অজিত ডোভাল। —ফাইল চিত্র।
সীমান্ত সুরক্ষা নিশ্ছিদ্র করতে সব আধাসামরিক বাহিনীকে এক ছাতার তলায় নিয়ে আসার প্রস্তাব দিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল। প্রয়োজনে সীমান্ত এলাকায় সংশ্লিষ্ট রাজ্যের পুলিশ সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সঙ্গে মিশে যেতে পারে কি না তাও খতিয়ে দেখার সম্ভাবনা উস্কে দিলেন তিনি। তাঁর মতে, সীমান্ত সুরক্ষিত না হলে এক দিকে দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা যেমন বিপদের মুখে পড়ার সম্ভাবনা থাকে তেমনই তা নেতিবাচক প্রভাব ফেলে অর্থনীতিতেও।
আজ বিএসএফ পরিচালিত বার্ষিক রুস্তমজী স্মারক বক্তৃতায় ওই প্রস্তাব রাখেন ডোভাল। তিনি বলেন, ‘‘সমস্ত আধাসেনার বাহিনীকে একটি সংযুক্ত (ইউনিফায়েড) কমান্ডের আওতায় আনা সম্ভব কি না তা খতিয়ে দেখা উচিত। সংযুক্তিকরণ হলে এক দিকে যেমন বাহিনীর মধ্যে সংহতি বাড়বে, তেমনই প্রত্যেকটি বাহিনী অন্য বাহিনীর দায়িত্ব পালন করতে সক্ষম হবে।’’
যদিও প্রাক্তন বিএসএফ শীর্ষ কর্তাদের মতে, প্রত্যেকটি আধাসামরিক বাহিনীর দায়িত্ব আলাদা, অঞ্চলভিত্তিক। সেই ভাবেই তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। যাতে কোনও একটি বিশেষ ভূ-প্রাকৃতিক অঞ্চল পাহারা দেওয়ার জন্য ওই বাহিনীর দক্ষতা শীর্ষে থাকে। সংযুক্তিকরণ হলে সেই দক্ষতায় ঘাটতি দেখা দেওয়ার আশঙ্কা দেখা যাবে।
পাশাপাশি আজ রাজ্য পুলিশকে আরও বেশি করে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করার ও প্রয়োজনে দুই বাহিনীর একাত্মকরণের প্রস্তাব দেন ডোভাল। বাস্তবে সেটিও কতটা ফলপ্রসূ হবে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। কারণ বর্তমানে সীমান্ত থেকে ১৫ কিলোমিটারের পরিবর্তে বিএসএফের তল্লাশি, বাজেয়াপ্ত ও গ্রেফতার করার অধিকার বাড়িয়ে ৫০ কিলোমিটার করা নিয়ে আপত্তি জানিয়ে একাধিক বার সরব হতে দেখা গিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। সেখানে সীমান্তরক্ষী বাহিনী ও রাজ্য পুলিশের মিশে যাওয়ার প্রস্তাব রাজ্যের ক্ষমতায় কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপের চরম নিদর্শন হবে বলেই মনে করছেন বিরোধীরা।
পাশাপাশি সীমান্ত এলাকায় প্রযুক্তিগত নজরদারি আরও বাড়ানোর উপরে জোর দিয়েছেন তিনি। উদাহরণস্বরূপ হামাস ও ইজ়রায়েলের সংঘাতের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘‘হামাসের প্রায় পনেরোশো ক্ষেপণাস্ত্র ইজ়রায়েলের উপরে হামলা চালিয়েছিল। কিন্তু প্রযুক্তির সাহায্যে ৯৯ শতাংশ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করতে সক্ষম হয় ইজ়রায়েল। কেবল ২-৩টি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে।’’
ভারতের পশ্চিম সীমান্তে বিশেষ করে পঞ্জাবে যেখানে ফি দিন ড্রোনের মাধ্যমে মাদক-অস্ত্র পাঠানো হচ্ছে সেখানে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার ভীষণ ভাবে প্রয়োজন বলে স্বীকার করে নিচ্ছেন বিএসএফ কর্তারা। ডোভালের কথায়, ‘‘পূর্ব ও পশ্চিম সীমান্তের সুরক্ষার উপরে দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা অনেকটাই নির্ভর করে। আর সুরক্ষার সঙ্গে অর্থনীতিও ভীষণ ভাবে জড়িত। তবে আশার কথা হল গত দশ বছরে এই সরকার দেশের সীমান্তরক্ষার প্রশ্নে কড়া নজর দিয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy