মাছ-মাংস নিয়ে এ বার বিতর্ক দানা বাঁধল মুম্বইয়ে। সেখানকার এক আবাসনে এই নিয়ে ঝামেলায় জড়ালেন গুজরাতি এবং মরাঠিরা। বিতর্কে লাগল রাজনৈতিক রংও। শেষমেশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। তারা জানিয়েছে, আবাসনের সব বাসিন্দাকে নিয়ে বৈঠকে বসা হবে।
ঘটনার সূত্রপাত, রাম রিঙ্গে নামের এক ব্যক্তির অভিযোগকে কেন্দ্র করে। ওই ব্যক্তি মুম্বইয়ের ঘাটকোপারের সম্ভব দর্শন কো-অপারেটিভ হাউজ়িং সোসাইটির বাসিন্দা। তাঁর অভিযোগ, সম্প্রতি আমিষ খাবার খেতে গেলে তাঁকে বাধা দেন আবাসনের অন্য বাসিন্দারা, ঘটনাচক্রে যাঁদের অধিকাংশই গুজরাতি। রামকে বলা হয়, “আপনারা মরাঠিরা নোংরা, আপনারা মাছ-মাংস খান।”
এই অপমান সহ্য করতে পারেননি রাম। তিনি ফোন করেন রাজ ঠাকরের দল মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা (এমএনএস)-র কয়েক জন কর্মী-সমর্থককে। রাজের দল এমনিতেই উগ্র মরাঠা জাতীয়তাবাদী দল হিসাবে পরিচিত। বুধবার রাতে এমএনএস-এর কয়েক জন কর্মী ওই আবাসনে যান। রীতিমতো হুমকির সুরে তাঁরা জানান, মরাঠি আবাসিকদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করা হলে তার ফল ভোগ করার জন্য সবাই যেন প্রস্তুত থাকে। সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিয়োয় এক এমএনএস নেতাকে বলতে শোনা যায়, “তাঁরা মনে করছেন মরাঠারা নোংরা। তার মানে মহারাষ্ট্রও তো নোংরা। তা হলে কেন তাঁরা এই নোংরা জায়গায় আসছেন?” ভিডিয়োয় ওই নেতাকে এ-ও বলতে শোনা যাচ্ছে যে, “এমন কাজ করবেন না, যার জন্য বাড়ির বাইরে পা রাখতে না-পারেন।” (যদিও এই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডট কম)।
এই ঘটনাকে সামনে রেখে মরাঠি আবেগকে উস্কে দিতে চেয়েছে কংগ্রেসও। দলের বিধায়ক বিজয় ওয়াদেত্তিয়ারের অভিযোগ, বিজেপি নেতা দেবেন্দ্র ফডণবীস মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর মুম্বইয়ে বার বার মরাঠিরা হেনস্থার শিকার হচ্ছেন। খাদ্য এবং ভাষা নিয়ে মহারাষ্ট্র সরকারের নীতির জন্যই মুম্বইয়ে গুজরাতি এবং মরাঠিদের মধ্যে বিভাজন তৈরি হচ্ছে বলে দাবি ওই কংগ্রেস নেতার।
আরও পড়ুন:
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি বাঙালিদের আধিক্যের জন্য দিল্লির ‘মিনি কলকাতা’ বলে পরিচিত চিত্তরঞ্জন পার্কের এক নম্বর মার্কেটের মাছের বাজার নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। কিছু স্বঘোষিত সনাতনী এসে দাবি করেন, মাছের বাজারের সঙ্গে মন্দির রয়েছে। তাই ওই মাছের বাজার বন্ধ করে দিতে হবে। বিষয়টি নিয়ে সব স্তরে হইচই হওয়ায় শাসকদল বিজেপির পক্ষে জানানো হয়, মাছের বাজার যেমন আছে তেমনই থাকবে। বন্ধ হওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই।
সম্প্রতি বিজেপিশাসিত উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ডেও আমিষ খাবারের স্টল নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। এ বার সেই বিতর্কর জল গড়াল আরব সাগরের পারেও।