রাজ্যসভায় দিগ্বিজয় সিংহ (বাঁ দিকে) জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া বাক-বিনিময়। ছবি: রাজ্যসভা টিভির সৌজন্যে
দীর্ঘ দিন দু’জন একই দলে ছিলেন। কিন্তু সেই দিগ্বিজয় সিংহ এবং জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়াই এখন পরস্পরের বিরোধী শিবিরে। কাকতালীয় ভাবে মধ্যপ্রদেশের দুই রাজ্যসভা সাংসদের বক্তব্যের পর্যায়ক্রম পর পর এসে যাওয়ায় উঠল হাসির রোল। হাসি চাপতে পারলেন না চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নায়ডুও।
বৃহস্পতিবার রাজ্যসভায় কৃষক আন্দোলন এবং তিনটি কৃষি আইন নিয়ে আলোচনা চলছিল। স্পিকারের ঘোষণার পর জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া কৃষি আইনের সমর্থনে বক্তব্য পেশ করেন। কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর প্রথম বার সংসদের অধিবেশনে যোগ দিয়েই কংগ্রেসের বিরুদ্ধে দ্বিচারিতার অভিযোগ আনেন সিন্ধিয়া। বলেন, ২০১৯ সালের নির্বাচনী ইস্তাহারে কৃষিতে সংস্কারের আশ্বাস দিয়েছিল কংগ্রেস। ২০১০-১১ সালে তৎকালীন কৃষিমন্ত্রী শরদ পওয়ার সমস্ত মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখে জানিয়েছিলেন কৃষি ক্ষেত্রে বেসরকারি ক্ষেত্রের প্রবেশ অত্যন্ত জরুরি। তার জন্য এগ্রিকালচারাল প্রোডিউস মার্কেট কমিটি (এপিএমসি)-তে সংশোধনী আনা প্রয়োজন।’’
মোদী সরকারের পাশ করা তিনটি কৃষক আইন প্রত্যাহারের দাবিতে দিল্লিতে আন্দোলন চালাচ্ছেন কৃষকরা। সেই আন্দোলন সমর্থন করেছে কংগ্রেস-সহ অধিকাংশ বিরোধী দল। জ্যোতিরাদিত্যর তোপ, এক সময় যে দল এই আইনের পক্ষেই সওয়াল করত, তারাই এখন সেই আইনের বিরোধিতা করেছে। বয়ান পাল্টানোর এই ‘ট্র্যাডিশন’ বদলানো দরকার বলে উল্লেখ করে জ্যোতিরাদিত্যর কটাক্ষ, ‘‘হেড পড়লে আমি জিতব, আর টেল পড়বে আপনি হারবেন— কংগ্রেসের অবস্থান অনেকটা এই রকম। দিনের পর দিন এটা চলতে পারে না।’’
জ্যোতিরাদিত্যর পরেই চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া পরের বক্তার নাম ঘোষণা করেন— ‘দিগ্বিজয় সিংহ’। সঙ্গে সঙ্গে গোটা রাজ্যসভার কক্ষে হাসির রোল ওঠে। কেন? গত বছর এই দিগ্বিজয় সিংহ, কমল নাথের মতো নেতাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেই কংগ্রেস ছেড়েছিলেন জ্যোতিরাদিত্য। সদলবলে বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় মধ্যপ্রদেশে কমল নাথের সরকারই পড়ে যায়। পরে ভোটে জিতে সরকার গঠন করে বিজেপি। সেই একই রাজ্যের এক সময়ের ‘সহকর্মী’ এবং বর্তমান প্রতিপক্ষের পর পর বক্তৃতার ক্রমসূচিতেই এমন হাস্যরোল।
বিষয়টা বুঝতে পেরে ওই হাস্যরসে যোগ দেন চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়াও। ঘোষণা করেন, ‘‘আমি কিন্তু কিছু পরিবর্তন করিনি। তালিকায় যাঁর নাম এসেছে, আমি তাঁর নামই বলেছি।’’
তবে দিগ্বিজয়ও জ্যোতিরাদিত্যকে পাল্টা কটাক্ষ করতে ছাড়েননি। দীর্ঘদিন কংগ্রেসের সঙ্গে থাকার পর বিজেপিতে যাওয়া নিয়ে আক্রমণ করেন। জ্যোতিরাদিত্য সেই সময় উঠে দাঁড়িয়ে দিগ্বিজয়ের উদ্দেশে বলেন, ‘‘আপনার এই ‘আশীর্বাদ’-এর জন্য ধন্যবাদ।’’ সুযোগ বুঝে মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দিগ্বিজয় সিংহও খোঁচা দিতে ছাড়েননি। বলেন, ‘‘এর পরেও আপনি যে দলে যাবেন, আমার আশীর্বাদ সব সময় আপনার সঙ্গে থাকবে।’’ আরও এক দফা হাসির রোল ওঠে রাজ্যসভায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy