নামের বানান ভুল হওয়ায় গত শীতকালীন অধিবশনে বিরোধী ‘ইন্ডিয়া’ মঞ্চের সাংসদদের রাজ্যসভার চেয়ারপার্সনের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাব বাতিল হয়ে যায়। তাতে না দমে নতুন বছরে বাজেট অধিবেশনে ফের অনাস্থা প্রস্তাব আনার প্রস্তুতি সেরেছিল তারা। এখন ‘মানবিকতা’ এবং ‘ভব্যতার’ খাতিরে এই অধিবেশনে সেই প্রস্তাব ঠান্ডা ঘরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। রাজনৈতিক সূত্রে এই খবর জানা গিয়েছে।
সম্প্রতি গভীর রাতে বুকে ব্যথা হওয়ায় ধনখড়কে আইসিইউ-তে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। তাঁর অবস্থা এখন স্থিতিশীল বলে সর্বশেষ সংবাদ। কিন্তু তাঁর এই অধিবেশনে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। এই পরিস্থিতিতে তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনা ‘কুরুচির পরিচয়’ বলেই আজ তৃণমূলের এক সাংসদ বাকি বিরোধী দলের নেতাদের কাছে প্রস্তাব দেন। সূত্রের খবর, সেই প্রস্তাব মেনে নিয়েছেন কংগ্রেস, এসপি, আপ, উদ্ধবপন্থী শিবসেনার মতো নেতারা।
বানান ভুল ও অন্য কিছু ত্রুটির কারণে গত শীতকালীন অধিবেশনে বিরোধীদের অনাস্থা প্রস্তাব যে দিন খারিজ হল, সে দিনই ধনখড়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেছিলেন, “১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে রাজ্যসভা চলেছে মোট ৪৩ ঘণ্টা। এর মধ্যে ১০ ঘণ্টা বিল নিয়ে, সাড়ে সতেরো ঘণ্টা সংবিধান নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বাকি সাড়ে পনেরো ঘণ্টার ৩০ শতাংশ কি কথা বলে গিয়েছেন নিজেই? রাজ্যসভার চেয়ারম্যান তথা দেশের উপরাষ্ট্রপতি!” তৃণমূল নেতৃত্বের বক্তব্য, এখন সেই অভিযোগ বদলে যাচ্ছে, এমন নয়। কিন্তু যিনি হাসপাতালে শয্যশায়ী, তাঁর বিরুদ্ধে এমন পদক্ষেপ করা অন্যায়। সেই সৌজন্য ‘ইন্ডিয়া’ দেখাচ্ছে।
৭২ বছরের রাজ্যসভার ইতিহাসে প্রথম বার সব বিরোধী দল ঐক্যবদ্ধ ভাবে রাজ্যসভার চেয়ারপার্সন জগদীপ ধনখড়ের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব জমা দিয়েছিল ডিসেম্বর মাসে। বিরোধীদের সম্মিলিত মতামতের নির্যাস ছিল, ধনখড় রাজ্যসভা পরিচালনার ক্ষেত্রে অত্যন্ত পক্ষপাত করেন।রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের পদে বসেও নিজেকে ‘আরএসএস-এর একলব্য’ হিসেবে পরিচয় দেন।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)