ফাইল চিত্র।
পশ্চিমবঙ্গে বিরাট জয়ের পরে এ বার জাতীয় রাজনীতিতে বিজেপি তথা নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রধান মশালটি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে চলে এল বলে মনে করছে রাজনৈতিক শিবির। আজ গোটা দেশের বিভিন্ন আঞ্চলিক দলের শীর্ষ নেতারা ফলাফল স্পষ্ট হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বার্তা পাঠিয়েছেন তৃণমূল নেত্রীকে। তাঁদের উচ্ছ্বাস. অভিনন্দন এবং বিবৃতি থেকে স্পষ্ট, চব্বিশে লোকসভা নির্বাচনের লড়াইটা কার্যত আজ থেকেই শুরু হয়ে গেল তৃণমূল নেত্রীকে সামনে রেখে।
আজ সমাজবাদী পার্টি থেকে শিবসেনা, আপ থেকে ন্যাশনাল কনফারেন্স— সমস্ত শীর্ষ বিরোধী নেতারাই মোদী-অমিত শাহের সঙ্গে মমতার এই লড়াকু ভূমিকার অকুন্ঠ প্রশংসা করেছেন তাঁদের টুইট ও বিবৃতিতে। এনসিপি প্রধান শরদ পওয়ার টুইট করে বলেছেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অভিনন্দন তাঁর এই দুর্দান্ত জয়ের জন্য। আসুন, মানুষের কল্যাণের জন্য আমরা একত্রে কাজ করতে থাকি এবং সবাই মিলে এই অতিমারির মোকাবিলা করি।” আগামী বছরেই উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচন। পশ্চিমবঙ্গের পরে এই বিধানসভা ভোটটিও চব্বিশের লোকসভা ভোটের প্রশ্নে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবেই মনে করা হচ্ছে। রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা এসপি নেতা অখিলেশ সিংহ যাদবের বার্তা, “বাংলার সচেতন মানুষ, লড়়াকু নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলের অক্লান্ত পরিশ্রম করা নেতা ও কর্মীদের জানাই আন্তরিক অভিনন্দন। তাঁরা বিজেপির ঘৃণার রাজনীতিকে বাংলায় হারিয়েছেন। বিজেপি যে ভাবে অপমানজনক ঠাট্টার সুরে ‘দিদি ও দিদি’ বলে গিয়েছে, আজকের ফল তার মুখের মতো জবাব।” ‘হ্যাশট্যাগ দিদি জিও দিদি’ তিনি জুড়েছেন তাঁর এই টুইটের সঙ্গে। তাঁরই সহনেতা কিরণময় নন্দ তো খোলাখুলিই জানালেন, ২০২৪ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়়তে প্রস্তুত তাঁর দল। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে আজ এই জয়ের দিনই দেশবাসীকে বিনামূল্যে কোভিড প্রতিষেধক দেওয়ার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, শরদ পওয়ার, সীতারাম ইয়েচুরি, উদ্ধব ঠাকরে, সনিয়া গাঁধী-সহ মোট তেরো জন বিরোধী নেতার একটি যৌথ বিবৃতি প্রকাশ হয়। উল্লেখ্য, এই দাবি সর্বপ্রথম তুলেছিলেন তৃণমূল নেত্রীই। আজও সাংবাদিক সম্মেলনে সেই দাবি জানিয়েছেন তিনি। রাজনৈতিক সূত্রের খবর, যদিও সনিয়া গাঁধীও রয়েছেন, কিন্তু বিষয়টিকে কেন্দ্র করে বিরোধী জোটে অগ্রণী ভূমিকা নিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই দেখা যাবে।
বিরোধী শিবিরের অধিকাংশ নেতার মতে, বাংলার এই রায় বিজেপির ‘এক রাষ্ট্র এক দল’ অথবা হিন্দুরাষ্ট্র গঠন সংক্রান্ত প্রচারের বিরুদ্ধে একটি জেহাদ। তৃণমূল নেতা সুখেন্দুশেখর রায়ের কথায়, “এ দিনের এই ফলাফল আঞ্চলিক আশার জয়। বিজেপির দিল্লি-কেন্দ্রিকতা এবং গোটা দেশকে দিল্লির বশংবদ করে তোলার বিরুদ্ধে বাংলার মানুষ ভোট দিয়েছেন। গোটা দেশের ক্ষমতাকে দিল্লির করিডরে কুক্ষিগত করার প্রয়াসের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছেন।” রাজনৈতিক সূত্রের মতে, শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গই নয়, কেরল বা তামিলনাড়ুর ভোটেও ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণের বিরুদ্ধে, আঞ্চলিক শক্তির বিকাশের পক্ষেই ফলাফল দেখা গিয়েছে।
আজ কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী তামিলনাড়ুতে জয়ের জন্য স্ট্যালিনকে অভিনন্দন জানালেও মমতার জয় নিয়ে কোনও বাক্যব্যয় করেননি। পশ্চিমবঙ্গের কংগ্রেসের ব্যর্থতা নিয়েও কিছু বলতে শোনা যায়নি তাঁকে। তবে দলের মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা মমতা এবং বাংলার মানুষকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, “বিজেপি-র টাকা এবং পেশীশক্তি এবং বিভেদকামী রাজনীতির বিরুদ্ধে লড়়াইটা ছিল। রাজ্যের মানুষ ঘৃণা এবং বিভেদের বদলে শান্তি এবং সৌভ্রাতৃত্বকেই বেছে নিয়েছেন।”
শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরের কথায়, ‘‘বাংলার বাঘিনি একাই লড়়ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, অন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা তাঁকে হারাতে পশ্চিমবঙ্গে গিয়েছিলেন। সব শক্তিকে হারিয়ে তিনি জয়ী হয়েছেন।’’ তৃণমূল নেত্রীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন আরজেডি প্রধান লালুপ্রসাদ ও বিএসপি নেত্রী মায়াবতীও।
তৃণমূল নেত্রীর পাশে দাঁড়িয়েছে কাশ্মীর। পিডিপি প্রেসিডেন্ট মেহবুবা মুফতির টুইট, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলের কর্তাদের অভিনন্দন এই জয়ের জন্য। বিভেদকামী এবং ধ্বংসকামী শক্তিকে হারানোর জন্য পশ্চিমবঙ্গের মানুষকে কুর্ণিশ।” এনসি-র প্রবীণ নেতা ওমর আবদুল্লা বলেছেন, “মমতাদিদিকে অভিনন্দন। বিজেপি এবং পক্ষপাতদুষ্ট নির্বাচন কমিশন, রান্নাঘরের বেসিন-সহ প্রায় সব কিছুই আপনার দিকে ছুড়েছিল! আপনি রয়ে গিয়েছেন। আগামী ৫ বছরের জন্য শুভ কামনা রইল।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy