পি চিদম্বরম।—ছবি পিটিআই।
মনমোহন সরকারের আমলে ২০১০-এ ন্যাশনাল পপুলেশন রেজিস্টার (এনপিআর) তৈরি হয়েছিল ঠিকই। কিন্তু মোদী সরকারের ২০২০-র এনপিআর তার থেকে আলাদা ও বিপজ্জনক বলে দাবি করলেন মনমোহন সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদম্বরম ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় মাকেন। তাঁদের আমলেই প্রথম এনপিআর তৈরি হয়।
আজ চিদম্বরমের অভিযোগ, ‘‘বিজেপি সরকারের বৃহত্তর ও বিদ্বেষপূর্ণ কর্মসূচি রয়েছে। সেই কারণে ওদের এনপিআর ২০১০-এর এনপিআর-এর থেকে পৃথক ও বিপজ্জনক।’’ চিদম্বরম যখন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, তাঁর প্রতিমন্ত্রী ছিলেন অজয় মাকেন। তিনিই এনপিআর-এর কাজ দেখাশোনা করতেন। আজ মাকেনের যুক্তি, ‘‘২০১০-এর এনপিআর তৈরির সময় সাধারণ ভাবে কোনও এলাকার বাসিন্দাদের চিহ্নিত করা হয়েছিল। এ বার এনপিআর তৈরির জন্য যে সব অতিরিক্ত প্রশ্ন যোগ করা হয়েছে, সেগুলো নাগরিকত্বের সঙ্গে যুক্ত। এনপিআর-এর আড়ালে মোদী সরকার এনআরসি তৈরি করতে চাইছে।’’
মাকেনরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ২০১০-এ এনপিআর-এর জন্য ১৫টি বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছিল। কিন্তু ২০২০-তে এনপিআর-এর জন্য ২১টি বিষয়ে তথ্য চাওয়া হবে। এখানেই মূল ফারাক। এ বার জানতে চাওয়া হবে বাবা-মায়ের জন্মস্থান, তারিখও। আধার, ড্রাইভিং লাইসেন্স, ভোটার কার্ড, পাসপোর্ট বা প্যান থাকলে তার নম্বরও চাওয়া হবে। মাকেন বলেন, ‘‘আমার মতো লোকেরও এতে আপত্তি রয়েছে। আমাকে যদি কেউ প্রশ্ন করেন, বাবা-মায়ের কোথায় জন্ম, তাঁদের জন্ম পাকিস্তানে। আমি কোথা থেকে সে সব তথ্য জোগাড় করব।’’
আরও পড়ুন: বিজনৌরে হিংসায় নিহত দুই মুসলিমের বাড়িতে মন্ত্রী না যাওয়ায় বিতর্ক
দেশ জুড়ে প্রতিবাদের মুখে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দাবি করেছেন, এনআরসি নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর দাবি, এনপিআর-এর সঙ্গে এনআরসি-র সম্পর্ক নেই। কিন্তু বিরোধীরা তারিখ ধরে ধরে দেখিয়েছেন, সংসদে সরকারই একাধিকবার বলেছে, এনপিআর হল এনআরসি-র প্রথম ধাপ এবং এখন সেটাই করা হচ্ছে।
এই অভিযোগের মুখে বিজেপি পাল্টা বলে, মনমোহন সরকারের আমলেই ২০১০-এ এনপিআর-এর জন্য তথ্য সংগ্রহ হয়। তারাই এনপিআর তৈরির পরে নাগরিকদের তালিকা বা ন্যাশনাল রেজিস্টার অফ ইন্ডিয়ান সিটিজেনস (এনআরআইসি) তৈরি করতে চেয়েছিল। সে সময়ে চিদম্বরমের সাংবাদিক বৈঠক ও সাক্ষাৎকারের ভিডিয়োও প্রকাশ্যে এনেছে তারা।
আজ চিদম্বরমের জবাব, ‘‘ওই ভিডিয়োতে স্পষ্ট, বাসিন্দাদের উপরে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল। নাগরিকদের উপরে নয়। বিজেপির উদ্দেশ্য যদি মহৎ হয়, তা হলে সরকার নিঃশর্ত ভাবে জানাক যে এনপিআর-এর সঙ্গে এনআরসি-কে যোগ করার অভিপ্রায় তাদের নেই।’’ কংগ্রেস নেতাদের মতে, প্রধানমন্ত্রী দাবি করছেন যে, এনআরসি নিয়ে আলোচনা হয়নি, কিন্তু তাঁর দলের নেতা-মন্ত্রীরাই স্পষ্ট করে দিয়েছেন, এনআরসি আদৌ হবে না এমন দাবি প্রধানমন্ত্রী করেননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy