Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Seema Haider

নেপাল হয়ে ভারতে ঢোকার সময় সীমার নাম হয়েছিল প্রীতি, আধার কার্ড নিয়েও আঁধারে রাখেন বাস সংস্থাকে

পাকিস্তান থেকে নেপালের পোখরা হয়ে ভারতে অনুপ্রবেশের সময় ভুয়ো নাম এবং পরিচয়পত্র ব্যবহার করেছিলেন ‘পাক বধূ’ সীমা হায়দার। ভারতে প্রবেশের সময় তিনি নিজেকে ‘প্রীতি’ বলে পরিচয় দেন।

Pakistani Woman Seema Haider uses fake name and identity while entering India, says Bus manager from Nepal

‘পাক বধূ’ সীমা হায়দার। —ফাইল চিত্র ।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
নয়ডা শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০২৩ ০৮:৪৩
Share: Save:

পাকিস্তান থেকে নেপালের পোখরা হয়ে ভারতে অনুপ্রবেশের সময় ভুয়ো নাম এবং পরিচয়পত্র ব্যবহার করেছিলেন ‘পাক বধূ’ সীমা হায়দার। ভারতে প্রবেশের সময় তিনি নিজেকে ‘প্রীতি’ বলে পরিচয় দেন। পরিচয়পত্র হিসাবে একটি আধার কার্ডও নাকি তাঁর কাছে ছিল। বৃহস্পতিবার সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে-কে এমনটাই জানিয়েছেন পোখরা থেকে সীমা যে বাসে চেপে অবৈধ ভাবে ভারতে প্রবেশ করেছিলেন, সেই বাস সংস্থার ম্যানেজার প্রসন্ন গৌতম ।

প্রসন্নের দাবি, সীমা আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে দাবি করেছিলেন যে তিনি ভারতীয় নাগরিক এবং তাঁর নাম ‘প্রীতি’। পরিচয়পত্রের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি আধার কার্ডের উল্লেখ করেন। প্রসন্ন জানিয়েছেন, ভারতে প্রবেশের জন্য সীমা বাসের চারটি টিকিট কেটেছিলেন। কিন্তু টিকিট কাটার পুরো টাকা না থাকায় সীমা এক ‘বন্ধু’কে ফোন করে টাকা চেয়ে পাঠান। এর পর সীমার ভারতীয় ‘বন্ধু’ অনলাইনের মাধ্যমে বাসের টিকিটের টাকা পাঠিয়ে দেন সংস্থার নম্বরে। পোখরা থেকে নয়ডা যাওয়ার জন্য সীমা ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় সাড়ে সাত হাজার টাকা দিয়ে টিকিট কিনেছিলেন বলে প্রসন্ন জানিয়েছেন।

অন্য দিকে, তদন্তকারী সংস্থার কাছে সীমা এবং সচিন স্বীকার করে নিয়েছেন যে, চার সন্তানকে নিয়ে ১৩ মে নেপাল থেকে ভারতে প্রবেশ করেন সীমা।

মার্চ মাসেও সীমা এবং তাঁর ভারতীয় প্রেমিক সচিন মিনা ভুয়ো পরিচয়পত্র দিয়ে কাঠমান্ডুর একটি হোটেলে ছিলেন। নাম ভাঁড়িয়ে প্রায় এক সপ্তাহ তাঁরা ওই হোটেলে ছিলেন। এমনটাই দাবি করেছেন ওই হোটেলের মালিক।

ওই হোটেল মালিক গণেশের দাবি, মার্চ মাসে তাঁর হোটেলে এসেছিলেন সীমা এবং সচিন। হোটেল ভাড়া করার সময় সচিন নিজের নাম ‘শিবাংশ’ বলে জানিয়েছিলেন। সংবাদ সংস্থা এএনআইকে গণেশ বলেন, ‘‘সচিন এবং সীমা মার্চ মাসে ৭-৮ দিন আমাদের হোটেলের ২০৪ নম্বর কামরায় ছিলেন। বেশিরভাগ সময় তাঁরা হোটেলের ঘরেই থাকতেন। মাঝে মাঝে সন্ধ্যার দিকে বাইরে গিয়ে আবার রাত ১০টার মধ্যে হোটেল ঢুকে যেতেন।’’

প্রসঙ্গত, সীমার ভারতে অনুপ্রবেশ দিয়ে ক্রমশ ঘনীভূত হচ্ছে রহস্য। জট ছাড়াতে তদন্তে নেমেছে উত্তরপ্রদেশ এটিএস এবং ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলি। সীমা আসলে কে? ভারতীয় প্রেমিকের টানে সীমান্ত পার করে আসা সাধারণ পাক বধূ, না পাকিস্তানি গুপ্তচর, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। তার মধ্যেই প্রকাশ্যে আসছে একের পর এক তথ্য।

সীমা এবং সচিনের দাবি, ২০১৯ সালে অনলাইন গেম পাবজি খেলার সময় তাঁদের পরিচয় হয়। সেখান থেকে প্রেম। ২২ বছরের যুবকের প্রেমে পড়ে প্রায় ১,৩০০ কিলোমিটার দূর থেকে ছুটে আসেন ৩০ বছরের সীমা। সঙ্গে তাঁর চার সন্তানকেও নিয়ে আসেন তিনি। ভিসা ছাড়া নেপাল হয়ে বেআইনি ভাবে ভারতে প্রবেশ করার অভিযোগে ৪ জুলাই গ্রেফতার হন সীমা। তাঁকে আশ্রয় দিয়ে গ্রেফতার হন সচিন এবং তাঁর বাবা নেত্রপাল। পরে জামিনে ছাড়াও পান তাঁরা।

জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর সীমা দাবি করেন, তিনি হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘সীমা নামটি হিন্দু এবং মুসলমান যে কোনও ধর্মের মেয়েরই হয়। তাই আমি এখন থেকে শুধুই সীমা। অথবা, নিজেকে সীমা সচিন বলে পরিচয় দেব। আমার সন্তানদেরও নাম পরিবর্তন করে রাজ, প্রিয়ঙ্কা, পরি এবং মুন্নি রেখেছি।’’ তিনি এখন প্রতি দিন ঈশ্বরের পুজো করার পর হাত জোড় করে সকলকে নমস্কার করেন এবং বড়দের পা ছুঁয়ে প্রণাম করেন বলেও দাবি করেন তিনি। তাঁর দাবি, তিনি নিরামিষ খাবার খাওয়াও শুরু করেছেন।

গত মঙ্গলবার রাতে সীমা, তাঁর প্রেমিক সচিন এবং সচিনের বাবাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে উত্তরপ্রদেশ এটিএসের দল। রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে দলটি সবাইকে রাবুপুরা থানায় নিয়ে যায়। সীমার ভারতে প্রবেশের খবর প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই তাঁকে নিয়ে তদন্ত চালাচ্ছেন এটিএস আধিকারিকেরা। তার মধ্যেই উঠে এল ভুয়ো নাম এবং পরিচয়পত্র দিয়ে সীমার ভারতে প্রবেশের তথ্য।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy