Advertisement
২০ নভেম্বর ২০২৪
Tripura

রফার পথে নয়া মোড়, মীমাংসার খোঁজে ইয়েচুরি

গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং ‘ফ্যাসিবাদী’ শাসনের অবসানের ডাক দিয়ে বিজেপি-বিরোধী সব শক্তিতে একজোট করতে আসরে নেমেছে ত্রিপুরার সিপিএম ও কংগ্রেস।

ত্রিপুরায় সব নাগরিকের সুষ্ঠু ভোটের দাবিতে মিছিলে সিপিএম, কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলের নেতারা।

ত্রিপুরায় সব নাগরিকের সুষ্ঠু ভোটের দাবিতে মিছিলে সিপিএম, কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলের নেতারা। নিজস্ব চিত্র।

সন্দীপন চক্রবর্তী
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০২৩ ০৭:৫৯
Share: Save:

বিধানসভা ভোটের মুখে নতুন মোড় নিল ত্রিপুরায় বিরোধী রাজনীতির সমীকরণ। তার প্রভাব এসে পড়ল বিরোধী শিবিরের আসন-রফার আলোচনাতেও।

গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং ‘ফ্যাসিবাদী’ শাসনের অবসানের ডাক দিয়ে বিজেপি-বিরোধী সব শক্তিতে একজোট করতে আসরে নেমেছে ত্রিপুরার সিপিএম ও কংগ্রেস। নিজেদের মধ্যে আসন সমঝোতার আলোচনার পাশাপাশি কথা চলছে প্রদ্যোৎ কিশোর মানিক্যের দল তিপ্রা মথা-র সঙ্গেও। কিন্তু এরই মধ্যে গ্রেটার তিপ্রাল্যান্ডের দাবিকে সামনে রেখে আন্দোলনকে তীব্র করার স্বার্থে হাত মিলিয়ছে তিপ্রা মথা এবং আইপিএফটি। রাজ্য সরকারের শরিক আইপিএফটি বিজেপির জোটসঙ্গী। বিজেপিকে বিচ্ছিন্ন করার লক্ষ্যে এবং জনজাতি এলাকায় প্রভাবের সমীকরণ মাথায় রেখে তিপ্রা মথা বা এমনকি, আইপিএফটি-র সঙ্গে সিপিএম কৌশলগত সমঝোতা করলেও তিপ্রাল্যান্ডের দাবিকে সমর্থন করা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। আবার এই কারণে শেষ পর্যন্ত প্রদ্যোতের দল সরে দাঁড়ালে জনজাতি এলাকায় ধাক্কা খেতে হবে সিপিএম ও কংগ্রেসকে। এই প্রেক্ষিতেই বুঝে-শুনে অঙ্ক করতে হচ্ছে বিরোধী শিবিরকে।

ত্রিপুরায় বিধানসভা ভোট আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি। মনোনয়ন-পর্বের জন্য বেশি সময় হাতে নেই। এই পরিস্থিতিতে আজ, সোমবারই আগরতলা যাচ্ছেন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। দলীয় সূত্রের খবর, সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সঙ্গে কংগ্রেস এবং তিপ্রা মথা সংক্রান্ত পরিস্থিতি নিয়ে ইয়েচুরি আলোচনায় বসবেন। বর্তমান বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার আর প্রার্থী হবেন কি না, সেই প্রশ্নেরও ফয়সালা করার চেষ্টা হবে তাঁর উপস্থিতিতে। তার পরে সিপিএমের রাজ্য কমিটি ও বামফ্রন্টের অনুমোদন নিয়ে এক-দু’দিনের মধ্যে প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করা হতে পারে। কত দূর নমনীয় হওয়া তাঁর পক্ষে সম্ভব, তা দ্রুত স্পষ্ট করতে বার্তা দেওয়া হয়েছে প্রদ্যোৎকেও।

জনজাতির সংরক্ষিত আসনগুলির বাইরেও আরও কয়েকটি আসন মথা-র জন্য ছেড়ে রেখে ইতিমধ্যে আলোচনা হয়েছে সিপিএম ও কংগ্রেসের মধ্যে। কিন্তু প্রদ্যোৎ শেষ পর্যন্ত সমঝোতায় না এলে জনজাতি আসনের ক্ষেত্রেও সিদ্ধান্ত নিতে হবে ওই দুই দলকে। মূল লক্ষ্য যখন গ্রেটার তিপ্রাল্যান্ড, তা হলে দু’দল মিশে যাক— এই প্রস্তাব দিয়ে আইপিএফটি-কে চিঠি দিয়েছিলেন প্রদ্যোৎ। আইপিএফটি-র নেতা প্রেম কুমার রিয়াং জানিয়েছেন, তাঁরা এই প্রস্তাবে সহমত। কিন্তু একই সঙ্গে তাঁর বক্তব্য, বিজেপির সঙ্গে তাঁদের জোট থাকবে। প্রদ্যোৎ আবার দাবি করছেন, ‘‘সংবিধানসম্মত ভাবে তিপ্রাল্যান্ডের দাবি নিয়ে আমাদের লড়াই। কিন্তু এর সঙ্গে নির্বাচনী জোটের কোনও সম্পর্ক নেই। যাঁরা আমাদের সমর্থন চান, তাঁদের সকলের সঙ্গেই কথা বলতে আমরা প্রস্তুত।’’ সূত্রের খবর, সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরী তিপ্রাল্যান্ডের প্রশ্ন ফের সামনে এসে পড়ায় প্রদ্যোৎদের জানিয়েছেন, সংবিধানের তফসিল মেনে বৃহত্তর স্বায়ত্তশাসনের দাবি তাঁরা সমর্থন করেন। এই অবস্থানের কথা লিখিত ভাবে জানাতেও তাঁরা তৈরি। কিন্তু তার বেশি নয়।

ত্রিপুরা রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পবিত্র করের বক্তব্য, ‘‘সমঝোতার জন্য বামফ্রন্ট হিসেবে আমাদেরই বেশি ত্যাগ স্বীকার করতে হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের জন্য দরজা খুলে রেখেই আমরা এগোচ্ছি।’’ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বীরজিৎ সিংহ বলছেন, সংখ্যার চেয়েও কোথায় কোথায় তাঁরা লড়বেন, সেই আসন ধরে ধরে কথা চলছে। এরই মধ্যে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে তৃণমূল সাংসদ জহর সরকারের একটি প্রবন্ধ সিপিএমের দৈনিক মুখপত্রে প্রকাশিত হওয়ার ঘটনা রাজনৈতিক শিবিরে গুঞ্জন ফেলেছে। সিপিএম ও তৃণমূল, দু’দলই অবশ্য নিজেদের মধ্যে সমঝোতার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Tripura CPM Congress
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy