টিকিট কেটে কানপুর মেট্রোয় উঠছেন মাস্কহীন মোদী। ফাইল চিত্র
তিনিই বলেছিলেন, মাস্ক পরার কথা ভুললে চলবে না।
তিনিই ভুলে গেলেন মাস্কের কথা।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কথা কি নরেন্দ্র মোদী নিজেই কানে তুলছেন না? কানপুরে মোদীর সফরের পরে এই প্রশ্ন নিয়ে কানাকানি শুরু হয়েছে।
মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী গিয়েছিলেন কানপুরে। আইআইটি-র সমাবর্তন অনুষ্ঠান। কানপুর মেট্রোর উদ্বোধন। প্রধানমন্ত্রীর পাশে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। মেট্রো সফরে মোদীর আর এক পাশে ছিলেন কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন মন্ত্রী হরদীপ সিংহ পুরী। দু’জনের মুখেই মাস্ক। ব্যতিক্রম খোদ প্রধানমন্ত্রী। কংগ্রেস নেতা, ছত্তীসগঢ়ের স্বাস্থ্যমন্ত্রী টি এস সিংহ দেও তা দেখিয়ে বলেছেন, ‘‘মাস্ক পুরোপুরি কাজে লাগাতে হবে। যে ভাবে আশেপাশে ও পিছনে দাঁড়িয়ে থাকা ব্যক্তিরা করছেন।’’ তৃণমূলের ডেরেক ও’ব্রায়েন সেই ছবি দেখিয়ে টুইট করেছেন, ‘মাস্ক আপ ইন্ডিয়া!’
ওমিক্রনের বিপদ নিয়ে বড়দিনে জাতির উদ্দেশে বক্তৃতা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। বলেছিলেন, আতঙ্কিত হওয়ার দরকার নেই। সতর্ক থাকতে হবে। মাস্ক পরার কথা ও নিয়মিত হাত স্যানিটাইজ় করার কথা ভুললে চলবে না। কানপুরে নিজেই সে কথা ভুলে গেলেন কী করে?
টুইটার-ফেসবুকে দিনভর কটাক্ষ চলছে। কেউ কেউ প্রধানমন্ত্রীকে ‘ক্যামেরাজীবী’ বলেছেন। কারণ ছবি উঠবে বলেই তিনি মুখে মাস্ক পরেননি। বড়দিনের বক্তৃতার দু’দিন আগেই কোভিড পরিস্থিতি নিয়ে সরকারের শীর্ষ আমলাদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। বৈঠকের ছবিতে দেখা গিয়েছে, বাকিদের মুখে মাস্ক। প্রধানমন্ত্রীর মুখ খালি।
প্রধানমন্ত্রী টিকিট কেটে ঢুকেছিলেন কানপুর মেট্রোয়। বিজেপি নেতারা তা নিয়ে আবেগে ভেসেছিলেন। মুখপাত্র সম্বিত স্বরাজ বলেছিলেন, ‘সিম্পলিসিটি অ্যাট ইটস বেস্ট!’ সেখানেও প্রধানমন্ত্রীর মুখে মাস্ক ছিল না। কেউ বলছেন, দিল্লি বা অন্য শহরে তো মাস্ক ছাড়া মেট্রোয় ওঠা যায় না। প্রধানমন্ত্রীকে জরিমানা করা হোক। কানপুর আইআইটি-তে পড়ুয়াদের সঙ্গে আলাপচারিতা, তার পরে নানা সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পাওয়া মানুষের সঙ্গে কথাবার্তাতেও প্রধানমন্ত্রীর মুখে মাস্ক ছিল না। নেট-নাগরিকদের মন্তব্য, প্রধানমন্ত্রী তো নিজে মাস্ক না পরে পড়ুয়াদের বিপদে ফেলছেন!
কোভিডের সংক্রমণ বাড়ছে। তবে ভোটমুখী রাজ্যে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি প্রকল্প উদ্বোধন, শিলান্যাস ও জনসভায় কোনও বিরাম নেই। আজ উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেসের ভারপ্রাপ্ত নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা বলেছেন, তিনি দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন। পরিস্থিতির পর্যালোচনা করবেন। হতে পারে আগামী ১৫-২০ দিন জনসভা, দলীয় কর্মসূচি বন্ধ রাখা হল। তবে আগে নির্বাচন কমিশন কী করছে, তা দেখে নেওয়া হবে। তার পরে কংগ্রেস সিদ্ধান্ত নেবে। প্রধানমন্ত্রী অবশ্য থামছেন না। সোমবার তিনি ছিলেন হিমাচলে। মঙ্গলবার কানপুরে। বুধবারে মন্ত্রী পরিষদের বৈঠকের জন্য দিল্লিতে ছিলেন। বৃহস্পতিবার তিনি ভোটমুখী উত্তরাখণ্ডে ২৩টি প্রকল্পের শিলান্যাস, উদ্বোধন করবেন। আগামী সপ্তাহে শুরু হবে পঞ্জাবে প্রচার।
মুখে মাস্ক থাকবে কি!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy