ফাইল ছবি
নির্বাচনের আগে রাজনীতির পিচের গতিপ্রকৃতি এমনিতেই থাকে জটিল। সেই পিচে আবার ধর্ম অবমাননার মতো বিষাক্ত গুগলি ছুটে এলে, সব রাজনীতিকই একটু সমঝে খেলেন। পঞ্জাবে আর সব রাজনীতিক সেই বল রক্ষণাত্মক ভাবে খেললেও, ব্যতিক্রম প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি নভজ্যোৎ সিংহ সিধু। ক্রিকেটের মাঠে সিধু যে মেজাজে খেলতেন, রাজনীতির ময়দানেও তাই। এমন জটিল গুগলিকেও চেষ্টা করেছেন তুলে মেরে বাউন্ডারির বাইরে ফেলে দিতে। সাফ বলে দিয়েছেন, “রাজ্যের একটি ধর্মীয় সম্প্রদায়কে উত্তেজিত করার জন্যই পর পর দু’দিন ধর্ম অবমাননার চেষ্টা হল। পঞ্জাবিদের মধ্যে বিভেদ তৈরি করতে মৌলবাদী শক্তি এই চক্রান্ত করছে।” তার পরেই তাঁর অমোঘ দাওয়াই— যারা ধর্ম অবমাননার চেষ্টা করবে, প্রকাশ্যে ফাঁসি দেওয়া উচিত তাদের।
শনিবার অমৃতসরের স্বর্ণমন্দিরে শিখদের ধর্মগ্রন্থ গুরু গ্রন্থসাহিবের অবমাননা এবং পরের দিন কপূরথালার একটি গুরুদ্বারে ধর্মীয় ঝান্ডা খোলার চেষ্টা করেছিল দু’জন। তাদের মৃত্যু হয়েছে গণরোষে। মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিংহ চন্নী থেকে শুরু করে শাসক ও বিরোধী দলের বহু নেতাই ধর্ম অবমাননার চেষ্টার নিন্দা করেছেন, কিন্তু দুষ্কৃতীকে পিটিয়ে মারার বিষয়টি নিয়ে কেউই মুখ খোলেননি। এমনকি সিধুও নন।
গত বিধানসভা ভোটের আগেও পর পর এই ধরনের কয়েকটি ঘটনা উত্তেজনা ছড়িয়েছিল। আগের অমরেন্দ্র সিংহ সরকারের বিরুদ্ধে সিধুর অন্যতম প্রধান অভিযোগ ছিল, ধর্ম অবমাননার ঘটনাগুলিকে তিনি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করে চক্রান্তকারীদের খুঁজে বার করার চেষ্টা করেননি। এ বারও তিনি সরাসরি নাম না-করে দাবি করেছেন, ক্যাপ্টেন অমরেন্দ্রের দল ও বিজেপির জোটই এই দুষ্কর্মের পিছনে রয়েছে। পঞ্জাবকে অশান্ত করা এদের লক্ষ্য। রাজ্যের মানুষকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে সিধু বলেছেন, “গুরু নানক পাঞ্জাবিদের বিশ্বভ্রাতৃত্বের শিক্ষা দিয়েছেন। তাঁদের বিভক্ত করা সহজ হবে না।”
যে দু’জনের বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার চেষ্টার অভিযোগ নিয়ে রাজ্য উত্তাল, জনতা যাদের পিটিয়ে মেরে ফেলেছে— পুলিশ এখনও তাদের পরিচয় বার করতে পারেনি। পঞ্জাবের সংবাদমাধ্যমে এ দিন দু’জনের ছবি প্রকাশ করা হলেও কেউ তাদের চেনে বলে এগিয়ে আসেনি। কপূরথালায় নিহত ‘দুষ্কৃতী’ অন্য রাজ্য থেকে আসা পরিযায়ী শ্রমিক হতে পারে বলে ধারণা পুলিশের। ময়না-তদন্তে তার দেহে ৮টি গভীর ক্ষত মিলেছে, যেগুলি তরোয়ালের কোপে হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। কিন্তু পুলিশ তার পরেও হত্যার অভিযোগে আলাদা কোনও এফআইআর করেনি। গুরুদ্বারের যে গ্রন্থি প্রথম তাকে ঝান্ডা খুলতে দেখে তাড়া করেছিলেন, রবিবার তাঁকে আটকে রেখে জেরা করেছে পুলিশ। তাতে তাদের ধারণা হয়েছে— ধর্ম অবমাননা নয়, হয়তো চুরি করতে ঢুকছিল ওই যুবক। কিন্তু দু’জনকেই পিটিয়ে মেরে ফেলাই তাদের প্রকৃত উদ্দেশ্য ছিল কি না, তা কোনও দিনই জানা যাবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy