টোল প্লাজ়াতে বাস দাঁড়াতেই যাত্রীদের নামিয়ে কোভিড পরীক্ষা। শনিবার গুরুগ্রামে। পিটিআই।
প্রস্তুতি তুঙ্গে। মনে করা হচ্ছে, জানুয়ারি থেকেই দেশে শুরু হয়ে যেতে পারে করোনার টিকাকরণ কর্মসূচি। সূত্রের মতে, ভারতে জরুরি ভিত্তিতে অনুমোদন পাওয়ার দৌড়ে এগিয়ে রয়েছে অক্সফোর্ডের তৈরি টিকা ‘কোভিশিল্ড’, যা এ দেশে উৎপাদন ও পরীক্ষার দায়িত্বে রয়েছে সিরাম ইনস্টিটিউট। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ব্রিটেনের দিকে তাকিয়ে ভারত।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি, আগামী সপ্তাহেই অক্সফোর্ডের তৈরি টিকাকে সবুজ সঙ্কেত দিতে পারে ব্রিটেন। তার পরেই নিজেদের সিদ্ধান্ত জানাবে ভারতের ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা। ব্রিটেনের নিয়ন্ত্রক সংস্থা সে দেশে অক্সফোর্ডের তৈরি টিকাকে অনুমোদন দেওয়ার পরে ড্রাগস কন্ট্রোলার জেনারেল অব ইন্ডিয়ার কোভিড সম্পর্কিত বিশেষজ্ঞ দল দেশে এবং বিদেশে টিকাটির নিরাপত্তা এবং কার্যকারিতা বিষয়ক সমস্ত তথ্য খতিয়ে দেখে সেটির জরুরি ভিত্তিতে অনুমোদনের দিকে পা বাড়াতে পারে। ভারত বায়োটেকের টিকা কোভ্যাক্সিনের তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষা এখনও শেষ হয়নি। সিরাম ব্রিটেন ও ব্রাজিলে অক্সফোর্ডের টিকার তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষার রিপোর্ট জমা দিয়েছে। ফাইজ়ার এখনও অতিরিক্ত তথ্য জমা দেয়নি। ফলে দৌড়ে এগিয়ে কোভিশিল্ডই।
ব্রিটেন-সহ একাধিক দেশে দেখা দেওয়া করোনাভাইরাসের নতুন স্ট্রেন চিন্তা বাড়ালেও মার্চ থেকে মে মাসের মধ্যে ভারতেই ভাইরাসের এমন নানা মিউটেশন হয়ে গিয়েছে বলে দাবি করেছেন ইনস্টিটিউট অব জেনোমিক্স অ্যান্ড ইন্টেগ্রেটিভ বায়োলজি-র ডিরেক্টর অনুরাগ আগরওয়াল। তাঁর মতে, এমনই এক স্ট্রেনের জেরে সংক্রমণ এক ধাক্কায় অনেকটা বেড়ে গেলেও জুনে তা নিজে থেকেই নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। এই বিশেষজ্ঞ এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, ভারতে ওই সময়ে দেখা দেওয়া স্ট্রেনটির নাম ‘এ-৪’। প্রধানত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া থেকেই তা ছড়িয়েছিল। সংক্রমণ অত্যন্ত দ্রুত গতিতে ছ়ড়িয়ে দেওয়াই ছিল এই স্ট্রেনের বিশেষত্ব। দিল্লি, হায়দরাবাদ এবং কর্নাটকের কোভিড রোগীদের নমুনায় এর সন্ধান মেলে বলে দাবি তাঁর।
নিজে থেকেই কী করে হারিয়ে গেল এই ভাইরাস? এর উত্তরে আগরওয়াল জানান, বহু বার মিউটেশনের জেরে খুব একটা শক্তিশালী ছিল না এই স্ট্রেন। তবে ‘এ-৪’ শক্তি হারালেও ব্রিটেনে দেখা দেওয়া নয়া স্ট্রেন ৭০% দ্রুত সংক্রমণ ছড়ানোর ক্ষমতা রাখে বলেই মত বিজ্ঞানীদের। এই পরিপ্রেক্ষিতে আইসিএমআর-এ জাতীয় করোনা টাস্ক ফোর্সের একটি বৈঠক ডাকা হয়েছিল এ দিন। সার্স-কোভ-২ ভাইরাসের বদলাতে থাকা চরিত্রের প্রমাণের ভিত্তিতে পরীক্ষা, চিকিৎসা এবং পর্যবেক্ষণের পদ্ধতি পরিবর্তন করা নিয়ে সেখানে আলোচনা হয়েছে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে।
২৫ নভেম্বর থেকে ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্রিটেন থেকে দিল্লিতে আসা কমপক্ষে ১৩ হাজার বিমানযাত্রীর মধ্যে অন্তত ২০ জনের করোনা ধরা পড়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। বিমানবন্দরেই এঁদের মধ্যে ১১ জনের করোনা পজ়িটিভ ধরা পড়ে। তবে কারও শরীরে নয়া স্ট্রেন পাওয়ার খবর এখনও নেই। দিল্লির পাশাপাশি ত্রিপুরা, অসম, ছত্তীসগঢ়, কেরল, কর্নাটকের মতো নানা রাজ্যে ব্রিটেন-ফেরতদের মধ্যে করোনা সংক্রমণের খবর মিলছে। ভুবনেশ্বরে চার বছরের এক শিশুর সংক্রমণ ধরা পড়ার পরে তার বাবা-মায়েরও নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। কেরলে সম্প্রতি ব্রিটেন থেকে ফেরা আট জন সংক্রমিত হয়েছেন। কর্নাটকে এই সংখ্যা ১৪। এঁদের নমুনা পুণের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজিতে পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: দিল্লিতে কেউ কেউ আমাকে গণতন্ত্র শেখাচ্ছেন, রাহুলকে ঘুরিয়ে তোপ মোদীর
গত ছ’মাসেরও বেশি সময়ে পেরিয়ে এই প্রথম বার করোনায় দৈনিক মৃত্যুর হার তিনশোর নীচে নেমে এল শনিবার। গত কালের তুলনায় দৈনিক সংক্রমণের হারও ৩.৪% কম। গোটা দেশের মতোই দিল্লির দৈনিক মৃতের হারে উল্লেখযোগ্য হ্রাস নজরে এসেছে। বড়দিনে সে রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে ৩০ জনের, যা গত চার মাসের নিরিখে সব চেয়ে কম। রাজ্যে সংক্রমিতের হারও (০.৮৮%) গত আট মাসের তুলনায় সবচেয়ে কম ছিল শুক্রবার। মুম্বইয়ের ধারাভি বস্তি এলাকাতেও এপ্রিলের পর থেকে শুক্রবার প্রথম নতুন করে কোনও সংক্রমিতের খবর মেলেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy