ফাইল চিত্র।
উত্তরাখণ্ডের হড়পা বানের জন্য হিমবাহ হ্রদ দায়ী না হলেও পাহাড়ের উপরে এই ধরনের হ্রদের সংখ্যা ক্রমে বাড়ছে। আর সেগুলোই আগামী দিনে বিপর্যয়ের কারণ হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
গত কয়েক বছর ধরে সমীক্ষা করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের দাবি, পরিবেশের উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে হিমবাহগুলো ক্রমে পিছিয়ে যাচ্ছে। আর তার জেরেই এই ধরনের হ্রদের সংখ্যা বাড়ছে। যা বড়সড় ধরনের বিপর্যয় ঘটানোর পক্ষে যথেষ্ট। এ ক্ষেত্রে তাঁরা ২০১৩-র কেদারনাথের হড়পা বানের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন।
মেঘভাঙা বৃষ্টির কারণে হিমবাহ হ্রদ উপচে গিয়ে হড়পা বানের আকারে ঢাল বেয়ে নেমে এসেছিল। যার জেরে প্রায় ৫ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। কাঠমান্ডুর ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ইন্টিগ্রেটেড মাউন্টেন ডেভেলপমেন্ট (আইসিআইএমওডি) হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলে হিমবাহ হ্রদ নিয়ে সমীক্ষা করতে গিয়ে উপগ্রহ চিত্রের মাধ্যমে দেখতে পেয়েছে উত্তরখণ্ডে এ রকম ১২৭টি হিমবাহ সৃষ্ট হ্রদ রয়েছে। হায়দরাবাদের ন্যাশনাল রিমোট সেন্সিং সেন্টার-এর সঙ্গে ২০১৫-তে কাজ করার সময় দুই বিজ্ঞানী দাবি করেছিলেন, উত্তরাখণ্ডে ৩৬২টি হিমবাহ হ্রদ রয়েছে। তবে বেশির ভাগ হ্রদই দুর্গম জায়গায়। বিজ্ঞানীরাও সেখানে পৌঁছতে পারেননি। উপগ্রহ চিত্রের মাধ্যমেই এই হ্রদগুলো চিহ্নিত করেছেন তাঁরা।
হিমবাহ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধুমাত্র উত্তরাখণ্ডেই যে হিমবাহ হ্রদের সংখ্যা বাড়ছে এমনটা নয়। গোটা হিমালয় পার্বত্য অঞ্চল জুড়ে এই হ্রদ ছড়িয়ে আছে। তাঁরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, এই ধরনের হ্রদের সংখ্যা যত বাড়বে, ততই উত্তরাখণ্ডের চামোলির বিপর্যয়ের মতো ঘটনা বাড়বে।
পাশাপাশি তাঁরা এটাও জানাচ্ছেন, হিমবাহ হ্রদের সংখ্যা বৃদ্ধি কিন্তু একটা অন্য ইঙ্গিত দিচ্ছে। তা হল উষ্ণায়ন এবং পরিবেশের পরিবর্তন। যার প্রভাব হিমবাহগুলোর উপর পড়ছে এবং সেগুলো ক্রমে পিছিয়ে যাচ্ছে। আকারে ছোট হচ্ছে। যা খুবই উদ্বেগের বিষয় বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।
১৯৬০-এর দশক থেকেই উত্তরাখণ্ডে হিমবাহ পিছিয়ে যাওয়ার ঘটনা নজরে আসে বিজ্ঞানীদের। উত্তরাখণ্ডের গাড়োয়াল অঞ্চলে যার জেরে ১৯৯০-২০০৯ সালের মধ্যে ৩৩ শতাংশ হিমবাহ হ্রদ বেড়েছে। প্রতিনিয়ত এই হিমবাহ হ্রদগুলোর উপর নজর রাখা জরুরি বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তা না হলে বার বার বিপর্যয়ের সম্মুখীন হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল হয়ে উঠবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy