নিশান্ত সিংহ।
আকাশ থেকে, সাগরের জলে নেমে চলছে অনুসন্ধান। এখনও খোঁজ মেলেনি আরব সাগরে ভেঙে পড়া মিগ-২৯কে বিমানের পাইলট কমান্ডার নিশান্ত সিংহের। বৃহস্পতিবার বিকেল পাঁচটায় ভেঙে পড়ার পরের দিনই নৌসেনার ওই বিমানটির অন্য এক পাইলটকে উদ্ধার করা গিয়েছে। নিশান্তের খবরে নজর রাখার পাশাপাশি, নেটিজ়েনরা এখন চোখ রাখছেন তাঁর বিয়ের অনুমতি চাওয়ার আবেদনে। সংসার সীমান্তে ‘আত্মঘাতী যুদ্ধ’ শুরুর অনুমতি চেয়ে গত ৯ মে এক চিঠি লিখেছিলেন নিশান্ত। বিবাহবন্ধন নিয়ে এক সৈনিকের জীবনবোধ ও রসবোধের ঝিলিক তার ছত্রে ছত্রে।
চিঠির বিষয়বস্তুর জায়গায় নিশান্ত লিখেছিলেন, “পারমিশন টু বাইট দ্য বুলেট।” কেন? চিঠির বয়ানে রয়েছে তার বিস্তারিত ব্যখ্যা। চিঠি শুরু হয়েছে এই ভাবে, “এত অল্প সময়ের নোটিসে আপনার উপর এই বোমাটি ফেলার জন্য দুঃখিত। আমি নিজের উপরে একটি পরমাণু বোমা ফেলতে চাই। জানি, যুদ্ধের সময় আকাশে
পলকের মধ্যে আমরা যে সিদ্ধান্ত নিই, তা নিয়ে ফিরে তাকানোর বিলাসিতা আমাদের সাজে না, এটা নিশ্চয়ই আপনি মানবেন।”
দক্ষ সৈনিক ও যুদ্ধবিমানের পাইলট হতে কঠোর প্রশিক্ষণ নিতে হয়। যার নাম সারভাইভ্যাবিলিটি অ্যান্ড কম্প্যাটিবিলিটি টেস্টিং ট্রায়ালস (এসসিটিটি)। নিশান্ত লিখেছেন, “টানা তিন বছরের এসসিটিটি-তে সফল ভাবে উত্তীর্ণ হওয়ার পরে মিস নয়াব রনধওয়া ও আমি এই সমঝোতায় পৌঁছেছি যে, পরস্পরকে না-মেরে আমরা জীবনের বাকি দিনগুলি একসঙ্গে কাটাতে পারব।” সঙ্গে
নিশান্ত জানিয়েছেন, অতিমারির মধ্যে তাঁদের ‘বিপদের মুখে ঠেলে দিয়ে’ ভিডিয়ো কলে আশীর্বাদ জানাতে বাবা-মা সম্মত হয়েছেন।
তৃতীয় তথা শেষ অনুচ্ছেদে নিশান্ত ‘চরম শান্তির জন্য আত্মবলিদানের’ অনুমতি চেয়েছেন তাঁর ঊর্ধ্বতনের কাছে। লিখেছেন, “আপনার ও অন্য সাহসী পুরুষদের মতোই ‘বিবাহচক্রের সমাধি ক্ষেত্রের’ দিকে এগিয়ে যেতে চাই। জানি, সব যন্ত্রপাতির রিডিং খুব ভাল ভাবে অনুসরণ করার সত্ত্বেও আমি পথভ্রান্ত হয়েছি। আশা করি, এমন হঠকারী, আত্মঘাতী ও অপেশাদেরর মতো ভুলের জন্য আমাকে মার্জনা করবেন। কথা দিচ্ছি, এমন ভুল দ্বিতীয় বার করব না। ট্রেনি পাইলটদেরও এমন ভুল করতে শেখাব না।” সব শেষে নিশান্তের অনুরোধ, “আশা করব, আপনি নিজে এসে এই হত্যালীলার সাক্ষী হবেন, সান্ত্বনা দেবেন দম্পতিকে।”
এমন চিঠির জবাবও কম চিত্তাকর্ষক ছিল না। পরিহাসের ছলে অবিবাহিত জীবনকে ভাল ও বিবাহিত জীবনকে নরক হিসেবে ইঙ্গিত করে নিশান্তের ঊর্ধ্বতন কর্তাটি লিখেছিলেন, “সব ভাল জিনিসই এক দিন শেষ হয়। নরকে স্বাগত।” সঙ্গে যোগ করেছিলেন, “তোমার মধ্যে আলোর ঝলক দেখেছি। বরাবর জানতাম, তুমি আলাদা।”
জীবনযুদ্ধের সেই ‘আলাদা’ সৈনিকটি এখন কোথায়? সেই খবরের প্রত্যাশায় প্রহর গুনছেন স্ত্রী নয়াব ও পরিবার। আরব সাগর তোলপাড় করছে নৌসেনা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy