প্রতীকী ছবি।
পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির (পিএসি) বৈঠকে দু’শো বছরের বেশি পুরনো অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরি বোর্ড ভাঙার সরকারি সিদ্ধান্ত নিয়ে বুধবার প্রশ্ন তুললেন বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতারা। সেই সঙ্গে রাজনৈতিক সূত্রের খবর, পূর্ব লাদাখ সীমান্তে যে সেনারা পাহারার দায়িত্বে রয়েছেন, তাঁদের জন্য উপযুক্ত শীতবস্ত্র, ফেস মাস্ক এবং আনুষঙ্গিক উপকরণ জোগানের অপ্রতুলতা নিয়েও প্রশ্ন উঠল।
সূত্রের খবর, বৈঠকে চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ বিপিন রাওয়ত জানিয়েছেন, তাঁদের আশা, বোর্ডের অধীনে থাকা ৪১টি অর্ডন্যান্স কারখানাকে সাতটি নতুন প্রতিরক্ষা সংস্থার আওতায় নিয়ে আসার পর, এখন সেনাদের শীত সরঞ্জাম জোগানের বিষয়টি সহজতর হবে। পাশাপাশি ফেস মাস্ক-এর ক্ষেত্রে ডিআরডিও-র পরিবর্তে বেসরকারি সংস্থার কাছ থেকে সরবরাহের ব্যবস্থা করায় সঙ্কট কাটানো গিয়েছে।
রাজনৈতিক সূত্রে জানা গিয়েছে, কমিটির সদস্য তথা তৃণমূলের রাজ্যসভার মুখ্য আহ্বায়ক সুখেন্দুশেখর রায় বৈঠকে প্রশ্ন তোলেন, কেন্দ্রীয় সরকার তা হলে এটাই মেনে নিচ্ছে যে, সরকারের প্রতিরক্ষা সংস্থাগুলির তুলনায় বেসরকারি সংস্থাই প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত সরঞ্জাম জোগানের ক্ষেত্রে বেশি ভরসাযোগ্য?
এই সূত্র ধরে কমিটির চেয়ারম্যান অধীর চৌধুরী বলেন, কানপুরের অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরি কার্যত অব্যবহৃত পড়ে রয়েছে। অথচ মুখে আত্মনির্ভর ভারতের কথা বলছে সরকার। সূত্রের খবর, বিপিন রাওয়াতের কাছে অধীর জানতে চান, প্রবল ঠান্ডায় প্রহরারত সেনাদের প্রয়োজনীয় উপকরণ জোগানের ক্ষেত্রে ঘাটতির বিষয়ে সরকার যে জবাব দিচ্ছে তাতে কমিটির সদস্যরা সন্তুষ্ট নন। এর আগে সিএজি এই নিয়ে তাদের রিপোর্টে মন্তব্য করেছিল। সিএজি একটি সাংবিধানিক সংস্থা। ফলে এই নিয়ে যত ক্ষণ না সরকার স্পষ্ট জবাব দেবে, তত ক্ষণ প্রশ্ন চালিয়ে যাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন অধীর।
প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রের কর্মীদের অভিযোগ, অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরি বোর্ড ভেঙে সাতটি কর্পোরেট সংস্থা তৈরি হল বেসরকারিকরণের প্রথম ধাপ। সরকারের দাবি, এই সাতটি প্রতিরক্ষা সংস্থাতেই কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে ১০০ শতাংশ মালিকানা থাকবে। কিন্তু কর্মীদের আশঙ্কা, ভবিষ্যতে অন্যান্য রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার মতোই বিলগ্নিকরণ ও বেসরকারিকরণ শুরু হবে। অন্য দিকে সরকারি সূত্রের ব্যাখ্যা, সিএজি রিপোর্ট একাধিক বার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছে, অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরি বোর্ডের কারখানাগুলি সেনাবাহিনীর প্রয়োজন মতো গোলাগুলি ও অন্যান্য সরঞ্জাম জোগান দিতে পারছে না। একাধিক সরকারি বিশেষজ্ঞ কমিটি এ জন্য প্রতিরক্ষা সংস্থাগুলিতে দক্ষতার অভাবকেই দায়ী করেছে।
প্রসঙ্গত গত বছর অগস্ট মাসে পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির কাছে এই বিপিন রাওয়তই জানিয়েছিলেন, পূর্ব লাদাখ সীমান্তে মোতায়েন সেনার জন্য শীতকালের কথা মাথায় রেখে বিদেশ থেকে গরম জামা আমদানি করতে হচ্ছে ভারতকে। তখনও কমিটির বিরোধী নেতাদের প্রশ্ন ছিল, ভারত যদি দেশে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম বানানোর পরিকল্পনা হাতে নিতে পারে, তা হলে সামান্য গরম জামা কেন বানাতে পারবে না?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy