষের ছোট্ট ছোট্ট বদল বড় বড় পরিবর্তন এনে দেবে বলেও এ দিন জানিয়ে দেন মোদী।

আরও পড়ুন: মধ্যপ্রদেশে বিজেপির মিছিল ঘিরে ধুন্ধুমার, মহিলা জেলাশাসককে নিগ্রহের অভিযোগ

জীবনে চাপ কাটিয়ে কী ভাবে বেরোব? প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্ন করেছিলেন অন্ধ্রপ্রদেশের পড়ুয়া জাভেদ, কাশ্মীরের ছাত্রী করিশ্মা ও ছত্তীসগঢ়ের মনিকা। তার উত্তর দিতে গিয়ে পড়ুয়াদের মেন্টরের ভূমিকায় দেখা যায় প্রধানমন্ত্রীকে। পড়ুয়াদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘যে কথা আপনারা নিজেদের বাবা, মাকে বলতে পারছেন না তা মোদীজিকে বললেন। আমি চাপ দেওয়ার কথা বলব না। কারণ, স্প্রিং বেশি টানলে তা নষ্ট হয়ে যায়। বাবা-মা ও শিক্ষকদের এটা বুঝতে হবে। পড়ুয়াদের উৎসাহ দিতে হবে। যত উৎসাহ দেবেন তত ভাল হবে। কিন্তু, চাপ দিলে সমস্যা বাড়বে বই কমবে না।’’

আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীকে ‘কপি’ করে হাসির খোরাক উর্বশী রাউটেলা!

পড়ুয়াদের শেষ প্রশ্ন ছিল, সকালে না রাতে, কোন সময়ে পড়াশোনা করা ভাল? রসিকতা করেই মোদী বলেন, ‘‘আমি এই প্রশ্নের অর্ধেক উত্তর দিতে পারব। কারণ, আমি খুব সকালে উঠি। আর কাজের চাপ থাকায় গভীর রাতে শুতে যাই।’’ তবে সকালে উঠে পড়াশোনা করার পক্ষেই সওয়াল করেছেন মোদী। তাঁর ব্যাখ্যা, ‘‘সকালে উঠে পড়লে ভাল। কারণ , সে সময় মন পরিষ্কার থাকে।’’ তবে, এর কোনও বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা তাঁর কাছে নেই বলেও জানিয়েছেন তিনি। শুধু বই নয়, পড়ুয়াদের প্রকৃতির পাঠ নেওয়ার বার্তাও এ দিন দিয়েছেন তিনি

Pariksha Pe Charcha Narendra Modi PM Modi

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}