স্কুলের পাঠ্যবইয়ের ইতিহাসকে ‘নতুন করে লেখার’ যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে এনসিইআরটি, তার সঙ্গে শিক্ষার কোনও যোগ নেই! রাজনৈতিক কারণেই এই সমস্ত বদল আনা হচ্ছে বলে জানাল ভারতীয় ইতিহাস কংগ্রেস (আইএইচসি)। এ নিয়ে রাজ্যসভার সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে তারা চিঠি দিয়ে জানিয়েছে,কোনও জাতীয় বা আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ইতিহাসবিদের পরামর্শের ভিত্তিতে এই ‘সংশোধনী’ আনা হয়নি। বরং শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত ননএমন রাজনৈতিক ব্যক্তিদের প্রভাবই প্রাধান্য পেয়েছে।
জুলাইয়ের শুরুতে রাজ্যসভার সচিবালয় নোটিস প্রকাশ করে জানায়, সংসদের শিক্ষা সংক্রান্ত স্ট্যান্ডিং কমিটির আলোচনার ভিত্তিতে এনসিইআরটি-র পাঠ্যক্রমে এই পরিবর্তন আনা হয়েছে। ইতিহাসের সঙ্গে সামঞ্জস্য নেই এমন তথ্য সরানো, জাতীয় নায়কদের সম্পর্কে বিকৃত তথ্য সংশোধন, ইতিহাস প্রসিদ্ধ নারী চরিত্রগুলিকে আরও গুরুত্ব দেওয়া এবং বিভিন্ন সময়ের ইতিহাসকে সমান ভাবে তুলে ধরতে এই বদল আনা হচ্ছে। কমিটির এই নোটিসের প্রেক্ষিতে দেশ জুড়ে সমালোচনা শুরু হয়।
ভারতীয় ইতিহাস কংগ্রেস ওই চিঠিতে আরও জানায়, ‘সংশোধনের নামে পাঠ্যবইয়ে যে পক্ষপাতদুষ্ট দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন ঘটেছে এবং ভুল তথ্য পরিবেশন করা হয়েছে তাতে কংগ্রেস বিচলিত। তারা তথ্যবিকৃতির ভয় পাচ্ছে।’ কংগ্রেস জানিয়েছে, ২০০২ সালে রোমিলা থাপার, রামশরণ শর্মা, সতীশ চন্দ্র, বিপান চন্দ্রের মতো খ্যাতনামা ইতিহাসবিদদের রচিত ইতিহাস বইয়ের পরিবর্তে নতুন বই চালু করেছিল এনসিইআরটি। সেই বইয়ে সংখ্যাগুরু একটি বিশেষ মতামত প্রাধান্য পেয়েছিল। প্রবল সমালোচনার মুখে পড়ে এক বছরের মধ্যে তা বদলাতে বাধ্য হয় এনসিইআরটি।
বর্তমানে এনসিইআরটি-র যে পাঠ্যক্রম বহাল রয়েছে তা ২০০৬ সালে চালু করা হয়েছিল। জাতীয় ইতিহাস কংগ্রেসের মতে, বর্তমান পাঠ্যক্রমে যে ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ আনা হয়েছে তা পুরোপুরি মিথ্যা। পাঠ্যক্রম বদলানোর জন্য কমিটি উপযুক্ত কারণ দেখাতে পারেনি।
মধ্যযুগের ইতিহাসকে প্রায় অগ্রাহ্য করে সম্প্রতি স্নাতক স্তরেও ইতিহাসের নতুন পাঠ্যক্রম প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। অভিযোগ, ইউজিসি-কৃত স্নাতক স্তরের ৯৯ পাতার এই পাঠ্যক্রমের ছত্রে ছত্রে গেরুয়াকরণের ছাপ স্পষ্ট।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy