সিপিএমের পার্টি কংগ্রেস উপলক্ষে আলোচনার মঞ্চে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন, কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। রয়েছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, কংগ্রেসের কে ভি টমাসও। জওহর স্টেডিয়ামে। —নিজস্ব চিত্র।
বিজেপির বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ঐক্যের সমীকরণ নিয়ে চর্চা চালু আছে বিস্তর। বিজেপি পরিচালিত কেন্দ্রীয় সরকারের ‘অগণতান্ত্রিক’ কার্যকলাপের বিরুদ্ধে লড়াই এবং দাবি আদায়ের জন্য এ বার রাজ্যগুলিকে নিয়ে জোট গড়ার ডাক দিলেন তামিলনাডুর মুখ্যমন্ত্রী এবং ডিএমকে সভাপতি এম কে স্ট্যালিন। তাঁর প্রস্তাব, প্রথমে দক্ষিণ ভারতে অ-বিজেপি রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রীদের নিয়ে এই জোট গড়ে উঠুক। তার পরে তা বাকি ভারতে প্রসারিত করা যাবে। সিপিএমের পার্টি কংগ্রেস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনার যে মঞ্চে দাঁড়িয়ে স্ট্যালিন এই প্রস্তাব দিয়েছেন, সেখানে উপস্থিত ছিলেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন এবং প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও কংগ্রেস নেতা কে ভি টমাস। তাঁরাও প্রত্যাশিত ভাবে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব।
সাংবিধানিক রীতি-নীতি ও যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো না মেনেই যে কেন্দ্রীয় সরকার নানা সিদ্ধান্ত নিয়ে চলেছে, সেই অভিযোগ বারেবারেই তুলেছে বাংলা-সহ অ-বিজেপি রাজ্যগুলি। বিশেষত, নরেন্দ্র মোদীর দ্বিতীয় ইনিংসে এমন অভিযোগের তীব্রতা আরও বেড়েছে। রাজ্যগুলির তরফে এই প্রতিবাদকে আরও জোটবদ্ধ ও প্রাতিষ্ঠানিক চেহারা দেওয়ার কথা বলেছেন স্ট্যালিন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘সংবিধানে কেন্দ্রের জন্য যে ক্ষমতা নির্দিষ্ট করা আছে, তার বাইরে গিয়ে বর্তমান সরকার রাজ্যের এক্তিয়ারে প্রায়ই হস্তক্ষেপ করছে। আমার স্পষ্ট অভিযোগ, রাজ্য এবং স্থানীয় প্রশাসনিক ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণ অগ্রাহ্য করে ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত করার এমন প্রবণতা এই সরকারের রয়েছে, যা এমনকি, ব্রিটিশ আমলেও ছিল না!’’ কেন্দ্রের শাসক দলের সঙ্গে একই রাজনৈতিক অবস্থানে না থাকা দলগুলির পরিচালিত রাজ্যকে নিয়ে লড়াইয়ের প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে বাংলার প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর কথাও স্মরণ করেছেন স্ট্যালিন।
রাজ্যপালের দফতরকে কেন্দ্রের হস্তক্ষেপের স্বার্থে কাজে লাগানো বা বিরোধীদের বিরুদ্ধে ইডি, সিবিআইয়ের মতো কেন্দ্রীয় সংস্থাকে ব্যবহারের অভিযোগও এসেছে শনিবারের আলোচনায়। রাজ্যগুলির অধিকারের স্বার্থে সরব হওয়ার ক্ষেত্রে দেশের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস তেমন সক্রিয়তা দেখাচ্ছে না বলে বিজয়ন অভিযোগ করেছেন। আবার নিজের দলের নেতাদের প্রতি ইঙ্গিত করে টমাসও বলেছেন, বিজেপির সরকার সংবিধান ও যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা মানে না— রাহুল গান্ধীর এই বক্তব্যের সঙ্গে একমত হলে সকলেরই এমন বিরোধী মঞ্চে বেশি করে যাওয়া উচিত।
কেরল কংগ্রেসের ফতোয়া অগ্রাহ্য করেই কান্নুরের জওহর মিউনিসিপ্যাল স্টেডিয়ামে সিপিএমের আয়োজিত কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্কের বিষয়ে আলোচনায় এসেছিলেন টমাস। বিজয়নকে ‘কেরলের গর্ব’ বলে উল্লেখ করার পাশাপাশি রেল প্রকল্প ‘সিলভার লাইন’ নিয়ে বিরোধিতা অনেক সময়ে যুক্তির বাইরে চলে যাচ্ছে বলেও মন্তব্য করেছেন টমাস। যা একেবারেই ভাল ভাবে নেয়নি কংগ্রেস। কাল বিলম্ব না করে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি কে সুধাকরন এআইসিসি-র সভানেত্রী সনিয়া গান্ধীকে চিঠি দিয়ে টমাসের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন। বিজয়ন আবার প্রদেশ সভাপতির নাম না করে আবার কটাক্ষ করেছেন, ‘‘কেউ এক জন নাকি হুমকি দিয়েছেন, টমাসের নাক কাটা যাবে! টমাসের ভয়ের কিছু নেই! এত সহজ নকি!’’
কান্নুরে এসে সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির সঙ্গেও দেখা করেছেন স্ট্যালিন। রাজ্যের অধিকার ও ধর্মনিরপেক্ষতা রক্ষার ক্ষেত্রে সিপিএমকে ‘চ্যাম্পিয়ন’ বলে উল্লেখ করে ‘লাল সেলাম’ জানিয়ে যখন বক্তৃতা শেষ করেছেন, বাম জনতার উচ্ছ্বাসে ভেসে যাচ্ছে ময়দান!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy