Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus Lockdown

লকডাউনে দাবানল বেড়েছে মণিপুরে 

চলতি বছর অগস্টের মধ্যেই দাবানলের সংখ্যা ১২ হাজার ছাড়িয়েছে।

ছবি সংগৃহীত।

ছবি সংগৃহীত।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০২০ ০৪:৫৪
Share: Save:

গত বছর বন মন্ত্রকের প্রকাশিত অরণ্যভূমির খতিয়ান দেখিয়েছিল উত্তর-পূর্বের মধ্যে সর্বাধিক ৪৯৯ বর্গ কিলোমিটার অরণ্য ধ্বংস হয়েছে মণিপুরে। যে সংখ্যাটা ২০১৫ সালে ছিল ২৬৩ বর্গ কিলোমিটার। রাজ্য বন দফতরের আশঙ্কা এ বছর সেই পরিমাণ আরও অনেকটা বাড়তে পারে। তার কারণ অন্যান্য বছর অপেক্ষা রাজ্যে দ্বিগুণেরও বেশি বেড়়েছে দাবানলের ঘটনা। আর দাবানল বাড়ার পিছনে মূল কারণ করোনা ও লকডাউন।

বন দফতর জানাচ্ছে, ২০১৫-১৯ পর্যন্ত মণিপুরে পাহাড়়-জঙ্গলে যেখানে বছরে গড়ে ৫০০০ ছোট-বড় দাবানলের খবর আসে, সেখানে চলতি বছর অগস্টের মধ্যেই দাবানলের সংখ্যা ১২ হাজার ছাড়িয়েছে। সিংহভাগই মানুষের লাগানো আগুনের ফল।

কিন্তু কেন লকডাউনে এত বাড়ল দাবানল?

এর অনেকগুলি কারণ ব্যাখ্যা করেন মণিপুরের প্রধান মুখ্য বনপাল অনুরাগ বাজপেয়ী। প্রথমত, কড়া লকডাউনের ফলে গ্রামের মানুষ মূল সড়কের দিকে বেশি আসতে পারেননি। তাই তাঁরা চাষবাষ, ফল, আনাজের সন্ধানে বেশি করে উঠেছেন পাহাড়-জঙ্গলের দিকে। ফল-আনাজের গাছ লাগাতে ঝুম চাষের ধাঁচেই পাহাড়ের জঙ্গল সাফ করতে আগুন লাগানো চলছে। দ্বিতীয়ত, বন দফতরের হাতে এমনিতেই লোকবল কম। অভয়ারণ্য বাদে অন্যত্র বনকর্মী মোতায়েন সম্ভব নয়। করোনা ও লকডাউনে বনকর্মীদের সংখ্যা ও টহলদারি আরও কমেছে। ফলে অরণ্য ধ্বংস, বেআইনি ঝুম চাষ, জঙ্গলে আগুন লাগানোর ঘটনায় রাশ টানা যায়নি।

তৃতীয়ত, লকডাউনের ফলে জ্বালানির জন্য কয়লা, কেরোসিন না পেয়ে গ্রামের মানুষ কাঠের উপরেই নির্ভরশীল হয়ে পড়নে। তাই গাছ কাটার সংখ্যাও প্রচুর বেড়েছে। গাছ কাটার সময়েই জঙ্গলে আগুন লাগানো হচ্ছে। বিশেষ ভাবে অরণ্য ধ্বংস ও দাবানলের ঘটনা ঘটেছে চূড়াচাঁদপুর, তামেংলং, সেনাপতি, চান্ডেল, উখরুলের মতো পাহাড়ি ও প্রত্যন্ত এলাকাগুলিতে।

বন দফতর জানায়, ভয় দেখিয়ে দাবানল বা অরণ্য ধবংস রোখা যাবে না, কারণ জঙ্গল বা গ্রামে টহল দেওয়ার মতো পুলিশ-বনকর্মী রাজ্যের হাতে নেই। তাই গ্রামগুলির যুবকদের প্রতি দাবানল রোখার আহ্বান জানানো হয়েছে। তাঁদের দাবানল নেভানোর প্রশিক্ষণ ও যন্ত্রপাতি দেওয়া হয়েছে। দেওয়া হচ্ছে উৎসাহ ভাতা। সেই সঙ্গেই অরণ্য সংরক্ষণের বার্তাও ছড়়ানোর দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়়া জঙ্গল লাগোয়া গ্রামে বিকল্প জীবিকার প্রশিক্ষণও দেওয়া হচ্ছে। জঙ্গলগুলির উপরে নজর রাখতে কেনা হয়েছে ড্রোন। সরকারের মতে, কাঠের চোরাকারবার ও আফিম চাষের জন্য সমাজবিরোধী ও জঙ্গিরাও দুর্গম ও প্রত্যান্ত এলাকাগুলিতে আগুন লাগিয়ে জঙ্গল সাফ করছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Lockdown Wildfire Manipur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy