মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। ফাইল চিত্র।
শাসক দলের আশঙ্কা এক রকম। মুখ্য প্রশাসকের বক্তব্য সম্পূর্ণ অন্য রকম!
এমন বিরল ঘটনাই ঘটল দক্ষিণী রাজ্যে কেরলে। শাসক দল সিপিএমের যা আশঙ্কা, বিধানসভায় দাঁড়িয়ে তা খারিজ করে দিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। যিনি সিপিএমের পলিটবুরো সদস্য।
আগামী বছরের পার্টি কংগ্রেসের আগে সব রাজ্যেই এখন সিপিএমের সম্মেলন প্রক্রিয়া চলছে। শাখা ও লোকাল স্তরের পরে পরবর্তী পর্যায়ের সম্মেলন-পর্ব শুরু হওয়ার মুখে কেরলের রাজ্য সিপিএম একটি প্রস্তুতি নোট তৈরি করেছিল। সেখানে বলা হয়েছিল, বিভিন্ন কলেজের, বিশেষত বেসরকারি ও পেশাদারি প্রতিষ্ঠানে, মেয়েদের প্রলোভন দেখিয়ে সন্ত্রাসবাদী ও সাম্প্রদায়িক কাজকর্মে টেনে নেওয়া হচ্ছে। এই প্রবণতা বন্ধ করতে সক্রিয় হওয়া এবং মানুষকে সচেতন করার ডাক দেওয়া হয়েছিল দলের কর্মীদের। শাসক দলের এমন বক্তব্য প্রকাশ্যে আসার পরে হইচই হয়েছিল বিস্তর। শেষ পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন, সরকারের অন্তত এমন কোনও ঘটনার কথা জানা নেই। কেরলের মানুষ ধর্মনিরপেক্ষ ভাবনা নিয়েই সমাজের বাঁধন অটুট রেখে চলেছেন এবং সেই মানুষের উপরেই সরকারের আস্থা আছে।
সিপিএমের দলীয় নোটে মহিলাদের প্রলোভিত করে সন্ত্রাসবাদী ও সাম্প্রদায়িক সংগঠন এবং কাজে টেনে নেওয়ার কথা যে বলা হয়েছিল, তার প্রেক্ষিতেই বিধানসভায় বিরোধী দল কংগ্রেসের বিধায়কেরা এই সংক্রান্ত প্রশ্ন তুলেছিলেন। লিখিত জবাবে মুখ্যমন্ত্রী বিজয়ন বলেছেন, সরকারের কাছে এমন কোনও ঘটনার তথ্য নেই। এই সংক্রান্ত আলাদা কোনও আশঙ্কাও নেই। তবে আরও নানা প্রশ্নের প্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রী একই সঙ্গে বলেছেন, সামাজিক মাধ্যমকে ব্যবহার করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সংহতি নষ্ট করার চেষ্টা মাঝেমধ্যেই হয়ে থাকে। তার মোকাবিলার জন্য পুলিশের দু’টি বিভাগকে বিশেষ ভাবে সক্রিয় রাখা হয়েছে। কিন্তু আলাদা করে প্রলোভন দেখিয়ে কোনও সংগঠনে নিয়ে যাওয়ার বিষয় এটা নয়। ওই আশঙ্কার প্রেক্ষিতে বিভিন্ন ধর্মীয় ও গোষ্ঠী-প্রধানদের ডেকে বৈঠক করার জন্য বিরোধীদের দাবিও উড়িয়ে দিয়েছেন বিজয়ন।
সন্ত্রাসবাদী ও সাম্প্রদায়িক সংগঠনের সঙ্গে যোগসাজশের সূত্রে কেরলে কলেজ পড়ুয়া থেকে শুরু করে নানা ধরনের প্রচারকের গ্রেফতার হওয়ার একাধিক ঘটনা ঘটেছে। বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলিও তৎপর হয়েছে। সেই প্রেক্ষাপটেই সিপিএমের দলীয় নোটের আশঙ্কা বাইরে আসার পরে বিতর্ক বেধেছিল। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও বিজেপি নেতা ভি মুরলীধরনের দাবি ছিল, সিপিএমের নোটে তাঁদের বক্তব্যই ঠিক প্রমাণিত হল। রাজ্যের উচিত কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে এই সংক্রান্ত তথ্য তুলে দেওয়া। কংগ্রেসও বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী শেষমেশ সব বক্তব্যই খারিজ করে দেওয়ায় সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের ব্যাখ্যা, ‘‘প্রলোভন দেখিয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টিকারী সংগঠনের দিকে টানার চেষ্টার খবর কিছু জেলা থেকে দলীয় স্তরে পাওয়া গিয়েছে। তাই সতর্ক থাকার কথা বলা হয়েছে। বড় কোনও ঘটনা বা গ্রেফতার নেই বলে সরকারের কাছে আলাদা করে তথ্য না-ই থাকতে পারে। কিন্তু সতর্ক থাকতে তো ক্ষতি নেই!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy