—প্রতীকী চিত্র।
বিজেপি ও ফেসবুকের মধ্যে আঁতাত নিয়ে রাজনৈতিক তরজা অব্যাহত। তার মধ্যেই শাসক দলের বিরুদ্ধে নয়া অভিযোগ সামনে এল। তাতে বলা হয়েছে, ২০১৯-এর নির্বাচনের আগে বিরুদ্ধ স্বর দমিয়ে রাখতে বিজেপি ফেসবুকের দ্বারস্থ হয়েছিল। নরেন্দ্র মোদী এবং তাঁর সরকারের সমালোচনা করে এমন ৪৪টি পেজের তালিকা ফেসবুক কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেওয়া হয়, যার মধ্যে ১৪টি পেজ বর্তমানে ফেসবুক থেকে গায়েব।
সোমবার ‘দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’-এর একটি রিপোর্টে এমনটাই দাবি করা হয়েছে। বলা হয়েছে, লোকসভা নির্বাচনের চার মাস আগে ফেসবুকের হাতে ওই তালিকা তুলে দেয় বিজেপি, যার মধ্যে শামিল ছিল ভীম আর্মির অফিসিয়াল অ্যাকাউন্ট, ব্যঙ্গধর্মী রচনা প্রকাশ করা ‘উই হেট বিজেপি’ নামের একটি পেজ, কংগ্রেসকে সমর্থন করা কিছু পেজ এবং ‘দ্য ট্রুথ অব গুজরাত’ নামের একটি পেজ, যারা মূলত ভুয়ো খবর যাচাই করে সত্য তুলে ধরত।
এর পাশাপাশি, বেশ কিছু ওয়েবসাইট, যারা কিনা রবীশ কুমার এবং বিনোদ দুয়ার মতো সাংবাদিকের সমর্থনে এগিয়ে এসেছিল, তাদের ফেসবুক পেজগুলিও চিহ্নিত করে ফেসবুকের হাতে তুলে দেয় বিজেপি। ওই পেজগুলি প্রত্যাশিত মান লঙ্ঘন করেছে এবং সত্যাসত্য যাচাই না করেই সেখান থেকে একাধিক পোস্ট করা হয়েছে বলে বিজেপির তরফে অভিযোগ করা হয়।
আরও পড়ুন: দিল্লিতে প্রণবের শেষকৃত্য, গান স্যালুট-শোকে-শ্রদ্ধায় বিদায় প্রাক্তন রাষ্ট্রপতিকে
শুধু তাই নয়, ওই রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে যে, গত বছর নভেম্বরে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম থেকে ডিলিট হয়ে যাওয়া কিছু দক্ষিণপন্থী পেজকে পুনরায় চালু করতে আর্জি জানান বিজেপি নেতৃত্ব। দক্ষিণপন্থী দু’টি ওয়েবসাইট ‘দ্য চৌপাল’ এবং ‘ওপিইন্ডিয়া’কে বিজ্ঞাপন বাবদ অর্থ জোগাতেও ফেসবুক কর্তৃপক্ষকে সুপারিশ করেন তাঁরা। ওই ১৭টি পেজই ফেসবুকে ফিরে এসেছে।
ওই ১৭টি পেজ ভুলবশত ডিলিট হয়ে গিয়েছিল বলে পরে বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্যকে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ ‘সাফাই’ দেন বলেও জানা গিয়েছে। বলা হয়েছে, এই পেজগুলি পুনরায় চালু করা নিয়ে অমিত মালব্য এবং ফেসবুক ইন্ডিয়ার পাবলিক পলিসি এগজিকিউটিভ আঁখি দাস এবং শিবনাথ ঠাকরালের মধ্যে ইমেলে কথাবার্তা হয়। ২০১৯-এর ফেব্রুয়ারি মাসে একটি ইমেলে মালব্য জানান, বিজেপির স্বেচ্ছাসেবকরা ‘আই সাপোর্ট নরেন্দ্র মোদী’-র মতো কিছু পেজ চালান। ফেসবুক তাঁদের পেজগুলিও ডিলিট করে দিতে পারেন বলে ভয় পাচ্ছেন তাঁরা। আগের একটি বৈঠকে যে বিজেপি ঘেঁষা কিছু পেজকে আড়াল করা নিয়ে আলোচনা হয়েছিল, তাও ফেসবুক কর্তৃপক্ষকে মনে করিয়ে দেন তিনি।
যদিও ‘দ্য চৌপাল’-এর প্রতিষ্ঠাতা বিকাশ পান্ডের দাবি, ২০১৯-এ মার্চে অর্থের জোগান বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর এখনও তা চালু হয়নি। ‘ওপিইন্ডিয়া’র তরফে এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। যে ১৭টি পেজ পুনরায় চালু হয়েছে, তাদের মধ্যে একটি ‘পোস্টকার্ড নিউজ’ নামে সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখা পোস্ট করত। এই ‘পোস্টকার্ড নিউজ’-এ প্রতিষ্ঠাতা হলেন মহেশ ভি হেগড়ে। ২০১৮-র মার্চে ভুয়ো খবর পোস্ট করে সাম্প্রদায়িক অশান্তি ছড়ানোর অভিযোগে গ্রেফতার হন তিনি। সেইসময় বেঙ্গালুরু পুলিশের তদন্তে হেগড়ের সঙ্গে বিজেপি নেতাদের যোগসূত্র উঠে আসে। আদালেত তাঁর হয়ে সওয়াল করেন বিজেপি সাংসদ তেজস্বী সূর্য।
আরও পড়ুন: বকেয়া মেটাতে টেলিকম সংস্থাগুলিকে ১০ বছর সময় দিল সুপ্রিম কোর্ট
২০১৮-র জুলাই মাসে ‘পোস্টকার্ড নিউজ’-এর পেজটি সরিয়ে নেন ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতে চাননি হেগড়েও।
ফেসবুক ও বিজেপির গোপন আঁতাত নিয়ে সম্প্রতি একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে প্রথম সারির একটি মার্কিন সংবাদমাধ্যম। তাতে বলা হয়, ব্যবসায়িক স্বার্থে ভারতে শাসক দলের সঙ্গে গোপন বোঝাপড়ার পথে হাঁটছে মার্ক জ়াকারবার্গের সংস্থা। মানুষের মনে ঘৃণা ও বিদ্বেষের জন্ম দেওয়া বিজেপি নেতাদের অনেক বক্তব্যই নিজেদের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম থেকে চট করে মুছে দিচ্ছে না তারা। বিষয়টি নিয়ে তদন্তের দাবি তুলেছে কংগ্রেস-সহ বিরোধীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy