Advertisement
২০ নভেম্বর ২০২৪
G20 Summit 2023

রুপোর বাসন নৈশভোজে, গুঁড়িয়ে গেল গরিবের ঘর

শুক্রবারই জি২০ সম্মেলনের জন্য রাষ্ট্রনেতারা দিল্লিতে পৌঁছে গিয়েছেন। তাঁদের অভ্যর্থনা চলছে। গোটা দিল্লি লেজ়ার আলো থেকে জলের ফোয়ারা, নানা রকম মূর্তি থেকে ফুলের টবে সাজিয়ে তোলা হয়েছে।

ঝুপড়ি-বস্তি ঢেকে দেওয়া হয়েছে কাপড় দিয়ে।

ঝুপড়ি-বস্তি ঢেকে দেওয়া হয়েছে কাপড় দিয়ে। ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৮:০৯
Share: Save:

দু’দিনের জি২০ সম্মেলন। তার জন্য দিল্লির সৌন্দর্যায়নে খরচ হচ্ছে প্রায় ৪০০০ কোটি টাকা। কিন্তু সেই সৌন্দর্যায়নের নামে দিল্লির হাজার হাজার গরিব মানুষকে ঘরছাড়া হতে হয়েছে বলে বিরোধী শিবির অভিযোগ তুলেছে।

শুক্রবারই জি২০ সম্মেলনের জন্য রাষ্ট্রনেতারা দিল্লিতে পৌঁছে গিয়েছেন। তাঁদের অভ্যর্থনা চলছে। গোটা দিল্লি লেজ়ার আলো থেকে জলের ফোয়ারা, নানা রকম মূর্তি থেকে ফুলের টবে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। উল্টো দিকে অতিথি রাষ্ট্রনেতাদের চোখ থেকে আড়াল করতে জুগ্গি-ঝুপড়ি বা বস্তির মলিন চেহারা সবুজ চাদরে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। কোথাও ঝুপড়ি, বস্তি ভেঙে দিয়ে গরিব মানুষকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। এমনকি ফুটপাথবাসীদের জন্য শীত ও বর্ষায় মাথা গোঁজার যে সব ‘রেন বসেরা’ তৈরি করা হয়েছিল, তা-ও ভেঙে দেওয়া হয়েছে।

আজ কংগ্রেস তা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে কটাক্ষ করে বলেছে, “রাজার গরিব মানুষ পছন্দ নয়। তাঁর বড়লোকি কাজ-কারবার, দামি কাপড়, দামি জুতো, বিলাসবহুল গাড়ির শখ। বড়লোক বন্ধুদের সঙ্গই তাঁর একমাত্র পছন্দ।” জি২০ সম্মেলনে রাষ্ট্রপতির নৈশভোজে সোনা-রুপোর থালাবাসনে খাওয়াদাওয়ার বন্দোবস্ত হচ্ছে। কংগ্রেস এ নিয়েও প্রধানমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে একে ‘রাজাবাদশাদের শখ’ বলে কটাক্ষ করেছে।

এই পাত্রেই খাদ্য পরিবেশন করা হবে সকল অতিথিদের।

এই পাত্রেই খাদ্য পরিবেশন করা হবে সকল অতিথিদের। ছবি: পিটিআই।

সরকারি হিসেবে, চলতি বছরের ১ এপ্রিল থেকে চার মাসে দিল্লি জুড়ে ৪৫টি উচ্ছেদ অভিযান চলেছে। সংসদে নগরোন্নয়ন মন্ত্রক জানিয়েছিল, এই সব উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে ২৩০ একর সরকারি জমি খালি করা হয়েছে। গরিব মানুষের প্রশ্ন, তাঁরা কোথায় যাবেন? সরকারের ঝুপড়ি-বস্তি পছন্দ না হলে কাপড় দিয়ে ঢেকে দিতে পারত। ঘর ভাঙার কী দরকার ছিল? দিল্লির বস্তি সুরক্ষা মঞ্চের কর্মীদের অভিযোগ, ঝুপড়িবাসী হলেও সকলেরই ভোটার কার্ড, আধার কার্ড রয়েছে। কিন্তু তাঁদের বেআইনি জবরদখলকারী বলে তাড়ানো হচ্ছে। ২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী, দিল্লির দু’কোটি মানুষের মধ্যে প্রায় ৪৭ হাজার মানুষ গৃহহীন। বাস্তবে সংখ্যাটা দেড় লক্ষের কাছাকাছি। তাঁদের জন্য অস্থায়ী মাথা গোঁজার ঠাঁইও ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এঁরা কোথায় যাবেন?

আজ কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র জয়রাম রমেশের অভিযোগ, ভারত জি২০-র একমাত্র দেশ, যেখানে দশ বছর অন্তর হওয়া জনগণনার কাজ হয়নি। ২০২১-এ জনগণনা হওয়ার কথা ছিল। মোদী সরকারের এই ঐতিহাসিক ব্যর্থতার জন্য ১৪ কোটি মানুষ খাদ্য সুরক্ষা ব্যবস্থার বাইরে রয়েছেন। এখনও ২০১১-র জনগণনার হিসেব অনুযায়ী ৮১ কোটি মানুষই খাদ্য সুরক্ষায় রেশন পাচ্ছেন। আর্থ-সামাজিক জাতগণনা করতেও সরকার রাজি নয়। ২০১৭-১৮-র জাতীয় নমুনা সমীক্ষার রিপোর্টও ধামাচাপা দিয়ে রেখেছে। সেই রিপোর্ট ফাঁস হয়ে যাওয়ায় জানা গিয়েছিল, মোদী জমানায় বেকারত্বের হার ৪৫ বছরের রেকর্ড ভেঙেছে। জাতীয় পরিবার স্বাস্থ্য সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, সরকার দাবি করলেও প্রকাশ্যে শৌচ বন্ধ করা যায়নি। অস্বস্তিতে পড়ে মোদী সরকার সমীক্ষার ভারপ্রাপ্ত সংস্থার অধিকর্তাকে সাসপেন্ড করেছে।

অন্য বিষয়গুলি:

G20 Summit 2023 Narendra Modi BJP Congress
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy