নতুন সংসদ ভবন। —ফাইল চিত্র।
সংসদের বিশেষ অধিবেশন শুরু হবে পুরনো সংসদ ভবনেই। তবে অধিবেশন শেষ হবে নতুন ভবনে। সংবাদ সংস্থা এএনআই লোকসভা এবং রাজ্যসভার সচিবালয়ের একটি সূত্রকে উদ্ধৃত করে এমনটাই জানিয়েছে। চলতি বছরের ২৮ মে নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। নতুন এই ভবনে কবে থেকে সংসদের অধিবেশন বসবে, তা নিয়ে নানা মহলে কৌতূহল তৈরি হয়েছিল। অবশেষে সূত্র মারফত জানা গেল, বিশেষ অধিবেশনেই সাংসদদের জন্য খুলে যাচ্ছে নতুন সংসদ ভবনের দরজা।
১৮ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে সংসদের বিশেষ অধিবেশন। পাঁচ দিনের এই অধিবেশন চলবে ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। সূত্রের খবর, ১৯ সেপ্টেম্বর, অধিবেশনের দ্বিতীয় দিন নতুন সংসদ ভবনে অধিবেশন বসবে। ওই দিনই গণেশ চতুর্থী। তাই তিথিনক্ষত্র দেখেই নাকি ওই দিনটিকে বেছে নেওয়া হয়েছে। যদিও আনুষ্ঠানিক ভাবে সরকারের তরফে এই বিষয়ে কিছুই জানানো হয়নি।
গত বৃহস্পতিবার সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী বিশেষ অধিবেশনের কথা জানান। নিজের এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে মন্ত্রী লেখেন, “অমৃতকালের দিকে তাকিয়ে সংসদে ফলপ্রসূ আলোচনা এবং বিতর্কের আশা রাখছি।” সাধারণ ভাবে কোনও বিশেষ সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্যই সংসদে বিশেষ অধিবেশন ডাকা হয়। কিন্তু এ বার ঠিক কোন বিষয়ে আলোচনা চাইছে মোদীর সরকার, তা স্পষ্ট নয় বৃহস্পতিবারের সংক্ষিপ্ত এই ঘোষণায়। বছর পার হলেই লোকসভা নির্বাচন। সে দিকে তাকিয়েই গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি বিল সংসদে পাশ করানো হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী তো বটেই, সরকারের তরফে কেউ এই বিষয়ে মুখ না খোলায় হঠাৎ করে কেন এই পাঁচ দিনের অধিবেশন ডাকা হল, তা নিয়ে বিরোধী শিবিরে তো বটেই সব মহলেই চর্চা শুরু হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, ‘এক দেশ, এক ভোট’ নিয়ে বিল পাশ করাতে পারে কেন্দ্র। দেশে সব ভোট একসঙ্গে করা যায় কি না, তা খতিয়ে দেখতে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের নেতৃত্বে কমিটি গঠন করেছে কেন্দ্র। তার পর বিষয়টি নিয়ে জল্পনা অন্য মাত্রা পেয়েছে। আবার সরকারের একটি সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি এবং ওবিসি সংক্রান্ত একটি বিল পাশ করানো হতে পারে এই অধিবেশনে। এই আবহে দেশের ‘ইন্ডিয়া’ নাম বদলে ‘ভারত’ করা হওয়ার জল্পনা দেখা দিয়েছে। বিষয়টি সংসদে উঠবে কি না, তা নিয়ে কৌতূহল তৈরি হয়েছে।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই লোকসভা এবং রাজ্যসভার সচিবালয়কে উদ্ধৃত করে আগেই জানিয়েছিল যে, আসন্ন এই অধিবেশনে কোনও জ়িরো আওয়ার থাকছে না। অধিবেশনে বেসরকারি বিলও পাশ করাতে পারবেন না কোনও সাংসদ। অর্থাৎ, নির্ধারিত বিষয় ছাড়া অন্য কোনও বিষয়ে আলোচনার বিশেষ সুযোগ মিলবে না এই অধিবেশনে। কিন্তু বিরোধী দলগুলির বক্তব্য, অধিবেশনের আলোচ্যসূচি সম্পর্কে অন্ধকারে রয়েছে তারা। বৃহস্পতিবারই মোদীকে লেখা চিঠিতে কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গান্ধী জানান, বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে আলোচনা না করে সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডাকা হয়েছে। এর ফলে সংসদে কোন বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা হবে, সে বিষয়ে বিরোধী দলগুলি আঁধারে বলেও জানানো হয়েছে। সনিয়া অধিবেশনে ন’টি বিষয় নিয়ে আলোচনা করার আর্জি জানান। সেগুলির মধ্যে রয়েছে মূল্যবৃদ্ধি, মণিপুর সঙ্কট, এমনকি আদানি বিতর্কও।
সাধারণত সারা বছরে সংসদের তিনটি অধিবেশন হয়। যথা, বাজেট অধিবেশন, বাদল অধিবেশন এবং শীতকালীন অধিবেশন। হঠাৎ এই অধিবেশন ডাকা, নতুন ভবনে অধিবেশন শেষ করা— সব মিলিয়ে নানা মহলেই কৌতূহল তৈরি হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy