সুকান্ত মজুমদার। —ফাইল চিত্র।
ব্রহ্মপুত্র বোর্ড থেকে এত দিন পর্যন্ত অসম যে বরাদ্দ পেয়েছে, তার ২ শতাংশও পায়নি পশ্চিমবঙ্গ। উত্তরবঙ্গ এবং সিকিম ২০০৬ সালে ব্রহ্মপুত্র বোর্ডের আমন্ত্রিত সদস্য হয়েছিল। তার পর থেকে এখনও পর্যন্ত সিকিম যা অর্থ পেয়েছে, তার তিন ভাগের এক ভাগও জোটেনি উত্তরবঙ্গের। বরাদ্দের এই তথ্য ব্রহ্মপুত্র বোর্ডের বার্ষিক রিপোর্ট এবং ওয়েবসাইটে দেওয়া রয়েছে। উত্তরবঙ্গকে উত্তর-পূর্বের সঙ্গে যুক্ত করে উন্নয়নের অর্থের ব্যবস্থা করা নিয়ে সুকান্ত মজুমদারের দাবির আবহে এই তথ্য গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্ট লোকজনেরা।
১৯৮০ সালে তৈরি হওয়া ব্রহ্মপুত্র বোর্ড থেকে অসম বন্যা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পে এখনও পর্যন্ত পেয়েছে ১,২৮৬ কোটি টাকারও বেশি। ২০০৬ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত সিকিম পেয়েছে ৯১ কোটি টাকার কিছু বেশি। অরুণাচল প্রদেশ পেয়েছে ১৯০ কোটি, মণিপুর ৯০ কোটি, নাগাল্যান্ড ৯৩ কোটি এবং ত্রিপুরা ২৪ কোটি টাকা। উত্তরবঙ্গের জন্য ব্রহ্মপুত্র বোর্ডের বরাদ্দ এখনও পর্যন্ত ২২ কোটি।
রাজ্য সেচ দফতর সূত্রের দাবি, উত্তরবঙ্গের জন্য যে বরাদ্দ দেখানো হয়েছে, প্রকৃত পক্ষে সে অর্থও নদী ভাঙন বা বন্যা নিয়ন্ত্রণে মেলেনি। নথি অনুযায়ী, কোচবিহারে বন্যা নিয়ন্ত্রণের দু’টি কাজ করেছিল ব্রহ্মপুত্র বোর্ড। তাতে প্রায় আট কোটি টাকা খরচ হয়েছে। এ ছাড়া, জলঢাকা এবং তোর্সা ‘মাস্টার প্ল্যান’ তৈরি হয়েছে এবং তিস্তায় ‘মাস্টার প্ল্যান’ তৈরির প্রসঙ্গ বিবেচনাধীন রয়েছে বলে ব্রহ্মপুত্র বোর্ডের রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে। সেচ দফতরের কর্তাদের একাংশের দাবি, তোর্সা বা জলঢাকা নদীতে ব্রহ্মপুত্র বোর্ড কোনও কাজও করেনি।
উত্তরবঙ্গ কেন ‘বঞ্চিত’? ব্রহ্মপুত্র বোর্ডের নির্বাহী বাস্তুকার পদমর্যাদার এক আধিকারিকের মন্তব্য, “হয়তো উত্তরবঙ্গ থেকে তেমন প্রস্তাব বিগত দিনে আসেনি।” তবে বোর্ডের বৈঠকে রাজ্যের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করতে যাওয়া সেচ দফতরের মুখ্য বাস্তুকার (উত্তর-পূর্ব) কৃষ্ণেন্দু ভৌমিকের দাবি, “আমাদের কাছে যখন যেমন প্রস্তাব চাওয়া হয়েছে, দিয়েছি। নিজেরাও প্রস্তাব দিয়েছি। গত তিন বছরে নতুন বরাদ্দ মেলেনি।”
সম্প্রতি বিজেপির জলপাইগুড়ির সাংসদ জয়ন্ত রায় বলেন, ‘‘বোর্ড বরাদ্দ দেবে কী করে? রাজ্য প্রস্তাবই পাঠায় না। রাজ্য প্রস্তাব দিক। আমি দেখব, কত তাড়াতাড়ি বরাদ্দ আসে।’’ উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহের জবাব, “হাজার হাজার কোটি টাকা ব্রহ্মপুত্র বোর্ড বরাদ্দ করছে। তার ছিটেফোঁটাও উত্তরবঙ্গ পায়নি। এর থেকে বড় বঞ্চনার উদাহরণ আছে না কি!”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy