অমিত শাহ। ছবি: পিটিআই।
ভারতরত্নের জন্য গত কালই কর্পূরী ঠাকুরের নাম ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের মতে, সামাজিক ন্যায়ের আদর্শ যিনি বাস্তবে রূপায়ণ করে চলেছেন, তিনি নরেন্দ্র মোদী। আজ শাহের দাবি, কর্পূরী ঠাকুরের দেখানো পথে চলেই দেশে ২৩ কোটি গরিব মানুষকে দারিদ্র সীমার উপরে তুলে আনা সম্ভব হয়েছে। যা দেখে কংগ্রেসেরর বক্তব্য, কর্পূরী ঠাকুরকে মরোণত্তর ভারতরত্ন দেওয়া ভাল সিদ্ধান্ত হলেও, এটি লোক দেখানো সিদ্ধান্ত। বিজেপি যদি সত্যিই পিছিয়ে পড়া শ্রেণির উন্নতি চায়, তা হলে কেন জাতিগত সমীক্ষার বিরোধিতা করে চলেছে, প্রশ্ন তুলেছেন রাহুল গান্ধী। জেডিইউ নেতা তথা বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার জানিয়েছেন, কর্পূরী ঠাকুরের মৃত্যুর পর থেকেই তাঁকে ভারতরত্ন দেওয়ার দাবি তুলেছিলেন তাঁরা।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, জাতগণনার দাবি তুলে বিরোধীরা সরব হওয়ায় গো-বলয়ের রাজ্যগুলিতে যে হাওয়া উঠেছে, তার মোকাবিলায় মোদী কর্পূরী ঠাকুরকে ভারতরত্ন দেওয়ার তাস খেলেছেন। দেশের গরিব, পিছিয়ে থাকা, অনগ্রসর শ্রেণির আসল নেতা হিসেবে মোদী নিজেকে তুলে ধরার কৌশল নিয়েছেন। শাহের কথায়, ‘‘গরিব-পিছিয়ে থাকা শ্রেণির প্রতিনিধি কর্পূরী ঠাকুরকে যে সম্মান দেওয়া হচ্ছে, তা সম্ভব হল এক গরিব চা-ওয়ালার ছেলে প্রধানমন্ত্রী পদে থাকায়।’’ বিজেপি শিবির বলছে, নীতীশ-লালুপ্রসাদ নিজেদের কর্পূরী ঠাকুরের উত্তরসূরি বলে দাবি করে থাকেন। কিন্তু শাহের দাবি, আসলে কর্পূরী ঠাকুর নিচু তলার মানুষের জন্য যে কাজ শুরু করেছিলেন সেই কাজ যদি কেউ এগিয়ে নিয়ে থাকেন, তা হলে তা করছেন মোদী। পাশাপাশি বিহারে এ বার ভোটে লড়ার প্রশ্নে এখন পর্যন্ত ‘একলা চলো’ নীতি নিয়ে এগোচ্ছেন মোদী-শাহ জুটি। রাজ্যের প্রায় ত্রিশ শতাংশের মতো অনগ্রসর ও অতি অনগ্রসর শ্রেণির ভোট রয়েছে। রাজনীতিকদের মতে, কর্পূরী ঠাকুরকে ভারতরত্ন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে রাজ্যের ত্রিশ শতাংশ জনসংখ্যার আস্থা জেতার কৌশল নিলেন মোদীরা।
কর্পূরী ঠাকুরকে ভারতরত্ন দেওয়ার সিদ্ধান্তকে ‘লোক দেখানো’ আখ্যা দিয়ে রাহুল বলেন, ‘‘২০১১ সালের সামাজিক ও আর্থিক জাতীয় জনগণনা গোপন করা ও জাতীয় জনগণনা সম্পর্কে উদাসীন মনোভাব দেখানো আসলে সামাজিক ন্যায় আন্দোলনকেই দুর্বল করে দেয়।’’ নীতীশ কুমার বলেছেন, ‘‘ভারতরত্ন দিয়ে কর্পূরীকে মনে করার সম্পূর্ণ কৃতিত্ব নিতে চাইছেন মোদী। অথচ, জেডিইউ বহু দিন আগে থেকেই এই দাবি করে আসছে।’’ একই দাবি আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদবেরও।
সব মিলিয়ে বিরোধী দলগুলি জাতিগত সমীক্ষার দাবিতে নতুন করে সুর চড়াতে শুরু করেছে। তা হলে ওবিসি সমাজের সুবিধার সম্ভবনা রয়েছে। জনসংখ্যায় ওবিসিদের হার ২৭ শতাংশের বেশি হলে, সেই অনুপাতে সংরক্ষণের দাবি উঠবে। ফলে উচ্চবর্ণ ও ওবিসিদের মধ্যে বর্তমানে যে ভারসাম্য রয়েছে, তা নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা। লোকসভা ভোটের আগে সেই ঝুঁকি নিতে চায় না বিজেপি। তাই কর্পূরী ঠাকুরের দেখানো পথেই মোদী চলছেন বলে প্রচার করে অনগ্রসর ও অতি অনগ্রসর শ্রেণির ভোট নিশ্চিত করছে পদ্ম শিবির।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy