প্রতীকী ছবি।
আগামিদিনে ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খুলতে এবং মোবাইল ফোনের সিমকার্ডের জন্য পরিচয় পত্র হিসেবে বাধ্যতামূলক ভাবে আধার কার্ডের প্রয়োজন হবে না। লোকসভায় আজ ধ্বনি ভোটে পাশ হওয়া আধার (সংশোধনী) বিল ২০১৯-এ এই কথা উল্লেখ রয়েছে। বিরোধীদের প্রশ্ন, যে আধার-তথ্য বেসরকারি সংস্থাগুলির কাছে রয়েছে, তা কতটা সুরক্ষিত।
সুপ্রিম কোর্ট আগেই ওই রায় দিয়েছিল। এ বার আধার বিলেও বলা হল, সিম এবং ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলতে আধার আবশ্যিক নয়। এ জন্য জোর খাটাতে পারবে না সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলি। তবে কোনও ব্যক্তি স্বেচ্ছায় আধারকে পরিচয়পত্র হিসেবে জমা দিতেই পারেন ব্যাঙ্ক বা মোবাইল সংস্থার কাছে। বিরোধীদের অভিযোগ, বিলে ‘স্বেচ্ছা’ শব্দটি রেখে মোদীর সরকার ঘুরপথে আধারের ব্যবহার চালু রাখার কৌশল নিল। আগামী সপ্তাহে রাজ্যসভায় ওই বিল পেশের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
বিলটি নিয়ে বিতর্কে বিরোধীরা অভিযোগ করেন, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর মোবাইল সংস্থাগুলি নতুন সংযোগের দেওয়ার সময় বা ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ অ্যাকাউন্ট খোলার ক্ষেত্রে আধারকে পরিচয়পত্র হিসেবে চাইতে পারছেন না। অথচ, শুরুতে আধার বাধ্যতামূলক হওয়ায় দেশের প্রায় ৬৮ কোটি মানুষ ইতিমধ্যেই বিভিন্ন মোবাইল সংস্থার কাছে নিজের আধার জমা দিয়েছেন। ব্যাঙ্কগুলিতে জমা পড়েছে প্রায় ৬৫ কোটি আধার সংক্রান্ত তথ্য।
সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরে মোবাইল সংস্থা ও ব্যাঙ্কের কাছে থাকা ওই আধার-তথ্য বেআইনি হয়ে যায়। তাই বিলে ‘স্বেচ্ছা’য় আধার জমা দেওয়ার শর্তটি রেখে আধার বিলে সংশোধনী আনার কৌশল নেয় কেন্দ্র। আরএসপি-র এন কে প্রেমচন্দ্রনের মতে, ওই শর্তের ফলে অতীতে সিম নিতে ও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলতে যে আধার এ যাবৎ জমা পড়েছে, তা উপভোক্তারা স্বেচ্ছায় দিয়েছেন বলে যুক্তি দিতে পারবে মোবাইল সংস্থা ও ব্যাঙ্কগুলি।
বির্তকের সময় আজ অধিকাংশ বিরোধী সাংসদই বেসরকারি সংস্থার কাছে থাকা আধার-তথ্য চুরি হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র বলেন, ‘‘দেশে তথ্য সুরক্ষা আইন নেই। ফলে আধারের তথ্য চুরি গেলে কী হবে, তার কোনও দিশা নেই সরকারের কাছে।’’ তাঁর মন্তব্য, ‘‘শুরুতে গরিবদের ভর্তুকি দেওয়াই ছিল আধারের লক্ষ্য। কিন্তু সেই উদ্দেশ্য এখন হারিয়ে গিয়েছে।’’ জগন্মোহন রেড্ডির দলের সাংসদ শ্রীধর কোটাগিরি বলেন, ‘‘স্রেফ অন্ধ্রপ্রদেশে কয়েক কোটি মানুষের আধার তথ্য সরকারি ওয়েবসাইটে ফাঁস হয়ে গিয়েছে।’’ তথ্য-সুরক্ষা আইনের পক্ষে সওয়াল করেন বিজেডি সাংসদ পিনাকী মিশ্রও।
বিরোধীদের আশ্বস্ত করে কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি ও যোগাযোগ মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ জানান, খুব দ্রুত ওই আইন আনা হবে। তার কাজ চলছে। নিজের আধার কার্ড দেখিয়ে তিনি বলেন, ‘‘কার্ডে আধার নম্বর ছাড়া নাম, জন্ম তিথি, লিঙ্গ ও ঠিকানা রয়েছে। বায়োমেট্রিকে রয়েছে চোখের মণি ও হাতের ছাপ। কোনও তৃতীয় পক্ষ বায়োমেট্রিক তথ্য পেতে পারেন না। এক মাত্র জাতীয় সুরক্ষার প্রশ্নে ও আদালত নির্দেশ দিলে তবেই বায়োমেট্রিক তথ্য সামনে আসতে পারে।’’ তবে সেই তথ্য সংগ্রহের আগে সচিব পর্যায়ের অনুমতি লাগবে বলে জানান তিনি।
লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরী দাবি করেন, মনমোহন সিংহের আমলে প্রথম আধার সংক্রান্ত কাজ শুরু হয়েছিল। সেই দাবি মেনে রবিশঙ্করের কটাক্ষ, ‘‘কিন্তু জনগণ মনে করে, সঠিক ভাবে কার্ডের ব্যবহার সম্ভব হয়েছে মোদী জমানাতেই। আধারের মাধ্যমে উপভোক্তাদের অ্যাকাউন্টে সরাসরি টাকা পাঠানোয় ১৫৪টি কেন্দ্রীয় পরিকল্পনায় ১.৪০ লক্ষ কোটি টাকা বেঁচেছে সরকারের। বাতিল হয়েছে কয়েক লক্ষ ভুয়ো গ্যাসের সংযোগ ও রেশন কার্ড।’’
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy