প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই।
রামের পরে এ বার শ্রীকৃষ্ণ।
গুজরাতে দেশের দীর্ঘতম কেব্ল সেতুর উদ্বোধন করে শ্রীকৃষ্ণকে ধন্যবাদ দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সুদর্শন সেতু নামে এই কেব্ল সেতুটির উদ্বোধনের পরে তিনি দাবি করেছেন, ‘‘ভগবান শ্রীকৃষ্ণ আমার ভাগ্যে এই সেতুটি লিখে রেখেছিলেন। তাই আমার হাত দিয়েই এই সেতুর নির্মাণ করিয়েছেন তিনি।’’ শ্রীকৃষ্ণকে ধন্যবাদ জানানোর পাশাপাশি, প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, এই সেতু নির্মাণে কংগ্রেস কী ভাবে অসহযোগিতা করেছিল। পাঞ্চকুনি সমুদ্র সৈকতে পৌঁছে স্কুবা ডাইভিং করে দ্বারকা নগরীর দর্শন করলেন মোদী। আজ পশ্চিমবঙ্গের কল্যাণী-সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত গড়ে ওঠা এমসের উদ্বোধন করেন তিনি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একটা বড় অংশ প্রায়শই কটাক্ষ করে থাকেন, ২০১৪ সালে কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকে কংগ্রেসকে ‘নন্দ ঘোষ’ বানিয়েছেন মোদী। আজও সুদর্শন সেতুর উদ্বোধনে ‘নন্দ ঘোষ’কে তুলোধোনা করতে ছাড়েননি তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন সুদর্শন সেতুর প্রস্তাব করেছিলাম। কিন্তু তখন কেন্দ্রে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন সরকার। তারা ওই প্রস্তাবে কর্ণপাতও করেনি।’’ তাঁর আমলে দেশ কী ভাবে উন্নয়নের সড়ক ধরে এগোচ্ছে তার লম্বা ফিরিস্তি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বলেছেন, ‘‘যখন নতুন ভারতের গ্যারান্টি দিয়েছিলাম, তখন বিরোধীরা (কংগ্রেস) উপহাস করেছিল। আজ দেশবাসী দেখছে নতুন ভারত। ওরা অনেক দিন দেশ শাসন করেছে, কিন্তু মানুষের উন্নয়ন করেনি। কারণ, ওদের উন্নয়নের লক্ষ্য ছিল একটি পরিবার। উন্নয়নের নামে আর্থিক নয়ছয় করেছে।’’ মোদীর দাবি, তিনি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগে বিশ্ব অর্থনীতিতে ভারত ছিল ১১তম। বর্তমানে ভারত অর্থনীতির মাপকাঠিতে পঞ্চম স্থানে উঠে এসেছে।
২.৩২ কিলোমিটার দীর্ঘ সুদর্শন সেতুটি ওখা এবং ভেট দ্বারকাকে জুড়েছে। চার লেনের সেতুটি ২৭.২০ মিটার চওড়া। প্রতিটি লেনের পাশে থাকছে ২.৫০ মিটার চওড়া ফুটপাথ। সেতুর দু’দিকেই রয়েছে শ্রীকৃষ্ণের প্রতিকৃতি। ২০১৭ সালে এই সেতুর ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করেছিলেন মোদীই। সুদর্শন সেতু নির্মাণে খরচ হয়েছে ৯৭৯ কোটি টাকা। জানা গিয়েছে, এই সেতুর উপরে সৌরবিদ্যুৎ প্যানেল বসানো হয়েছে। তা থেকে প্রতি দিন ১ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ তৈরি হবে।
দ্বারকার যে প্রাগৈতিহাসিক শহর আরব সাগরে তলিয়ে গিয়েছিল, আজ প্রধানমন্ত্রী সেই শহর দর্শন করেন। জলের নীচে দ্বারকাধীশ মন্দিরে প্রার্থনাও করেন তিনি। স্কুবা ডাইভিংয়ের অভিজ্ঞতা সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে তিনি লেখেন, ‘জলের তলায় ডুবে যাওয়া দ্বারকা নগরীতে গিয়ে প্রার্থনা করা একটি ঐশ্বরিক অভিজ্ঞতা ছিল। আধ্যাত্মিক অনুভূতি হল। শাশ্বত ভক্তি এবং প্রাচীন যুগের সঙ্গে সংস্পর্শে আসার অভিজ্ঞতা কখনও ভুলব না’। তাঁর সংযোজন, ‘সমুদ্রের নীচে এই শহর দেখার সুযোগ পেলাম। শ্রীকৃষ্ণ নিজের হাতে এই শহর তৈরি করেছিলেন।’’ মন্দির দর্শনের সময় তিনি কী কী করেছেন তার বর্ণনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী জানান, আজ তিনি সঙ্গে করে ক’টি ময়ূরের পালক নিয়ে গিয়েছিলেন। সেই পালক ‘শ্রীকৃষ্ণের চরণ’-এ রেখে এসেছেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, রামে পর এ বার শ্রীকৃষ্ণকে ঘিরে আবেগ তৈরি করতে চাইছে বিজেপি। সম্প্রতি মথুরায় গিয়ে কৃষ্ণ নাম জপেছেন প্রধানমন্ত্রী। এ বার দ্বারকাতে সেতু উদ্বোধনেও শ্রীকৃষ্ণের আরাধনা করলেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy