বফর্স এল-৭০ কামান। ছবি: সংগৃহীত।
পাকিস্তানের মোকাবিলায় ফের বফর্স কামানের শরণাপন্ন ভারতীয় সেনা। তবে রাজীব গাঁধীর জমানায় কেনা ১৫৫ মিলিমিটার হাউইৎজার নয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ব্রিটিশ-ভারতীয় বাহিনী ব্যবহৃত ৪০ মিলিমিটার বিমান বিধ্বংসী স্বয়ংক্রিয় কামান (অটো ক্যানন)। সেনাবাহিনী সূত্রের খবর, সীমান্তে পাক ড্রোনের হানাদারি রুখতে এ বার প্রায় ৮৫ বছরের পুরনো বফর্স এল-৭০ কামানে ভরসা রাখতে চলেছে ভারতীয় সেনা।
৫০০ মিটার পর্যন্ত যে কোনও উড়ন্ত লক্ষ্যবস্তুকে ধ্বংস করতে সক্ষম এই হাল্কা স্বয়ংক্রিয় কামানগুলি ড্রোন হানাদারির মোকাবিলায় ভারী বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্রের তুলনায় অনেক বেশি কার্যকর বলে সেনার মত। গত ২১ সেপ্টেম্বর ওড়িশার গোপালপুর সৈকতের অদূরে ‘আর্মি এয়ার ডিফেন্স কলেজ’-এ আয়োজিত পরীক্ষায় এল-৭০ সফল ভাবে ড্রোন ধ্বংস করে কার্যকারিতার প্রমাণও দিয়েছে।
পুরনো যুগের প্রপেলার চালিত যুদ্ধবিমান ধ্বংসে দক্ষ হলেও এই কামানগুলি আধুনিক ‘ফাইটার জেট’-এর মোকাবিলায় অক্ষম। তাই সেনায় তাদের প্রয়োজন ফুরিয়েছিল। কিন্তু পরিস্থিতি বদলেছে গত আড়াই বছর ধরে সীমান্তে পাক ড্রোনের ‘গতিবিধি’র জন্য। সম্প্রতি জম্মু কাশ্মীরের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি) পেরিয়ে একাধিক বার ভারতীয় আকাশসীমায় পাক ড্রোনের অনুপ্রবেশ ঘটেছে। একই ঘটনা ঘটেছে পঞ্জাব সীমান্তেও। জঙ্গিদের অস্ত্র ও রসদ সরবরাহ করতে আসা কয়েকটি ড্রোন গুলি করে নামিয়েছে সেনা এবং বিএসএফ। এমনকি, ২৭ জুন জম্মুর বায়ুসেনা ঘাঁটিতে হামলাও চালিয়েছিল বিস্ফোরক বোঝাই পাক ড্রোন!
গোয়েন্দাদের কাছে খবর, যে ড্রোনগুলি পাকিস্তান ব্যবহার করছে, সেগুলি ‘প্রি-ফেড’ প্রযুক্তির। নির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে এই ড্রোনগুলি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানের ছবি বহু উঁচু থেকে তুলে ফিরে যেতে সক্ষম। বিস্ফোরক ভরে সেগুলির সাহায্যে নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করা যায়। নিচু এলাকা দিয়ে ওড়ায় এগুলিকে সহজে রেডারে চিহ্নিত করা যায় না।
এই পরিস্থিতিতে পাক ড্রোনের হামলা ঠেকাতে এলওসি এবং আন্তর্জাতিক সীমান্তে এল-৭০ ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেনা। সেগুলির প্রয়োজনীয় আধুনিকীকরণেরও কাজ হয়েছে। মিনিটে ২০০ রাউন্ডেরও বেশি গোলা ছুড়তে সক্ষম এই স্বয়ংক্রিয় কামান ওজনেও হাল্কা। ফলে দুর্গম এলাকাগুলিতেও মোতায়েন করা যাবে সহজেই। পাশাপাশি, এর সঙ্গেই রেডিও তরঙ্গের সাহায্যে নিচু দিয়ে ওড়া ড্রোন চিহ্নিতকরণের সরঞ্জামও দেওয়া হবে সীমান্ত চৌকিগুলিতে। প্রসঙ্গত, ১৯৯৯ সালে কার্গিল যুদ্ধ জয়ের ক্ষেত্রে সুইডেনের বফর্স সংস্থারই তৈরি ১৫৫ মিলিমিটারের এফএইচ-৭৭ কামান নির্ণায়ক ভূমিকা পালন করেছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy