গান্ধীনগরে এক সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। শনিবার। ছবি: পিটিআই
গত গুজরাত নির্বাচনে পাটীদার সম্প্রদায়ের মনোবেদনার কথা ভোলেননি নরেন্দ্র মোদী। রাজনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, এ বারের বিধানসভা ভোটে তাই এই সম্প্রদায়ের (গুজরাতের মোট সংখ্যার প্রায় ১৩ শতাংশ) প্রতি তিলার্ধ অমনোযোগ প্রদর্শন দূরস্থান, বরং প্রচারে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন তিনি। গত মার্চ থেকে এই রাজ্যে যে ১৭টি অনুষ্ঠানে এসেছেন মোদী, সেগুলির মধ্যে ছ’টির আয়োজক পাটীদার সম্প্রদায়।
শনিবারও রাজকোট জেলার পাটীদার গোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের তৈরি একটি হাসপাতালের উদ্বোধন করে গুজরাতের অস্মিতাকেও জাগ্রত করেছেন। নিজের সরকারের সঙ্গে সংযোগ করেছেন মহাত্মা গান্ধী এবং সর্দার বল্লভভাই পটেলকে। নিশানা করেছেন কংগ্রেসের দুর্নীতিকে। ‘ডাবল এঞ্জিন’-এর গুণগান করেছেন। জানিয়েছেন, দেশ শাসনের ও সমাজ সেবার কাজ সামলাতে পারছেন, গুজরাতের কাছ থেকে শিক্ষা পেয়েছেন বলেই। বিনিময়ে তিনি এমন কিছু ভুলেও করেননি যাতে গুজরাতবাসীর মাথা লজ্জায়ঝুঁকে যায়।
সব মিলিয়ে আজ এক স্বয়ংসম্পূর্ণ নির্বাচনী প্যাকেজ তাঁর বক্তৃতায় রেখেছেন মোদী। রাজকোটের পর গান্ধীনগরে বিভিন্ন সমবায় সংস্থার কর্তাদের একটি সম্মেলনে যান তিনি। সেখানে প্রায় ১৭৫ কোটি টাকার ইউরিয়া প্লান্টের উদ্বোধন করে কৃষকদের শক্তিশালী করার ডাক দিয়েছেন মোদী। এই অনুষ্ঠানে তাঁর সঙ্গে ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীঅমিত শাহও।
গুজরাতে এমন অনেক নির্বাচনী ক্ষেত্র রয়েছে, যেখানে ১৫ শতাংশ মানুষ পাটীদার গোষ্ঠীর। শুধু ভোটদানের বিষয়টিই নয়। রাজনৈতিক এবং দলীয় তহবিল গঠনের ক্ষেত্রেও পাটীদারেরা বিগত দিনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছেন। ১৭-র বিধানসভা নির্বাচনে হার্দিক পটেলের নেতৃত্বে পাটীদার গোষ্ঠীর কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার বিরোধী ক্ষোভ সংঘবদ্ধ হয়েছিল। বিজেপি শিবিরের ধারণা, তার সুবিধা ভোগ করেছিল কংগ্রেস। এ বার তাই অতিরিক্ত সাবধানতা।
আজ মোদীর কথায়, “দেশের সেবা করার জন্য সামান্য সুযোগও হাতছাড়া করিনি। তার কারণ গুজরাতের শিক্ষা। গুজরাতের মানুষ আমায় শিখিয়েছেন, কী ভাবে সমাজের সেবা করতে হয়।” গুজরাতের অস্মিতাকে জাগ্রত করতে চেয়ে তিনি এক জাতিগর্বের অবতারণা করেছেন বলেই মনে করছে রাজনৈতিক শিবির। যে জাতিগর্বের সঙ্গে দেশের বেকারত্ব, কৃষক সমস্যা, অর্থনীতির কোনও সংযোগ নেই। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “আমি ভুল করেও কখনও এমন কাজ করিনি, যাতে আপনাদের মাথা নোয়াতে হয়।” এর পরই কংগ্রেসকে তির্যক ইঙ্গিত করে বলেছেন, “দেশের গরীবদের কল্যাণের প্রশ্নে আমি কোনও ভাই-ভাতিজাবাদ করি না। দেশের ১০০ শতাংশ মানুষের কাছে যাতে সরকারের সমস্ত সুবিধা পৌঁছয়, সেই জন্য সরকার অভিযান চালাচ্ছে। যাঁর যা পাওয়া উচিত, তিনি যেন সেটা পান। কোনও দুর্নীতির বা জাতপাতের ভেদাভেদ আমার নেই।”
ইউপিএ সরকারকে আক্রমণ করে মোদী বলেছেন, “২০১৪ সালের আগে পরিস্থিতি ভিন্ন ছিল। আমরা যদি কোনও উন্নয়নমূলক প্রকল্পের ফাইল কেন্দ্রকে পাঠাতাম, তারা তা ফিরিয়ে দিত। তারা গুজরাতের কোনও উন্নয়নেরই ধার ধারত না।” মহাত্মা গান্ধীর উদাহরণ টেনে তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, “বাপুজি চাইতেন, ভারতে দলিত আদিবাসী এবং মহিলাদের সশক্তিকরণ হোক। যেখানে স্বচ্ছতা এবং এবং স্বাস্থ্য সচেতনা জীবনের অঙ্গ, অর্থনীতির ভিত্তি স্বদেশি শিল্প।”
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy