বিরোধীরা তাঁর বিরুদ্ধে খড়্গহস্ত মণিপুরের ইস্যুতে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী পাল্টা বিরোধী জোটকে দুষলেন কর্মনাশা সংস্কৃতি নিয়ে। তিনি বললেন, ‘‘এঁরা এখনও সেই পুরনো সংস্কৃতি ছাড়তে পারেননি। এঁদের লক্ষ্য একটাই— নিজেরাও কাজ করব না, কাউকে কাজ করতেও দেব না।’’
রবিবার ভিডিয়ো কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে দেশের ৫০৮টি রেলস্টেশনের আধুনিকীকরণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। ভারতের স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষেই এই ৫০৮টি স্টেশনকে ‘অমৃত ভারত স্টেশন’ হিসাবে তৈরি করা হচ্ছে। যে স্টেশনগুলি মোদীর কথা অনুযায়ী হবে ‘ঐতিহ্য এবং আধুনিকতার প্রতীক’। সেখানেই দেশের উন্নতির কথা বলতে গিয়ে মোদী টেনে আনেন রাজনীতির প্রসঙ্গও। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘আন্তর্জাতিক দুনিয়ায় ভারতের সম্মান এখন অনেক বেড়েছে। তিন দশক পর দেশের মানুষ পূর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা দিয়ে একটি দলকে বেছে নিয়ে দায়িত্ব দিয়েছে। এখন আমরা আর নেতিবাচক রাজনীতি করছি না। আমরা এখন ইতিবাচক রাজনীতির দিকে এগিয়ে চলেছি।’’
মোদী যে দিন বিরোধীদের আক্রমণ করলেন, তার ঠিক দু’দিন পর অর্থাৎ, মঙ্গলবারই লোকসভায় প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনার পরিকল্পনা রয়েছে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র শরিকদের। মোদী বর্ণিত নেতিবাচক রাজনীতির তির তাদের দিকেই ছোড়া হয়েছে বলে মনে করছেন রাজনীতির কারবারিরা। লোকসভায় বাদল অধিবেশনের বেশ কিছু দিন আগে থেকেই মণিপুরে অশান্তি শুরু হয়েছিল। এর মধ্যেই মণিপুরে দুই মহিলাকে নগ্ন করিয়ে রাস্তায় হাঁটানো এমনকি, যৌন হেনস্থা করার ঘটনা ঘটে। যা নিয়ে উত্তাল হয় সংসদ। বিরোধীরা মণিপুর নিয়ে মোদীর ব্যাখ্যা দাবি করে। কিন্তু মোদী বাইরে এ নিয়ে কথা বললেও সংসদে এ নিয়ে কোনও আলোচনা করেননি। বস্তুত, মণিপুর নিয়ে সংসদে প্রধানমন্ত্রীকে বক্তব্য পেশ করানোর জন্যই বিরোধীরা প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনার পরিকল্পনা করেন। মঙ্গলবার সেই প্রস্তাব আনার আগেই রবিবার বিরোধীদের উদ্দেশে আক্রমণ শানালেন মোদী।
বিরোধীরা যেখানে তাঁকে প্রধানমন্ত্রিত্ব ছাড়তে বলে অনাস্থা প্রস্তাব আনতে চলেছে, সেখানে প্রধানমন্ত্রী মোদীই পাল্টা বিরোধীদের দেশ ছাড়তে বললেন। রেলের অনুষ্ঠানে ইতিবাচক রাজনীতির কথা বলে তিনি মন্তব্য করেন, ‘‘দুর্নীতিগ্রস্তরা ইন্ডিয়া ছাড়ো।’’ একই সঙ্গে বিরোধীদের প্রতিবাদের ফলে সংসদ অচল হয়ে যাওয়ার ঘটনাকে আদতে ‘কাজ না করতে দেওয়ার পুরনো কৌশল’ বলেও কটাক্ষ করেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী।
উল্লেখ্য, কেন্দ্রের শাসক বিজেপির বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন রাজ্যের শাসকদলগুলি এবং অন্য বিরোধী দলগুলির একাংশ হাত মিলিয়েছে। সেই ঐক্যের নাম দেওয়া হয়েছে ‘ইন্ডিয়া’। লোকসভা ভোটে বিজেপির বিরুদ্ধে এই নামেই জোটবদ্ধ ভাবে লড়ার কথা ভেবেছে বিরোধীরা। রেলের অনুষ্ঠান থেকে এই ‘ইন্ডিয়া’ জোটকেই কটাক্ষ করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন:
-
২০০ ফুট উঁচুতে আচমকা বিকল রোলারকোস্টার, শেষে সিঁড়ি বেয়ে নামলেন আতঙ্কিত পর্যটকেরা
-
কাঁটাতারে আবার সম্পর্কের কাটাকুটি, পাকিস্তানি তরুণীকে অনলাইনে বিয়ে করলেন জোধপুরের যুবক
-
ইম্ফলে জ্বালিয়ে দেওয়া হল ১৫টি বাড়ি, গুলিতে আহত এক, শনিবার রাত থেকে নতুন করে উত্তপ্ত মণিপুর
-
৫,০০০ কোটি দিয়ে সঙ্ঘী সিমেন্টের ব্যবসা কিনল আদানি গোষ্ঠী, অন্য গন্ধ পাচ্ছে কংগ্রেস