Advertisement
১৮ নভেম্বর ২০২৪
No Confidence Motion

আস্থাভোট আজই, সংখ্যা নেই কমলের

কমল নাথ।

কমল নাথ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০২০ ০৭:২৮
Share: Save:

শুক্রবারই মধ্যপ্রদেশ বিধানসভায় কমল নাথ সরকারের আস্থাভোটের নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। কংগ্রেস সরকারকে কার্যত অগ্নিপরীক্ষার মুখে ফেলে দিয়ে বিচারপতি ধনঞ্জয় চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চের নির্দেশ, শুক্রবার বিকেল পাঁচটার মধ্যে এই ভোটাভুটি সারতে হবে। শান্তিপূর্ণ ভাবে হাত তুলে ভোটাভুটি হবে। গোটা ভোটপর্বের সরাসরি সম্প্রচার ও ভিডিও রেকর্ডিং করে রাখতে হবে।

সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশের পরেই বেঙ্গালুরুর রিসর্টে আশ্রয় নেওয়া কংগ্রেসের ১৬ জন বিক্ষুব্ধ বিধায়ক জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁরা এই ভোটাভুটিতে অংশ নেবেন না। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ ছিল, ওই বিধায়করা ভোপালে পৌঁছে বিধানসভায় যেতে চাইলে কর্নাটক ও মধ্যপ্রদেশ পুলিশের ডিজি তাঁদের নিরাপত্তার দায়িত্ব দেবেন। কিন্তু এই ১৬ বিধায়ক ভোটাভুটিতে অংশ নেবেন না জানিয়ে দেওয়ার পরে সরকারের পতন নিশ্চিত বলেই মনে করছে বিজেপি।

মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী, বিজেপি নেতা শিবরাজ সিংহ চৌহান অবিলম্বে বিধানসভায় সরকারের শক্তিপরীক্ষার দাবি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরে তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমরা নিশ্চিত, সরকার পড়ছে। নতুন সরকার আসছে।’’

শিবরাজের এই বিশ্বাসের কারণ জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরে মধ্যপ্রদেশ বিধানসভার নতুন অঙ্ক। সিন্ধিয়ার অনুগামী ২২ জন কংগ্রেস বিধায়ক বিধানসভা থেকে পদত্যাগ করেন। তাঁদের মধ্যে ছয় জন মন্ত্রীর ইস্তফা গ্রহণ করা হলেও বিধানসভার স্পিকার নর্মদাপ্রসাদ প্রজাপতি বাকি ১৬ জনের ইস্তফা গ্রহণ করেননি। কারণ তাঁরা ইস্তফা দিলেই বিধানসভার মোট সদস্যসংখ্যা কমে যাবে। বিধানসভায় হাজির থাকলে ওই ১৬ জনকে দলের হুইপ মেনে কংগ্রেসের পক্ষেই ভোট দিতে হবে। আজ বিচারপতি চন্দ্রচূড় বলেন, ‘‘স্পিকার নিজের দায়িত্ব এড়াতে পারেন না। বিধায়করা যাতে ইচ্ছেমতো মত প্রকাশ করতে পারেন, সেই পরিস্থিতি আমরা তৈরি করতে পারি। এটা এখন জাতীয় সমস্যা হযে দাঁড়িয়েছে। সর্বত্র এই ঘটনা ঘটছে।’’

আজ সিন্ধিয়ার অনুগামী ১৬ জন ভোটাভুটিতে অংশ নেবেন না বলে জানানোয়, কংগ্রেসের বিধায়ক সংখ্যা ১১৩ থেকে ৯১-তে নেমে এল। ২৩০ আসনের বিধানসভায় দু’জন মারা যাওয়ার পরে সদস্য সংখ্যা ২২৮-এ দাঁড়িয়েছিল। কংগ্রেসের ২২ জন না থাকায় ২০৬ জন ভোটাভুটিতে অংশ নেবেন। সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য ম্যাজিক-নম্বরও ১০৩-এ নেমে আসবে। সেখানে কংগ্রেস পাবে ৯১টি। উল্টো দিকে বিজেপির ১০৮ জন রয়েছেন। তার পরেও ৭ জন বিএসপি, এসপি, নির্দল বিধায়ক রয়েছেন। যাঁরা এত দিন কংগ্রেসকে সমর্থন করলেও এখন বিজেপিকে ভোট দিতে পারেন। কংগ্রেস নেতা জিতু পাটোয়ারি অবশ্য বলছেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী আগেই বলেছিলেন, আমরা তৈরি। আমরা এখনও বলছি, ভোটাভুটির জন্য তৈরি।’’ লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরী বলেন, ‘‘সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েই কংগ্রেস মধ্যপ্রদেশে সরকার গড়েছিল। বিজেপি ষড়যন্ত্র করে, টাকা দিয়ে সরকার ফেলতে চাইছে। না হলে মধ্যপ্রদেশের বিধায়করা নিজের বাড়ি, এলাকা, রাজ্য ছেড়ে কর্নাটকে বসে থাকবেন কেন?’’

সুপ্রিম কোর্টে কংগ্রেস অভিযোগ তুলেছে, ‘‘কমল নাথ সরকারকে সংখ্যালঘু করে ফেলাটা তৈরি করা হয়েছে। রাজ্যপাল স্পিকারকে ১৬ মার্চই ভোটাভুটির নির্দেশ দিলেও করোনাভাইরাসের কারণ দেখিয়ে স্পিকার ২৬ মার্চ পর্যন্ত বিধানসভার অধিবেশন মুলতুবি করে দেন।’’ স্পিকারের আইনজীবী অভিষেক মনুসিঙ্ঘভি বলেন, ‘‘রাজস্থান, ছত্তীসগঢ়, ওড়িশা, কেরলেও বিধানসভার অধিবেশন মুলতুবি করা হয়েছে।’’ বিজেপির হয়ে মুকুল রোহতগি বলেন, ‘‘যখন রাজ্যপাল বিধানসভায় গিয়ে ১৬ মার্চ বক্তৃতা দিলেন, তখন করোনা ছিল না। তার পরেই করোনা চলে এল, যাতে ভোটাভুটি এড়ানো যায়। এ সব আসলে ঘোড়া কেনাবেচার সময় আদায়ের চেষ্টা।’’ রাজ্যপালের হয়ে কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বলেন, ‘‘সংসদ চলছে, সুপ্রিম কোর্ট চলছে, কিন্তু করোনা দেখিয়ে বিধানসভা মুলতুবি করা হচ্ছে। ১৫ মিনিটও সময় বের করা গেল না?’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy