যাবতীয় প্রযুক্তিগত সুবিধা কি শুধুই গুটিকয়েক কিছু ব্যক্তি এবং ভিআইপিদের জন্য? আর সাধারণ মানুষকে কি পুরোটাই ভগবানের ভরসায় ফেলে রাখা হয়? নয়াদিল্লি স্টেশনে পদপিষ্টের ঘটনায় সেই প্রশ্নই এ বার পৌঁছে গেল সুপ্রিম কোর্টে।
নয়াদিল্লি স্টেশনে কুম্ভমেলার পুণ্যার্থীদের ভিড়ে পদপিষ্টের পরিস্থিতি তৈরি হয় গত শনিবার। তাতে মহিলা, শিশু-সহ মোট ১৮ জন যাত্রীর মৃত্যু হয়। নয়াদিল্লির পদপিষ্টকাণ্ড নিয়ে এ বার সুপ্রিম কোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে। মামলাকারী বিশাল তিওয়ারির দাবি, ভবিষ্যতে এই ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে কিছু গাইডলাইন তৈরি করা উচিত। তাঁর আর্জি, এই গাইডলাইন তৈরির জন্য বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করে দিক শীর্ষ আদালত।
সম্প্রতি প্রয়াগরাজের কুম্ভমেলায় মৌনী অমাবস্যার শাহিস্নানের ভিড়েও পদপিষ্ট হওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। কুম্ভমেলার প্রাঙ্গণে ওই পদপিষ্টের ঘটনায় অন্তত ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। মামলাকারীর আবেদনপত্রে কুম্ভমেলার পদপিষ্টের ঘটনাও উঠে এসেছে। তাঁর বক্তব্য, ভিড় নিয়ন্ত্রণে সব রকম প্রযুক্তি থাকার পরেও কোনও পদক্ষেপ করা হচ্ছে না। তাঁর অভিযোগ, প্রযুক্তি এবং অন্য সুযোগসুবিধা কেবল ভিআইপিদের জন্যই রাখা হচ্ছে। সাধারণ মানুষ তার কোনও সুবিধা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ মামলাকারীর।
আইনি খবর পরিবেশনকারী ওয়েবসাইট ‘বার অ্যান্ড বেঞ্চ’ অনুসারে, মামলাকারীর বক্তব্য, “আজকের দিনে আমাদের কাছে পর্যাপ্ত বাহিনী, স্বেচ্ছাসেবক, প্রযুক্তি এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা রয়েছে। তার পরেও যদি এমন ঘটনা ঘটে, তা সত্যিই দুঃখের বিষয়। মুষ্টিমেয় কিছু মানুষ এবং ভিআইপির জন্য সব প্রযুক্তি এবং বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করা হচ্ছে। কিন্তু সাধারণ মানুষকে ফেলে রাখা হচ্ছে ভগবানের ভরসায়।”
আরও পড়ুন:
নয়াদিল্লি স্টেশনে দুর্ঘটনার পর ইতিমধ্যে নড়েচড়ে বসেছে রেল। স্টেশনে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করার জন্য আপাতত এক সপ্তাহ বিকেল ৪টে থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত প্ল্যাটফর্ম টিকিট বিক্রি বন্ধ থাকবে। সোমবার থেকে এই নিয়ম কার্যকর হয়েছে। দেশের নানা প্রান্তে বিভিন্ন স্টেশনে ভিড় নিয়ন্ত্রণের জন্য বাড়তি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে চলেছে রেল। সূত্রের খবর, ভিড় সামলানোর একাধিক পরিকল্পনা করা হয়েছে। সেগুলির বাস্তবায়ন এখনও বাকি। ব্যবহার করা হতে পারে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাও (এআই)। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে নয়াদিল্লি-সহ দেশের মোট ৬০টি জনবহুল স্টেশনকে প্রাথমিক ভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে বলে খবর। তবে এখনও স্টেশনের নামের সম্পূর্ণ তালিকা পাওয়া যায়নি।