জম্মু ও কাশ্মীরের জ়েড মোড় সুড়ঙ্গের (সোনমার্গ সুড়ঙ্গ) উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সোমবার সুড়ঙ্গ উদ্বোধনের সময় মোদীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাও। কাশ্মীরের গন্দেরবল জেলায় প্রায় সাড়ে ছয় কিলোমিটার দীর্ঘ সুড়ঙ্গ শ্রীনগরের সঙ্গে সোনমার্গের যোগযোগ আরও উন্নত করবে। বছরের যে কোনও মরসুমে এই সুড়ঙ্গপথ ব্যবহার করা যাবে।
আগে এই যাত্রাপথে জ়েড আকৃতির একটি সড়ক ব্যবহার করতে হত। সেই থেকেই সুড়ঙ্গের নাম জ়েড মোড়। বর্ষার মরসুমে এই রাস্তা প্রায়শই বন্ধ হয়ে থাকে। তুষারধসপ্রবণ কিছু অঞ্চলও আছে এই রাস্তায়। সুড়ঙ্গপথ চালু হওয়ার ফলে সেই সমস্যা আর থাকবে না এই যাত্রাপথে। সোনমার্গ সুড়ঙ্গ প্রকল্পে মোট ১২ কিলোমিটারের পথ রয়েছে। তার মধ্যে মূল সুড়ঙ্গপথ রয়েছে ৬.৪ কিলোমিটারের। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে সাড়ে আট হাজারেরও বেশি উচ্চতায় নির্মিত এই সুড়ঙ্গের ফলে দু’ঘণ্টার রাস্তা ১৫ মিনিটে অতিক্রম করা যাবে। এই সুড়ঙ্গে মোট দু’টি লেন রয়েছে। দু’দিকের রাস্তাই ১০ মিটার করে চওড়া। তা ছাড়া সাড়ে সাত মিটারের একটি রাস্তা রয়েছে জরুরিকালীন ব্যবহারের জন্য। প্রতি ঘণ্টায় প্রায় এক হাজার গাড়ি চলাচল করতে পারবে এই সুড়ঙ্গপথ ধরে। সর্বোচ্চ গতি রাখা যাবে ৮০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা।
জ়োজিলা সুড়ঙ্গের একটি অংশ হিসাবে ২০১৫ সালে জ়েড মোড় সুড়ঙ্গের কাজ শুরু হয়। জ়োজিলা সুড়ঙ্গের মূল লক্ষ্য শ্রীনগর এবং লাদাখের মধ্যে যোগাযোগকে আরও উন্নত করা। ২০২৮ সালের মধ্যে জ়োজিলা সুড়ঙ্গের কাজ শেষ করার লক্ষ্য রাখা হয়েছে। এর ফলে এক দিকে যেমন সুবিধে হবে সেনাবাহিনীর তেমনই অন্য দিকে জম্মু-কাশ্মীরের সামাজিক-সাংস্কৃতিক যোগাযোগ বাড়বে। হবে আর্থিক বৃদ্ধিও।
এ দিন সুড়ঙ্গ উদ্বোধনের সময় প্রতিশ্রুতি পূরণের জন্য মোদীকে ধন্যবাদ জানান মুখ্যমন্ত্রী ওমর। এর আগে মোদী কাশ্মীরবাসীকে আশ্বাস দিয়েছিলেন, তাঁরা ফের নিজেদের সরকার নির্বাচন করতে পারবেন। সেই কথা রাখার জন্য এবং কাশ্মীরে নতুন নির্বাচিত সরকার তৈরির জন্য মোদীকে ধন্যবাদ জানান ওমর।
গত শনিবার সুড়ঙ্গ উদ্বোধনের প্রস্তুতি ঘুরে দেখেন ওমর। পরে সমাজমাধ্যমে কিছু ছবি পোস্ট করে লেখেন, ‘‘জ়েড মোড় সুড়ঙ্গ সোনমার্গকে সারা বছর পর্যটকদের জন্য খুলে দেবে। ফলে সেখানে উন্নত মানের স্কি রিসর্ট তৈরি করা সম্ভব হবে। শীতকালে স্থানীয় বাসিন্দাদের সোনমার্গ ছেড়ে সরে যেতে হবে না। কার্গিল ও লে থেকে শ্রীনগরে যাতায়াতের সময়ও কমবে।’’ তাতে প্রধানমন্ত্রীও জানান, ‘‘আমি এই সফরের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে আছি।”