Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

হিন্দু ধর্ম নিয়ে রাহুলের ব্যাখ্যা, খোঁচা বিজেপির

কংগ্রেস অবশ্য সনাতন ধর্ম-বিতর্ক থেকে সন্তর্পণেই দূরত্ব বজায় রেখেছিল। মোহনদাস কর্মচন্দ গান্ধীর জন্মদিনের প্রাক্কালে হিন্দু ধর্ম নিয়ে নিজের মতামত লিখিত আকারে এক্স হ্যান্ডল (সাবেক টুইটার)-এ পোস্ট করলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী।

Rahul gandhi

কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। —ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০২৩ ০৮:১১
Share: Save:

এম কে স্ট্যালিনের ছেলে উদয়নিধির করা সনাতন ধর্ম নিয়ে মন্তব্যের প্রেক্ষিতে কংগ্রেসের অবস্থান সম্পর্কে প্রশ্ন তুলেছিল বিজেপি। পদ্মশিবিরের অভিযোগ ছিল, বিষয়টি নিয়ে নীরব থেকে উদয়নিধির ওই মন্তব্যকে পরোক্ষে সমর্থনই করছে কংগ্রেস-সহ বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’।

কংগ্রেস অবশ্য সনাতন ধর্ম-বিতর্ক থেকে সন্তর্পণেই দূরত্ব বজায় রেখেছিল। মোহনদাস কর্মচন্দ গান্ধীর জন্মদিনের প্রাক্কালে হিন্দু ধর্ম নিয়ে নিজের মতামত লিখিত আকারে এক্স হ্যান্ডল (সাবেক টুইটার)-এ পোস্ট করলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। মনে করা হচ্ছে, হিন্দু ধর্মের প্রশ্নে নিজেদের বক্তব্য সামনে এনেই সনাতন ধর্ম-বিতর্কে দলের অবস্থান স্পষ্ট করে দিলেন ওয়েনাড়ের কংগ্রেস সাংসদ।

‘সত্যম শিবম সুন্দরম’ শীর্ষক দু’পাতার একটি নিবন্ধে রাহুল উল্লেখ করেছেন, যে ব্যক্তি ভয়কে উপেক্ষা করে সত্যের পথে চলতে পারেন, তিনিই প্রকৃত হিন্দু। তাঁর বার্তা, প্রকৃত হিন্দুর কর্তব্য দুর্বল-অসহায়কে রক্ষা করা। হিন্দু ধর্ম সম্পর্কে রাহুলের এই উপলব্ধি নিয়ে বিতর্ক শুরু হতে দেরি হয়নি। একে ‘ভোট হিন্দু’ বলে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। আর কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র জয়রাম রমেশের মতে, রাহুলের লেখাটি ‘চিন্তার খোরাক’ জোগায়।

রাহুল বরাবর বলে থাকেন, বিজেপি এবং রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ (আরএসএস)-এর সঙ্গে
হিন্দু ধর্মের কোনও সম্পর্ক নেই। স্রেফ ক্ষমতার লোভে তারা হিন্দু ধর্মকে ব্যবহার করে থাকে। এক্স হ্যান্ডল-এ পোস্ট করা নিবন্ধে কংগ্রেস সাংসদ লিখেছেন, ‘জীবনের মহাসাগরে প্রতিনিয়ত তাড়া করছে মৃত্যুর ভয়, ক্ষুধার ভয় এবং কিছু হারানোর ভয়। সেই সঙ্গে রয়েছে প্রত্যাখ্যাত এবং অপদস্থ হওয়ার ভয়ও। সেই ভয়কে জয় করে সকলের জন্য ভাবতে হবে’। রাহুল মনে করেন, হিন্দু ধর্মের পথ কারও একার নয়। সকলের জন্য উন্মুক্ত। সত্য ও অহিংসার বাণীকে তুলে ধরা সমস্ত হিন্দুর একান্ত কর্তব্য। কেউ যদি নিজেকে হিন্দু বলে মনে করেন, তা হলে শত্রুতা ভুলে সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব করা উচিত’। তিনি বোঝাতে চেয়েছেন, ‘হিন্দু ধর্মে আমিত্বের কোনও স্থান নেই। শুধু নিজের ধর্মের বা নিজের কথা ভাবা নয়। এক জন হিন্দু সকলের কথা ভাবতে পারেন, ভয়কে জয় করতে পারেন। এক জন হিন্দু যন্ত্রণা এবং কষ্টের মহাসাগরে ভেসে গেলেও নিজের প্রতি বিশ্বাস রাখার সামর্থ্য রাখেন’।

কংগ্রেসের একাংশের মতে, এই নিবন্ধের মাধ্যমে রাহুল এক দিকে যেমন সনাতন ধর্ম নিয়ে বিতর্কে দলের অবস্থান স্পষ্ট করলেন, তেমনই বিঁধছেন বিজেপি ও সঙ্ঘকে। তিনি সব সময়ই বলে থাকেন, বিজেপি-আরএসএসের হিন্দুত্ব হল সাভারকার-গডসে আর হিন্দু
ধর্ম হল গান্ধীর পথ। এক কংগ্রেস নেতা মনে করিয়ে দিয়েছেন কাশ্মীরি ব্রাহ্মণ শিবের উপাসক রাহুলের কাছে শিবই সত্য। তাই তিনি বারবার সত্যের পথে চলার কথা বলে থাকেন। গান্ধীজির হিন্দু ধর্মকেই অনুসরণ করে কংগ্রেস।

রাহুলের নিবন্ধ সম্পর্কে জয়রাম এক্স হ্যান্ডলে লিখেছেন, ‘এটা রাহুল গান্ধীর গভীর ব্যক্তিগত চিন্তা এবং চিন্তার খোরাক জোগায়। এটি সেই ব্যক্তিত্বের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ, যাঁর আসল রূপটি ৪ হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ ভারত জোড়ো যাত্রার সময় দেখা গিয়েছিল’।

আর বিজেপি সাংসদ মীনাক্ষী লেখির কটাক্ষ, ‘‘ভোট-হিন্দুর কাছ থেকে কেউ কিছু আশা করে!!! মানুষ জানেন, তাঁদের আমলে কী হয়েছিল। তিনি সহানুভূতির কথা বলেছেন, কিন্তু কংগ্রেস আমলে ‘জিজাজি (জামাইবাবু) থেকে টু-জি’ দুর্নীতির কথা কখনও বলেন না।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy