জ্যোতি।
চোখ খুলতেই ছোট্ট মেয়েটি দেখেছিল সে স্টেশনে পড়ে রয়েছে। কে তার বাবা-মা, কোথায় তার বাড়ি কিছুই মনে ছিল না তার। দিশাহারা হয়ে স্টেশনে ঘুরতে দেখায় এক ভিখারি দম্পতি মেয়েটিকে তাঁদের সঙ্গে নিয়ে যায়। দম্পতির সঙ্গে ছোট্ট মেয়েটিও স্টেশনে ভিক্ষা করত। সেই মেয়েটিই এখন একটি ক্যাফেটেরিয়ার মালিক।
জ্যোতি। বছর উনিশের তরুণী। পটনা শহরে এখন তিনি বেশ পরিচিত একটি মুখ। শৈশবেই বাবা-মা পটনা স্টেশনে ফেলে দিয়ে চলে গিয়েছিলেন জ্যোতিকে। তাঁকে অসহায় হয়ে কাঁদতে দেখে ওই স্টেশনেরই এক ভিখারি দম্পতি জ্যোতিকে নিজেদের কাছে রাখেন। স্টেশন চত্বরে আর পাঁচটা অনাথ শিশুর মতোই বড় হচ্ছিলেন জ্যোতি। কোনও দিন খাওয়া জুটত, কোনও জুটত না। এ ভাবেই দিন কাটছিল তাঁর। কিন্তু জ্যোতি কিছু একটা করার স্বপ্ন দেখা শুরু করেছিল সেই সময় থেকেই।
পড়াশোনার প্রতি তাঁর খুব ঝোঁক ছিল। কিন্তু তাঁর মতো এক জন অনাথ, ভিখারির সেই স্বপ্ন কি পূরণ হবে, সেটা ভেবেই হতাশায় ডুবে যেতেন জ্যোতি। কিন্তু তাঁর এই সাধ পূরণে অনেকেই এগিয়ে আসেন। তাঁর দত্তক মা-বাবাও মেয়ের ইচ্ছা পূরণের চেষ্টা চালিয়ে যান।
শেষমেশ ভাগ্য সদয় হয়। পটনা জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে একটি অসরকারি সংস্থার কাছে জ্যোতির বিষয়ে খবর পৌঁছয়। সেই অসরকারি সংস্থার উদ্যোগে জ্যোতি পড়াশোনা শুরু করেন। কিন্তু এর মধ্যেই জ্যোতির দত্তক মায়ের মৃত্যু হয়। ছোট থেকে যে কষ্টের মধ্যে দিয়ে তাঁর জীবন কেটেছে, সেই দিনগুলি যেন তাঁর জীবনে ফির না আসে এই সঙ্কল্প নিয়েই পড়াশোনাকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন জ্যোতি। মাধ্যমিক পাশ করেছেন ভাল নম্বর নিয়ে। এখন তাঁর ঠিকানা আর পটনা রেলওয়ে স্টেশন নয়। নিজে একটা বাড়ি ভাড়া নিয়েছেন। পটনা স্টেশনের কাছে একটি ক্যাফেটেরিয়াও চালান জ্যোতি।
তিনি জানিয়েছেন, মার্কেটিং নিয়ে পড়াশোনা করতে চান। তাই ক্যাফেটেরিয়ার চালানোর ফাঁকে ফাঁকে নিজের স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে ধার দিয়ে চলেছেন বছর উনিশের এই তরুণী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy