Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪
WAQF Amendment Bill

জেপিসি-আলোচনার সময় বাড়ানোর আশ্বাস স্পিকারের

জেপিসি-র চেয়ারম্যান তথা বিজেপি সাংসদ জগদম্বিকা পালের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারী মনোভাবের অভিযোগ এনে বিরোধী সাংসদেরা গতকাল লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাকে চিঠি লিখেছিলেন।

লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা।

লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা। —ফাইল ছবি।

অনমিত্র সেনগুপ্ত
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০২৪ ০৭:৩৬
Share: Save:

প্রয়োজনে ওয়াকফ বিল নিয়ে গঠিত যৌথ সংসদীয় কমিটি (জেপিসি)-র আলোচনার সময়সীমা আরও বাড়িয়ে দেওয়ার বিষয়ে বিরোধী সাংসদদের আশ্বাস দিলেন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা। সংসদের আসন্ন শীতকালীন অধিবেশনে বিলটি আনার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। তবে ওম বিড়লার আশ্বাস যদি বাস্তবায়িত হয়, সে ক্ষেত্রে ওই অধিবেশনে বিল আনা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।

জেপিসি-র চেয়ারম্যান তথা বিজেপি সাংসদ জগদম্বিকা পালের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারী মনোভাবের অভিযোগ এনে বিরোধী সাংসদেরা গতকাল লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাকে চিঠি লিখেছিলেন। তারপরেই আজ দুপুরে সংসদের নতুন ভবনে স্পিকারের সঙ্গে বৈঠক হয় বিরোধী সাংসদদের। বিরোধীদের প্রতিনিধি দলে ছিলেন তৃণমূলের কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়,
নাদিমুল হক, আম আদমি পার্টির সঞ্জয় সিংহ, ডিএমকের এ রাজা-রা। বৈঠক শেষে বিরোধী সাংসদেরা জানান, ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। সূত্রের দাবি, বিরোধীদের যথেষ্ট সময় না দেওয়া, বিরোধীদের কথা উপেক্ষা—এ ধরনের একাধিক অভিযোগ স্পিকারের কাছে করেন বিরোধী সাংসদেরা।

প্রতি সপ্তাহে টানা দু’দিন, কখনও টানা তিন দিন করে আলোচনা চালানোর নীতি নিয়ে আজ স্পিকারের কাছে তীব্র আপত্তি জানানো হয়। বিরোধী সাংসদদের মতে, এর ফলে বৈঠকে যাঁরা বক্তব্য জানাচ্ছেন, তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করার জন্য প্রস্তুতির সময় পাচ্ছেন না তাঁরা। বিরোধীদের অভিযোগ, চেয়ারম্যানের ভাবগতিক দেখে মনে হচ্ছে তিনি যেন তেন প্রকারেণ বিলটি সংসদে পেশ করাতে চাইছেন। সূত্রের মতে, সব শুনে প্রয়োজনে জেপিসি বৈঠকের মেয়াদ আরও বাড়ানোর আশ্বাস দেন ওম বিড়লা। যদি সত্যিই কমিটির মেয়াদ বাড়ে, তবে শীতকালীন অধিবেশনের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেওয়া যাবে কি না, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। শাসক শিবিরের দাবি, রিপোর্ট তৈরির কাজ সমান গতিতে চালু রয়েছে। সরকার চাইলেই রিপোর্ট সংসদে পেশ করতে পারবে কমিটি।

সম্প্রতি কর্নাটকের বিজয়পুরা-সহ একাধিক স্থানে প্রায় ১৫০০ একর কৃষি জমি নিজেদের সম্পত্তি বলে দাবি করেছে ওয়াকফ বোর্ড। পুরুষানুক্রমিক ভাবে চাষ করা জমি কী ভাবে ওয়াকফ সম্পত্তি হয়ে গেল, তা নিয়ে কৃষকদের সমর্থনে আন্দোলনে নেমেছে বিজেপি। জগদম্বিকার কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন কৃষকেরা। সূত্রের মতে, ওই কৃষকদের সঙ্গে কথা বলতে চলতি সপ্তাহে কর্নাটকে যাচ্ছেন জগদম্বিকা। চেয়ারম্যান কোন ক্ষমতাবলে
সেখানে যাচ্ছেন, তা নিয়েও আজ প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা।

সূত্রের মতে, আজ আলোচনা চলার সময়ে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ওয়াকফ বোর্ড সংবিধানের সপ্তম তফসিলির অন্তর্গত। ওয়াকফ সম্পত্তি মূলত জমি ও ভবনকে বোঝায়। সংবিধান অনুযায়ী জমি ও ভবন রাজ্যের এক্তিয়ারভুক্ত বিষয়, কেন্দ্রের এ নিয়ে আইন তৈরি করার অধিকার কী করে থাকে। বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু মন্ত্রকের ব্যাখ্যাও চাওয়া হয়েছে।

সূত্রের মতে, আম আদমি পার্টির সঞ্জয় সিংহ বলেন, ওয়াকফ বিল বাস্তবায়িত হলে বিভিন্ন রাজ্যে ওয়াকফ বোর্ডের স্থাবর সম্পত্তি হাতছাড়া হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সরকার পক্ষের শীর্ষ সূত্র থেকে বলা হয়, বিল পাশ হওয়ার আগে যে সব সম্পত্তি ওয়াকফের অধীনে রয়েছে বলে নথিভুক্ত হবে, সেই সব মসজিদ, কবরখানা, মক্তব-মাদ্রাসা পরে কেউ দখল করতে পারবে না। কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু মন্ত্রকের দাবি, দেশের ৯৮ শতাংশ ওয়াকফ সম্পত্তি নথিভুক্ত। নতুন বিলের সঙ্গে তাদের চরিত্র পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই।

প্রস্তাবিত বিলে মুসলিমদের মধ্যে প্রান্তিক দাউদি বোহরা গোষ্ঠীর জন্য পৃথক ওয়াকফ বোর্ড গঠন করার সুপারিশ রাখা হয়েছিল। বোহরা গোষ্ঠী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। আজ তাঁদের হয়ে আইনজীবী হরিশ সালভে বৈঠকে বলেন। সূত্রের মতে, তিনি জানান, দাউদি বোহরারা প্রস্তাবিত বিলের এক্তিয়ারের বাইরে থাকতে চায়। ধর্মীয় সংস্কৃতি পালনে তাঁরা (ওয়াকফের মতো) নিয়মের প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করেন না।

অন্য বিষয়গুলি:

WAQF Amendment Bill JPC Om Birla
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE