—ফাইল চিত্র।
উত্তরপ্রদেশে ভোটের আগে মন্দির গড়া নিয়ে কোনও আবেগ তৈরি করা সঙ্গত কারণেই এ বার সম্ভব ছিল না বিজেপি নেতৃত্বের পক্ষে।
কিন্তু মন্দিরকে কেন্দ্র করে উন্নয়নের রাস্তা প্রস্তুত করাটাই ছিল যোগী আদিত্যনাথের অন্যতম তুরুপের তাস। অযোধ্যায় রামমন্দির এবং বারাণসীতে কাশী বিশ্বনাথ করিডর তৈরি করে কোভিডের ধাক্কায় ঝিমিয়ে পড়া রাজ্যে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের চাকা কিছুটা হলেও ঘোরাতে পেরেছে যোগী সরকার। রাজনৈতিক শিবিরের মতে, হিন্দুত্বের সঙ্গে কমর্সংস্থান এবং বাণিজ্যের মিশেল এ বার যোগীকে পরপর দু’বার উত্তরপ্রদেশ জয়ের রেকর্ড গড়ার দিকে অনেকটাই
এগিয়ে দিয়েছে।
বিজেপির জয়ের পরে অযোধ্যার নির্মীয়মাণ মন্দির চত্বরে হ্যান্ডলুমের দোকানদার বলরাম কাশ্যপ ফোনে বললেন, “আমি আগেই বলেছিলাম, এ বার যাদবদের হাওয়া ছিল ঠিকই, কিন্তু রামের মায়ায় সব বদলে যাবে! পাঁচশো বছরের বিবাদ মিটেছে। এ বার আর জেতার কোনও সম্ভাবনাই ছিল না অখিলেশের।” মুখে বলছেন বটে ‘রামের মায়া’, কিন্তু ভোটের আগে এখানেই গিয়ে শুনেছি, কোভিড এবং লকডাউনের জেরে এই সব দোকানের মালিক-কর্মচারীরা মাসের পর মাস মাছি তাড়িয়েছেন মন্দির চত্বরে বসে। সংসার চালানো, দোকানের ভাড়া দেওয়াই দায় হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু এখন, প্রত্যেক দিন রোদের মধ্যে কয়েক হাজার মানুষের নগ্নপদ লাইন শুধু মন্দিরের ভিত আর পিলারগুলি দেখার জন্য। আর তাঁদের জন্য তৈরি হয়েছে অসংখ্য অনুসারী দোকানপাট। মোবাইল জমা রাখার জন্যই অজস্র কাউন্টার। জল, খাওয়াদাওয়া, রামায়ণ-মহাভারত-সহ বিভিন্ন বইপত্রের দোকান, অসংখ্য দেবদেবীর মূর্তি, মন্দিরের স্বনিয়োজিত গাইড— গমগম করছে অযোধ্যা। ভোটের ঠিক আগে অযোধ্যায় গিয়েই দেখেছি, হনুমানগড়ি পৌঁছনোর কয়েক কিলোমিটার আগে থেকেই সিগনালে গাড়ি থামলে কাচের উপরে উঁকিঝুঁকি। বাচ্চা থেকে মাঝবয়সি, এমনকি বৃদ্ধ গেরুয়া কুর্তাধারী মুখ। নামতার মতো ‘প্যাকেজ’ আউড়ে যান তাঁরা। নির্মীয়মাণ রামমন্দির দর্শন করিয়ে দেবেন সুলভে, সঙ্গে আরও দু’টি বাড়তি মন্দির দর্শনের রেট জানাবেন। গাড়ি রাখা থেকে মোবাইল জমা নেওয়া, লাইনে আগে ইট পেতে রাখা, সব তাঁদের দায়িত্ব।
একই ঘটনা প্রধানমন্ত্রীর নিজের কেন্দ্র বারাণসীতেও। বিশ্বনাথ করিডর জুড়ে এখন চওড়া রাস্তা, হাইমাস্ট আলো, গোটা চত্বর ভাসছে এলইডি-র বন্যায়। রাস্তার দু’ধারে সারিবদ্ধ দোকান। গোটা দেশের পুণ্যার্থীদের ভিড়ে সর্বদাই সরগরম গোটা বিশ্বনাথ করিডর চত্বর। মোদী প্রথম বার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরেই ওই মন্দির চত্বরের পুনর্নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। গত বছরের ডিসেম্বর মাসে নতুন মন্দির চত্বরের কাজ শেষ হয়। দু’দিক থেকে ঝুঁকে আসা দোকান, ঘিঞ্জি রাস্তা, অলিতে-গলিতে ষাঁড়ের উপস্থিতি, দিনের বেলাতেও সন্ধ্যার আবছায়া, পুরনো অলি-গলি, যা কাশীর অন্যতম পরিচয় ছিল তা এখন অতীত। বদলে গিয়েছে গোটা বিশ্বনাথ মন্দির চত্বর ও সংলগ্ন এলাকা।
রাজনৈতিক শিবির বলছে, মন্দির বার বারই কাজে আসে বিজেপির। তা সে হিন্দুত্বের ঢেউ তুলেই হোক, অথবা বাণিজ্যায়ন করে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy